Dhaka শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিন জেলার বন্যায় মৃত্যু ১০, ক্ষতিগ্রস্ত দুই লক্ষাধিক

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিনটি জেলা ময়মনসিংহ, শেরপুর ও নেত্রকোনা বন্যা কবলিত হয়েছে। এসব জেলায় বন্যায় এখন পর্যন্ত দশজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই লক্ষাধিক মানুষ।

বুধবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, এই বন্যায় ১০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে শেরপুর জেলায় আটজন এবং ময়মনসিংহে দুইজন মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আটজন পুরুষ ও দুইজন নারী। নেত্রকোনায় কেউ মারা যাননি।

বন্যায় দুই লাখ ৩৮ হাজার ৩৯১ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির ক্রমে উন্নতি হচ্ছে। বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা তিনটি (শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা)। ১৩টি উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন বা পৌরসভা ৭৩টি।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, তিন জেলায় মোট ৬৩ হাজার ১৭১টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা এক লাখ ৩৮ হাজার ৩৯১ জন। পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট ১৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বর্তমানে মোট এক হাজার ৩৩৭ জন এবং ৫৬১টি গবাদিপশু রয়েছে। তিন জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা দিতে মোট ২০টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিন জেলায় ত্রাণ হিসেবে ৭২ লাখ টাকা, ৪ হাজার ৪০০ টন ত্রাণের চাল, ৭ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া শিশুখাদ্য বাবদ ১৫ লাখ এবং গো-খাদ্য বাবদ ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের উজানে পাহাড়ি ঢলে অগাস্টের মাঝামাঝিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পর সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে টানা ভারি বৃষ্টিতে রংপুর, নীলফামারীসহ উত্তরের নিম্নাঞ্চলে বন্যা হয়েছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে এমন বৃষ্টিপাতে নদীর পানি বেড়ে ডুবেছে ময়মনসিংহ বিভাগের তিন জেলা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বুধবার বলছে, ময়মনসিংহ বিভাগের জিঞ্জিরাম, ভুগাই-কংস ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইলেও পানির সমতল এখন হ্রাস পাচ্ছে।

আগামী তিন দিন ময়মনসিংহ বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম থাকায় এই সময়ে ওই তিন নদীর পানি আরো কমবে এবং নেত্রকোণা জেলার সোমেশ্বরী ও জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে ধারণা করছে পূর্বাভাস কেন্দ্র।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

তিন জেলার বন্যায় মৃত্যু ১০, ক্ষতিগ্রস্ত দুই লক্ষাধিক

প্রকাশের সময় : ১০:১১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিনটি জেলা ময়মনসিংহ, শেরপুর ও নেত্রকোনা বন্যা কবলিত হয়েছে। এসব জেলায় বন্যায় এখন পর্যন্ত দশজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই লক্ষাধিক মানুষ।

বুধবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, এই বন্যায় ১০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে শেরপুর জেলায় আটজন এবং ময়মনসিংহে দুইজন মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আটজন পুরুষ ও দুইজন নারী। নেত্রকোনায় কেউ মারা যাননি।

বন্যায় দুই লাখ ৩৮ হাজার ৩৯১ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির ক্রমে উন্নতি হচ্ছে। বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা তিনটি (শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা)। ১৩টি উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন বা পৌরসভা ৭৩টি।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, তিন জেলায় মোট ৬৩ হাজার ১৭১টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা এক লাখ ৩৮ হাজার ৩৯১ জন। পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট ১৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বর্তমানে মোট এক হাজার ৩৩৭ জন এবং ৫৬১টি গবাদিপশু রয়েছে। তিন জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা দিতে মোট ২০টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিন জেলায় ত্রাণ হিসেবে ৭২ লাখ টাকা, ৪ হাজার ৪০০ টন ত্রাণের চাল, ৭ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া শিশুখাদ্য বাবদ ১৫ লাখ এবং গো-খাদ্য বাবদ ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের উজানে পাহাড়ি ঢলে অগাস্টের মাঝামাঝিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পর সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে টানা ভারি বৃষ্টিতে রংপুর, নীলফামারীসহ উত্তরের নিম্নাঞ্চলে বন্যা হয়েছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে এমন বৃষ্টিপাতে নদীর পানি বেড়ে ডুবেছে ময়মনসিংহ বিভাগের তিন জেলা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বুধবার বলছে, ময়মনসিংহ বিভাগের জিঞ্জিরাম, ভুগাই-কংস ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইলেও পানির সমতল এখন হ্রাস পাচ্ছে।

আগামী তিন দিন ময়মনসিংহ বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম থাকায় এই সময়ে ওই তিন নদীর পানি আরো কমবে এবং নেত্রকোণা জেলার সোমেশ্বরী ও জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে ধারণা করছে পূর্বাভাস কেন্দ্র।