Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তাহিরপুরে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি হাওরের ২ প্রকল্পের কাজ

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : 

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওরের দুটি প্রকল্পে এখনো মাটির কাজ শেষ হয়নি। যদিও হাওরের ফসল রক্ষাবাঁধের কাজ শেষ হওয়ার সময় ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। হাওরের যেকোনো একটি অরক্ষিত বাঁধই পুরো হাওরের শতভাগ ফসল পানিতে ডুবে যাওয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

সেখানকার একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হতে না হতেই বন্ধ হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মধ্যে রশি টানাটানির কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রতি বছরই হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার জন্য সরকার সময় নির্ধারণ করে দেয়। বাস্তবতা হচ্ছে নির্ধারিত সময়ে সেই কাজ শেষ করা হয় না। আর কৃষকরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে দিন পার করেন।

বোরো হচ্ছে হাওর এলকার একমাত্র ফসল। যদি কোনো কারণে আগাম বন্যা বা পাহাড়ি ঢল হয় তাহলে বোরোর ক্ষতি হয়। তখন সেখানকার কৃষকদের দুর্গতির শেষ থাকে না। আগাম বন্যা হাওরের কৃষকদের অনেকবারই সর্বস্বান্ত করেছে। বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করা হয় মূলত আগাম বন্যার কথা মাথায় রেখে। শুধু বাঁধই তাদের আগাম বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।

শুক্রবার (১০ মার্চ) উপজেলার মাটিয়ান হাওরের দুর্গম পুটিমারা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৬৯ ও ৭০ নম্বর প্রকল্পে মাটির কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট হাওরপারের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ৬৯ প্রকল্পে এখনো পঞ্চাশভাগ মাটির কাজ বাকি আছে। এই প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হতে আরো ১৫ দিন সময় লাগবে। বাঁধে মাটির ফেলার পর দুরমুজ করে মাটি চাপা দেওয়া, বাঁধের মাটিতে সমান করে দুর্বাঘাস লাগানো ও বাঁধে মাটির ধসে যাওয়া ঠেকাতে বাঁধের পাশে কার্পেটিং করতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় ১১২টি প্রকল্পে এ বছর ২০ কোটি টাকার কাজ চলছে। উপজেলায় ফসল রক্ষাবাঁধের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৮৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ক্লোজার রয়েছে ৯টি।

হাওরপারের জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা আহমেদ কবির বলেন, ৬৯ নম্বর প্রকল্পে এখনও পঞ্চাশ ভাগ মাটির কাজ শেষ হয়নি। মোট হিসেবে এ প্রকল্পে সর্বোচ্চ ত্রিশ ভাগ কাজ হয়েছে। যা হাওরের ফসল রক্ষার জন্য খুবই বিপজ্জনক।

এ ব্যাপারে মাটিয়ান হাওরের ৬৯ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, মাটি ধসে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে। দ্রুতই সবকাজ শেষ হয়ে যাবে।

বাঁধ নির্মাণ বা সংস্কারের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে কিনা সেটা তদারকির দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। তারা কাজটা ঠিকমতো করে না বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, নির্ধারিত সময়ে বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার কারণে আগাম বন্যায় যদি ফসলের ক্ষতি হয় তার দায়িত্ব কি পাউবো নেবে।

প্রতি বছরই হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কালক্ষেপণ করা হয়। এই গাফিলতি মেনে নেয়া যায় না। যথাসময়ে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করে দেখতে হবে, এর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জগন্নাথপুরসহ হাওরের যেসব স্থানে বাঁধ নির্মাণ এখনো সম্পন্ন হয়নি সেখানে দ্রুত বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে। আগামীতে যেন সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ে কাজ শেষ হয় সেটা নিশ্চিত করতে এখনই সচেতন হতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) শাখা কর্মকর্তা এবং উপজেলা ফসল রক্ষাবাঁধ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব মো. শওকত উজ্জামান বলেন, মাটিয়ান হাওরের পুটিমারা এলাকায় দুটি প্রকল্প ছাড়া সবগুলো প্রকল্পের মাটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুতই এই দুটি প্রকল্পের মাটির কাজও শেষ হয়ে যাবে।

