Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিন মাসের জন্য বন্ধ হলো কালুরঘাট রেল সেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পর্যটক ট্রেন চলাচল শুরু করার লক্ষ্যে কালুরঘাট রেল সেতুর সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। তাই, সেতুটি সংস্কার করা হবে। সংস্কারের প্রয়োজনে আগামী তিন মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কালুরঘাট রেল সেতু।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকালে কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। সেতু বন্ধ থাকাকালে যানবাহন পারাপারের জন্য কর্ণফুলী নদীতে চালু করা হয়েছে তিনটি ফেরি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া জানিয়েছেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ হওয়ার পথে। আগামী ডিসেম্বর মাসেই ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে। কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে ভারী ইঞ্জিনের পর্যটক ট্রেন চলাচল করবে। তাই, কালুরঘাট সেতুর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে আজ ১ আগস্ট। ফলে, সেতু বন্ধ থাকবে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এই রেল সেতু সংস্কারে রেলওয়ের ৫৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। সংস্কারকাজ করবে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন জানিয়েছেন, কালুরঘাট সেতুর বিকল্প হিসেবে কর্ণফুলী নদীতে তিনটি ফেরি চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ফেরি সার্বক্ষণিক চলাচল করবে এবং আরেকটি থাকবে অতিরিক্ত। এসব ফেরি দিয়ে নির্ধারিত টোল পরিশোধ করে সব ধরনের যানবাহন পারাপার হবে।

জানা গেছে, আগামী সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বা অক্টোবরের শুরুতে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেল পরিষেবা চালু করতে যাচ্ছে রেলওয়ে। এ কারণে সেতুটি মেরামত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বর্তমানে সেতুটি ঢাকা ও কক্সবাজারের মধ্যে রেল চলাচলের জন্য ব্যবহৃত ভারী লোকোমোটিভের বোঝা বহন করতে সক্ষম নয়। সেতুটি সংস্কার হলে এর উপর দিয়ে ৫০-৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলতে পারবে।

এদিকে সেতু দিয়ে যেহেতু ট্রেনের পাশাপাশি বোয়ালখালী ও পটিয়াগামী গাড়ি চলাচল করে, সেহেতু ওই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। এজন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাটে যানবাহন পারাপারের জন্য ৩টি ফেরি চালু করতে যাচ্ছে। এখানে দুটি ফেরি সার্বক্ষণিক চলাচল করবে এবং অন্যটি অতিরিক্ত হিসেবে থাকবে। এই পথে ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপারের জন্য টোল দিতে হবে। ফেরির টোল হারও ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

ইতোমধ্যে ফেরির টোলও নির্ধারণ করেছে সড়ক বিভাগ। অনুমোদিত ফেরির টোল হারে দেখা গেছে, রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল ও ঠেলাগাড়ির জন্য ৫ টাকা, মোটরসাইকেলের জন্য ১০ টাকা, ব্যাটারিচালিত তিন ও চার চাকার গাড়ির জন্য ২৫ টাকা, ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার) ৫৫ টাকা, মাইক্রোবাস ও পিকআপ ৯০ টাকা, মিনিবাস ১১৫ টাকা, কৃষিকাজে ব্যবহৃত যানবাহনের (পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর) জন্য ১৩৫ টাকা, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, বড় বাস ২০৫ টাকা, মাঝারি ট্রাক ২২৫ টাকা, ভারী ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যানের জন্য ৪৫০ টাকা এবং ট্রেইলারের জন্য ৫৬৫ টাকা টোল প্রদান করতে হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য মতে, বর্তমানে বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথ। ওই পথে বর্তমানে তিনটি ট্রেন চলাচল করত। এর মধ্যে দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন ও একটি তেলের ট্যাংকার। রেলপথ অবকাঠামো দুর্বলতার কারণে ওই পথে চলাচল করা ট্রেনগুলো প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৪৮ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। যদিও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে যেসব টুরিস্ট ট্রেন চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে সেগুলোর পরিচালন গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ব্রড গেজ ট্রেনের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার এবং মিটার গেজ ট্রেনের ক্ষেত্রে ৮০ কিলোমিটার।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

