Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, কোনো দলকে উৎসাহ দিতে আসেনি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন দেখতে চায়। তারা কোনো দলকে উৎসাহ দিতে বাংলাদেশে আসেনি।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি।

বৈঠকে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনান্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদল বলেছে, আগামী নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত হয়, সেটি তারা দেখতে চায়। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। তিনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবেই কাজ করবে।

আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণমূলক বলেনি; অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, সহিংসতামুক্ত নির্বাচন তারা চেয়েছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট। প্রতিনিধি দল আসন্ন সংসদ নির্বাচন তারা ‘ফেয়ার ও ভায়োলেন্স ফ্রি’ দেখতে চান। আমরা বলেছি সংবিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোটগ্রহণ হবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকবে। নির্বাচন কমিশন যেভাবে নির্দেশনা দেবে তারা সেভাবেই কাজ করবে।

বিএনপির এক দফা নিয়ে কথা হয়েছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসব নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন এখানে তারা কোনো রাজনৈতিক দলকে উৎসাহিত করতে আসেননি। তারা কোনো দলকে সমর্থন করেন না। তারা এসেছেন এখানে যাতে একটি ফেয়ার ফ্রি এবং ভায়োলেন্স ফ্রি নির্বাচন হয় এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে, এর বাইরে কিছু নয়। এর বাইরে তারা কিছুই বলেননি। তারা বারবার বলে গিয়েছেন কোনো ব্যক্তি বা দলকে তারা সমর্থন দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে আসেননি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও মার্কিন প্রতিনিধিদল আলোচনা করেছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন, কিছু যুগোপযোগী করার জন্য আইনটি আরেকটু সংশোধন হবে। তিনিও এ বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আমেরিকান হাই পাওয়ার একটা টিম এসেছে (আজরা জেয়া, ডোনাল্ড লু এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ আরও কয়েকজন)। আমাদের এখানে আসার আগে তারা আইনমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা সেসব বিষয় আমাদের জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যে তার ভিশনারি লিডারশিপে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এতে তারা বেশ সন্তুষ্ট, তা তারা বলে গেছে। বাংলাদেশে যে অবস্থা আছে, সেই অবস্থা নিয়ে তারা খুবই খুশি। বুধবার (১২ জুলাই) ঢাকায় দুই দলের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) সমাবেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকার বিষয়টি নিয়ে তারা প্রশংসা করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের ল’ এনফোর্সমেন্ট ফোর্সের সবই তৈরি আছে। এছাড়া ল’ এনফোর্সমেন্ট ফোর্সের স্পেশাল কিছু বাহিনীকে তারা যে সহযোগিতা করেছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে সে বিষয়েও মনে করিয়ে দিয়েছি। এটিই ছিল আজকের আলোচনার মূল সারমর্ম।

তিনি আরো বলেন, আমরা তাদের বলেছি, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় প্রস্তুত। তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। প্রশিক্ষণে তারা উজ্জীবিত রয়েছে। আমরা মনে করি তারা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে পারবে। ইতোমধ্যে দেশে অনেকগুলো শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সমস্যা কত তাড়াতাড়ি সমাধান করা যায় সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ জনগোষ্ঠীর সুবিধা নিয়ে মানবপাচারকারীরা এদের নিয়ে যে একপ্রকার খেলা করছে তা যেন করতে না পারে সেটা নিয়ে তারা উদ্বেগ জানিয়েছেন। আমরা তাদের জানিয়েছি বাংলাদেশ এখন মানবপাচার রোধে টায়ার থ্রি থেকে টায়ার টুতে চলে এসেছে। এটা তাদেরই মূল্যায়ন। এ বিষয়েও তারা প্রশংসা করেছেন।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে আমি প্রতিনিধি দলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ও এ সংকটে তারা সবসময় আমাদের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে তারা কোনো অবজারভেশন দেননি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

গুলিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকের হেলপার নিহত

তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, কোনো দলকে উৎসাহ দিতে আসেনি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন দেখতে চায়। তারা কোনো দলকে উৎসাহ দিতে বাংলাদেশে আসেনি।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি।

বৈঠকে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনান্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদল বলেছে, আগামী নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত হয়, সেটি তারা দেখতে চায়। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। তিনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবেই কাজ করবে।

আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণমূলক বলেনি; অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, সহিংসতামুক্ত নির্বাচন তারা চেয়েছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট। প্রতিনিধি দল আসন্ন সংসদ নির্বাচন তারা ‘ফেয়ার ও ভায়োলেন্স ফ্রি’ দেখতে চান। আমরা বলেছি সংবিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোটগ্রহণ হবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকবে। নির্বাচন কমিশন যেভাবে নির্দেশনা দেবে তারা সেভাবেই কাজ করবে।

বিএনপির এক দফা নিয়ে কথা হয়েছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসব নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন এখানে তারা কোনো রাজনৈতিক দলকে উৎসাহিত করতে আসেননি। তারা কোনো দলকে সমর্থন করেন না। তারা এসেছেন এখানে যাতে একটি ফেয়ার ফ্রি এবং ভায়োলেন্স ফ্রি নির্বাচন হয় এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে, এর বাইরে কিছু নয়। এর বাইরে তারা কিছুই বলেননি। তারা বারবার বলে গিয়েছেন কোনো ব্যক্তি বা দলকে তারা সমর্থন দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে আসেননি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও মার্কিন প্রতিনিধিদল আলোচনা করেছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন, কিছু যুগোপযোগী করার জন্য আইনটি আরেকটু সংশোধন হবে। তিনিও এ বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আমেরিকান হাই পাওয়ার একটা টিম এসেছে (আজরা জেয়া, ডোনাল্ড লু এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ আরও কয়েকজন)। আমাদের এখানে আসার আগে তারা আইনমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা সেসব বিষয় আমাদের জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যে তার ভিশনারি লিডারশিপে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এতে তারা বেশ সন্তুষ্ট, তা তারা বলে গেছে। বাংলাদেশে যে অবস্থা আছে, সেই অবস্থা নিয়ে তারা খুবই খুশি। বুধবার (১২ জুলাই) ঢাকায় দুই দলের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) সমাবেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকার বিষয়টি নিয়ে তারা প্রশংসা করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের ল’ এনফোর্সমেন্ট ফোর্সের সবই তৈরি আছে। এছাড়া ল’ এনফোর্সমেন্ট ফোর্সের স্পেশাল কিছু বাহিনীকে তারা যে সহযোগিতা করেছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে সে বিষয়েও মনে করিয়ে দিয়েছি। এটিই ছিল আজকের আলোচনার মূল সারমর্ম।

তিনি আরো বলেন, আমরা তাদের বলেছি, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় প্রস্তুত। তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। প্রশিক্ষণে তারা উজ্জীবিত রয়েছে। আমরা মনে করি তারা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে পারবে। ইতোমধ্যে দেশে অনেকগুলো শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সমস্যা কত তাড়াতাড়ি সমাধান করা যায় সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ জনগোষ্ঠীর সুবিধা নিয়ে মানবপাচারকারীরা এদের নিয়ে যে একপ্রকার খেলা করছে তা যেন করতে না পারে সেটা নিয়ে তারা উদ্বেগ জানিয়েছেন। আমরা তাদের জানিয়েছি বাংলাদেশ এখন মানবপাচার রোধে টায়ার থ্রি থেকে টায়ার টুতে চলে এসেছে। এটা তাদেরই মূল্যায়ন। এ বিষয়েও তারা প্রশংসা করেছেন।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে আমি প্রতিনিধি দলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ও এ সংকটে তারা সবসময় আমাদের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে তারা কোনো অবজারভেশন দেননি।