নিজস্ব প্রতিবেদক :
তারেক রহমানকে বাংলাদেশের মানুষ নেতা মানবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেও বলেন, দুর্নীতিবাজ, দণ্ডিত ও লুটেরাদের হাতে দেশের শাসন ক্ষমতা তুলে দেবে না জনগণ। নির্বাচন ঘিরে বিএনপির অপতৎপরতা রুখতে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিকেলে তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ভবনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী সাংগঠনিক জেলাসমূহের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অন্ধকারের শক্তি চ্যালেঞ্জ করছে, আমাদের লড়তে হবে। নির্বাচন বানচাল করবে, সেটি আর সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সাম্প্রদায়িকতা আর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়বে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও দেশবিরোধী শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছেএ
আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি জনসমুদ্রে রূপ নেবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ১ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারুণ্যনির্ভর সমাবেশ করবেন শেখ হাসিনা। ২ সেপ্টেম্বর সুধিজন জনগনকে নিয়েও সমাবেশ করবেন প্রধানমন্ত্রী। ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মহাসমুদ্র দেখবে, জনতার মহাসমুদ্র। আগামী সেই মহাসমুদ্র দেখার অপেক্ষায় আছি।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ আদর্শ পাতাকাবাহী সংগঠন। আমরা একাত্তরের সন্তান; ৭৫ এর সন্তান; তিন নভেম্বরের সন্তান; একুশ আগস্টের সন্তান। আমাদের চেতনায়, আমাদের হৃদয়ে অনেক বেদনা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতার লিগ্যাসি, তার কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের অর্থের মুক্তির সংগ্রামের লিগ্যাসি,বাংলাদেশে এই দুটি লিগ্যাসি টিকে আছে দাপটের সঙ্গে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, যতদিন পতাকা উড়বে, ততদিন এ দেশে দুটি মানুষের মৃত্যু হবে না। একজন বঙ্গবন্ধু আরেকজন শেখ হাসিনা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কঠিন ঐক্য নিয়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসী, সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দেবে। এ দেশ পাকিস্তানের বন্ধুদের জন্য নয়, এ দেশ সাম্প্রদায়িকদের জন্য নয়, এ দেশ অর্থ পাচারকারীদের নয়। মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে যাওয়া নেতা তারেককে বাংলাদেশের জনগণ নেতা বানাবে না।
তিনি বলেন, আজকে বিএনপির মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা নাকি তাদের ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছি। ফখরুল সাহেব, আপনাদের ২২ জন আর আমাদের ২২ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, সেই দিন কোথায় ছিল গণতন্ত্র? ২০০১ সালে অস্বাভাবিক সরকার যখন গদিতে বসেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী উপর অত্যাচার শুরু করেছিল। ফখরুল সাহেব, আপনি এখন বলেন, সরকারি দল নাটক সাজিয়েছে। তখন বেগম খালেদা জিয়া বলেছিল, উনাকে কে মারতে যাবে? উনি ভ্যানেটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন। নাটক তো আপনারা করেছিল। জজ মিয়ার নাটক। কাঁদতে কাঁদতে আমাদের চোখের পানি শেষ হয়েছে গেছে।
আাগামী নির্বাচন সামনে রেখে আমেরিকার ভিসানীতির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেক দেশে নির্বাচন হচ্ছে। পৃথিবীর কোথাও ভিসানীতি যায় না। শুধু কী বাংলাদেশকেই পেয়ে বসেছেন? পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছি- আওয়ামী লীগ বন্ধুহীন নয়। দেশেও নয়, বিদেশেও নয়।
তিনি দলের নেতাকর্মীদের বলেন, মন খারাপ করবেন না। কে কী দিল এসব নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাথা ঘামান না। বিএনপি গুজব ছড়াচ্ছে, তাতে কান দেবেন না।
বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের চেতনায় বাংলাদেশ, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ। শুধু একটি নির্বাচনে নয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লড়াই করে বাঁচাতে হবে।
বিএনপির প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী ও দণ্ডিতকে কীভাবে তারা নেতা বানাবে? যারা ভুয়া ভোটার তালিকা তৈরি করে, ভোট চুরি করে, সন্ত্রাস করে ক্ষমতা দখল করেছিল, তাদের কাছে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের কী সবক নিবে?
বিরোধীদের আন্দোলনের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আবারও আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করলে আমরা বসে থাকবো না। যে হাত আগুন নিয়ে আসবে সে হাত পুড়িয়ে দেবো। যে হাত লাঠিসোটা নিয়ে আসবে, সে হাত ভেঙে দেবো। যেমন কুকুর তেমন মুগুর।
এছাড়াও বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীর প্রতীক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।