তিন মাসের জন্য বন্ধ হলো কালুরঘাট রেল সেতু

প্রকাশের সময় : ০২:০৪:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পর্যটক ট্রেন চলাচল শুরু করার লক্ষ্যে কালুরঘাট রেল সেতুর সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। তাই, সেতুটি সংস্কার করা হবে। সংস্কারের প্রয়োজনে আগামী তিন মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কালুরঘাট রেল সেতু।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকালে কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। সেতু বন্ধ থাকাকালে যানবাহন পারাপারের জন্য কর্ণফুলী নদীতে চালু করা হয়েছে তিনটি ফেরি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া জানিয়েছেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ হওয়ার পথে। আগামী ডিসেম্বর মাসেই ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে। কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে ভারী ইঞ্জিনের পর্যটক ট্রেন চলাচল করবে। তাই, কালুরঘাট সেতুর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে আজ ১ আগস্ট। ফলে, সেতু বন্ধ থাকবে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এই রেল সেতু সংস্কারে রেলওয়ের ৫৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। সংস্কারকাজ করবে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন জানিয়েছেন, কালুরঘাট সেতুর বিকল্প হিসেবে কর্ণফুলী নদীতে তিনটি ফেরি চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ফেরি সার্বক্ষণিক চলাচল করবে এবং আরেকটি থাকবে অতিরিক্ত। এসব ফেরি দিয়ে নির্ধারিত টোল পরিশোধ করে সব ধরনের যানবাহন পারাপার হবে।

জানা গেছে, আগামী সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বা অক্টোবরের শুরুতে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেল পরিষেবা চালু করতে যাচ্ছে রেলওয়ে। এ কারণে সেতুটি মেরামত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বর্তমানে সেতুটি ঢাকা ও কক্সবাজারের মধ্যে রেল চলাচলের জন্য ব্যবহৃত ভারী লোকোমোটিভের বোঝা বহন করতে সক্ষম নয়। সেতুটি সংস্কার হলে এর উপর দিয়ে ৫০-৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলতে পারবে।

এদিকে সেতু দিয়ে যেহেতু ট্রেনের পাশাপাশি বোয়ালখালী ও পটিয়াগামী গাড়ি চলাচল করে, সেহেতু ওই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। এজন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাটে যানবাহন পারাপারের জন্য ৩টি ফেরি চালু করতে যাচ্ছে। এখানে দুটি ফেরি সার্বক্ষণিক চলাচল করবে এবং অন্যটি অতিরিক্ত হিসেবে থাকবে। এই পথে ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপারের জন্য টোল দিতে হবে। ফেরির টোল হারও ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

ইতোমধ্যে ফেরির টোলও নির্ধারণ করেছে সড়ক বিভাগ। অনুমোদিত ফেরির টোল হারে দেখা গেছে, রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল ও ঠেলাগাড়ির জন্য ৫ টাকা, মোটরসাইকেলের জন্য ১০ টাকা, ব্যাটারিচালিত তিন ও চার চাকার গাড়ির জন্য ২৫ টাকা, ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার) ৫৫ টাকা, মাইক্রোবাস ও পিকআপ ৯০ টাকা, মিনিবাস ১১৫ টাকা, কৃষিকাজে ব্যবহৃত যানবাহনের (পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর) জন্য ১৩৫ টাকা, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, বড় বাস ২০৫ টাকা, মাঝারি ট্রাক ২২৫ টাকা, ভারী ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যানের জন্য ৪৫০ টাকা এবং ট্রেইলারের জন্য ৫৬৫ টাকা টোল প্রদান করতে হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য মতে, বর্তমানে বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথ। ওই পথে বর্তমানে তিনটি ট্রেন চলাচল করত। এর মধ্যে দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন ও একটি তেলের ট্যাংকার। রেলপথ অবকাঠামো দুর্বলতার কারণে ওই পথে চলাচল করা ট্রেনগুলো প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৪৮ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। যদিও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে যেসব টুরিস্ট ট্রেন চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে সেগুলোর পরিচালন গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ব্রড গেজ ট্রেনের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার এবং মিটার গেজ ট্রেনের ক্ষেত্রে ৮০ কিলোমিটার।