আবহাওয়া

ডিসেম্বরে বিয়ে করছেন মধুমিতা

তাহিরপুরে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি হাওরের ২ প্রকল্পের কাজ

প্রকাশের সময় : ১২:৩৩:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : 

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওরের দুটি প্রকল্পে এখনো মাটির কাজ শেষ হয়নি। যদিও হাওরের ফসল রক্ষাবাঁধের কাজ শেষ হওয়ার সময় ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। হাওরের যেকোনো একটি অরক্ষিত বাঁধই পুরো হাওরের শতভাগ ফসল পানিতে ডুবে যাওয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

সেখানকার একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হতে না হতেই বন্ধ হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মধ্যে রশি টানাটানির কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রতি বছরই হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার জন্য সরকার সময় নির্ধারণ করে দেয়। বাস্তবতা হচ্ছে নির্ধারিত সময়ে সেই কাজ শেষ করা হয় না। আর কৃষকরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে দিন পার করেন।

বোরো হচ্ছে হাওর এলকার একমাত্র ফসল। যদি কোনো কারণে আগাম বন্যা বা পাহাড়ি ঢল হয় তাহলে বোরোর ক্ষতি হয়। তখন সেখানকার কৃষকদের দুর্গতির শেষ থাকে না। আগাম বন্যা হাওরের কৃষকদের অনেকবারই সর্বস্বান্ত করেছে। বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করা হয় মূলত আগাম বন্যার কথা মাথায় রেখে। শুধু বাঁধই তাদের আগাম বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।

শুক্রবার (১০ মার্চ) উপজেলার মাটিয়ান হাওরের দুর্গম পুটিমারা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৬৯ ও ৭০ নম্বর প্রকল্পে মাটির কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট হাওরপারের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ৬৯ প্রকল্পে এখনো পঞ্চাশভাগ মাটির কাজ বাকি আছে। এই প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হতে আরো ১৫ দিন সময় লাগবে। বাঁধে মাটির ফেলার পর দুরমুজ করে মাটি চাপা দেওয়া, বাঁধের মাটিতে সমান করে দুর্বাঘাস লাগানো ও বাঁধে মাটির ধসে যাওয়া ঠেকাতে বাঁধের পাশে কার্পেটিং করতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় ১১২টি প্রকল্পে এ বছর ২০ কোটি টাকার কাজ চলছে। উপজেলায় ফসল রক্ষাবাঁধের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৮৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ক্লোজার রয়েছে ৯টি।

হাওরপারের জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা আহমেদ কবির বলেন, ৬৯ নম্বর প্রকল্পে এখনও পঞ্চাশ ভাগ মাটির কাজ শেষ হয়নি। মোট হিসেবে এ প্রকল্পে সর্বোচ্চ ত্রিশ ভাগ কাজ হয়েছে। যা হাওরের ফসল রক্ষার জন্য খুবই বিপজ্জনক।

এ ব্যাপারে মাটিয়ান হাওরের ৬৯ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, মাটি ধসে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে। দ্রুতই সবকাজ শেষ হয়ে যাবে।

বাঁধ নির্মাণ বা সংস্কারের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে কিনা সেটা তদারকির দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। তারা কাজটা ঠিকমতো করে না বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, নির্ধারিত সময়ে বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার কারণে আগাম বন্যায় যদি ফসলের ক্ষতি হয় তার দায়িত্ব কি পাউবো নেবে।

প্রতি বছরই হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কালক্ষেপণ করা হয়। এই গাফিলতি মেনে নেয়া যায় না। যথাসময়ে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করে দেখতে হবে, এর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জগন্নাথপুরসহ হাওরের যেসব স্থানে বাঁধ নির্মাণ এখনো সম্পন্ন হয়নি সেখানে দ্রুত বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে। আগামীতে যেন সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ে কাজ শেষ হয় সেটা নিশ্চিত করতে এখনই সচেতন হতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) শাখা কর্মকর্তা এবং উপজেলা ফসল রক্ষাবাঁধ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব মো. শওকত উজ্জামান বলেন, মাটিয়ান হাওরের পুটিমারা এলাকায় দুটি প্রকল্প ছাড়া সবগুলো প্রকল্পের মাটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুতই এই দুটি প্রকল্পের মাটির কাজও শেষ হয়ে যাবে।