জামালপুর জেলা প্রতিনিধি :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সময় জামালপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকালে শহরের দেওয়ানপাড়ায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। টানা দুই ঘন্টা চলা এই সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া, ৫টি গাড়ি ভাংচুর ও ৫টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
জানা গেছে, এদিন বিকালে শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকায় সৈয়দ আলী মণ্ডল (স্টার) কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে জেলা বিএনপির সীমিতসংখ্যক নেতাদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ভিডিও কনফারেন্স শুরুর আগে থেকেই সেখানে দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। ভিডিও কনফারেন্স শুরুর কিছুক্ষণ আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা এমপি নিলুফার চৌধুরী মনির নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা কমিউনিটি সেন্টারে প্রবেশ করতে গেলে আসন না থাকায় তাকে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় আগে থেকেই বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন সেখানে অবস্থান করছিলেন। নিলুফার চৌধুরী মনি তার নেতাকর্মীদের নিয়ে জোরপূর্বক প্রবেশ করতে গেলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে দেওয়ানপাড়া মোড় ও ফৌজদারি মোড় এলাকায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেছ আলী মামুনের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনির কর্মী-সমর্থকদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় কমিউনিটি সেন্টার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের ব্যক্তিগত গাড়ি, ফৌজদারি মোড়ে থাকা পাঁচটি মোটরসাইকেলে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্সে আয়োজন করা হয়। সেখানে জেলা বিএনপি, উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সীমিতসংখ্যক নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে ভিডিও কনফারেন্স শুরুর দশ মিনিট আগে জামালপুরের একজন কেন্দ্রীয় নেত্রী ও অপর কেন্দ্রীয় নেতা যারা ঢাকায় অবস্থান করেন তারা ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি গ্রুপ নিয়ে সেখানে প্রবেশের চেষ্টা করেন। সুনির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে এই অনুষ্ঠান তাই সকলের প্রবেশের সুযোগ নেই বলে তাদের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তারা অনুরোধ উপেক্ষা করে বিশৃঙ্খলা করে কমিউনিটি সেন্টার ও কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে।
এ প্রসঙ্গে নিলুফার চৌধুরী মনি বলেন, জেলা বিএনপি যদি সুষ্ঠুভাবে ক্রাইটেরিয়া করতো তাহলে আমাদের ছেলেরা যেতে পারতো। তারা অন্যায়ভাবে, অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্রাইটেরিয়া করেছে। এতে যারা ত্যাগী, গত ১৭ বছর জেল-জুলুম সহ্য করেছে তারা যেতে পারেননি।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, একটি অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ায় পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। কোন পক্ষ থেকেই অভিযোগ পাইনি। সংশ্লিষ্ট পক্ষের কাছে শুনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।