Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তালতলীতে সড়কের বেহাল দশা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বরগুনার তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নে সড়ক নির্মাণের একমাসের মাথায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। হাতের টান ও গাড়ির চাকায় উঠে যাচ্ছে পিচ। বৃষ্টির ফোঁটায় সড়কে গর্ত হয়ে মাটি বের হয়ে গেছে। নিম্নমানের কাজ করায় সড়কের এমন বেহাল দশা হয়েছে। নিম্নমানের কাজ করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের স্লুইসবাজার জিপিএস থেকে চেয়ারম্যানহাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়ক। এ সড়ক নির্মাণের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দুই ধাপে তিন কোটি ৪৪ লাখ ৩৯ হাজার ২৪ টাকা ব্যয়ে কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স দেলোয়ার হোসেন-মোমিনুল হক (জেভি) ও মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজ। একই বছরে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০২০ সালের শেষের দিকে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার।

কিছুদিন কাজ করার পর তারা বন্ধ করে দেন। প্রায় ছয় মাস ঠিকাদার কাজ ফেলে রাখেন বলে জানান স্থানীয়রা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে অসম্মতি প্রকাশ করায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পুনরায় ওই কাজের দরপত্র আহ্বান করে। দ্বিতীয় দরপত্রে কাজ পায় বরগুনার মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩০ জুন সড়কের কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নির্মাণের একমাস যেতে না যেতেই সড়কটি খানাখন্দে পরিণত হয়। হাতের টান ও গাড়ির চাকায় সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে।

সাবেক ইউপি মেম্বার জাফর মৃধা বলেন, সড়ক যেন ডোবায় পরিণত হয়েছে। এর চেয়ে আগেই ভালো ছিল। সড়ক নির্মাণে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন০ তিনি।

স্থানীয় শাকিল হাওলাদার বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ এবং ঠিকাদারের কারসাজিতে সড়কের এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে। সড়কে যে অবস্থা তাতে এ বৃষ্টির মৌসুমও চলবে না।

পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, নির্মাণের শুরুতেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছে কাজের মান নিয়ে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু তারা তা আমলে নেননি।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মহিবুল ইসলাম তনু বলেন, সড়কটির কাজ আমি করিনি। আমার লাইসেন্সে ফরহাদ জোমাদ্দার নামের একজন ঠিকাদার করেছেন।

যোগাযোগ করা হলে সাব ঠিকাদার ফরহাদ জোমাদ্দার সড়কে খানাখন্দের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়মানুসারে আমি কাজ করেছি। আমার কাজে কোনো ক্রটি ছিল না।

এলজিইডির তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী ইমতিয়াজ হোসাইন রাসেল বলেন, আগামী সপ্তাহে নির্বাহী প্রকৌশলী রাস্তাটি পরিদর্শনে আসবেন। তিনিই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ওই সড়ক নির্মাণের অনিয়মের বিষয়ে আমার কাছেও অভিযোগ এসেছে। বরগুনা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জী বলেন, সড়কটি সরেজমিন দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

তালতলীতে সড়কের বেহাল দশা

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বরগুনার তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নে সড়ক নির্মাণের একমাসের মাথায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। হাতের টান ও গাড়ির চাকায় উঠে যাচ্ছে পিচ। বৃষ্টির ফোঁটায় সড়কে গর্ত হয়ে মাটি বের হয়ে গেছে। নিম্নমানের কাজ করায় সড়কের এমন বেহাল দশা হয়েছে। নিম্নমানের কাজ করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের স্লুইসবাজার জিপিএস থেকে চেয়ারম্যানহাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়ক। এ সড়ক নির্মাণের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দুই ধাপে তিন কোটি ৪৪ লাখ ৩৯ হাজার ২৪ টাকা ব্যয়ে কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স দেলোয়ার হোসেন-মোমিনুল হক (জেভি) ও মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজ। একই বছরে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০২০ সালের শেষের দিকে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার।

কিছুদিন কাজ করার পর তারা বন্ধ করে দেন। প্রায় ছয় মাস ঠিকাদার কাজ ফেলে রাখেন বলে জানান স্থানীয়রা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে অসম্মতি প্রকাশ করায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পুনরায় ওই কাজের দরপত্র আহ্বান করে। দ্বিতীয় দরপত্রে কাজ পায় বরগুনার মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩০ জুন সড়কের কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নির্মাণের একমাস যেতে না যেতেই সড়কটি খানাখন্দে পরিণত হয়। হাতের টান ও গাড়ির চাকায় সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে।

সাবেক ইউপি মেম্বার জাফর মৃধা বলেন, সড়ক যেন ডোবায় পরিণত হয়েছে। এর চেয়ে আগেই ভালো ছিল। সড়ক নির্মাণে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন০ তিনি।

স্থানীয় শাকিল হাওলাদার বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ এবং ঠিকাদারের কারসাজিতে সড়কের এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে। সড়কে যে অবস্থা তাতে এ বৃষ্টির মৌসুমও চলবে না।

পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, নির্মাণের শুরুতেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছে কাজের মান নিয়ে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু তারা তা আমলে নেননি।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মহিবুল ইসলাম তনু বলেন, সড়কটির কাজ আমি করিনি। আমার লাইসেন্সে ফরহাদ জোমাদ্দার নামের একজন ঠিকাদার করেছেন।

যোগাযোগ করা হলে সাব ঠিকাদার ফরহাদ জোমাদ্দার সড়কে খানাখন্দের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়মানুসারে আমি কাজ করেছি। আমার কাজে কোনো ক্রটি ছিল না।

এলজিইডির তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী ইমতিয়াজ হোসাইন রাসেল বলেন, আগামী সপ্তাহে নির্বাহী প্রকৌশলী রাস্তাটি পরিদর্শনে আসবেন। তিনিই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ওই সড়ক নির্মাণের অনিয়মের বিষয়ে আমার কাছেও অভিযোগ এসেছে। বরগুনা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জী বলেন, সড়কটি সরেজমিন দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।