নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের গুমানী নদীতে বাঁশের সাঁকো ও খেয়াঘাটের নৌকাই এলাকাবাসীদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। কমপক্ষে ২০টি গ্রামের মানুষ ধামাইচ খেয়াঘাট দিয়ে পারাপার হয়। সাধারণ লোকজন ও ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের। বহুদিন ধরে এ নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গুমানি নদীর ওপর বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে পড়ে আছে। তাই ছোট্ট একটি ঠেলা নৌকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে নদী পারাপার হচ্ছে হাজারো মানুষ। আর ধামাইচ বাজার খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে বর্ষাকালে নৌকায় আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার হচ্ছেন নদীর দুই পাশের লাখো মানুষ। দুর্ভোগ এড়াতে উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের ধামাইচ বাজার খেয়াঘাটে গুমানী নদীর ওপর ধামাইচ বাজার থেকে ওপার হেমনগর পর্যন্ত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ধামাইচ গ্রামের আবদুল বাকী মাস্টার বলেন, কত এমপি এলোগেলো আমাদের কপালে সেতু হলো না। সবাই ভোটের আগে কথা দিয়ে যান, কেউ আর কথা রাখেন না। এই সেতুটার জন্য কত যে কষ্ট করতে হয় আমাদের। মরার আগে যদি সেতুটা দেখে যেতে পারতাম, তাহলে মরেও শান্তি পেতাম।
ধামাইচ বিল চলন উচ্চবিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলে, নদীর ওপর সেতু না থাকায় বিদ্যালয়ের আসতে সমস্যা হয়। শুকনো মৌসুমে বাঁশের মাচা ভেঙে যায় নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নদী পার হতে হয়। মাঝেমধ্যে নৌকাডুবির ঘটনাও ঘটে। তবে একাধিক খেয়া নৌকা থাকায় প্রাণহানি থেকে রক্ষা পান।
ধামাইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রভাষক আবু হাসিম খোকন বলেন, অনেকেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু নির্বাচনের পর আর কেউ আমাদের খোঁজখবর নেননি। আমরা অনেক দিন ধরে একটি সেতুর স্বপ্ন দেখছি কিন্তু আমাদের সেই স্বপ্ন যেন স্বপ্নই রয়ে গেল।
নদীর এপার-ওপারে রয়েছে বেশ কটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সবুজপাড়া উচ্চবিদ্যালয়, ধামাইচ বিলচলন উচ্চবিদ্যালয়, ধামাইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নওখাদা ফোরকানিয়া মাদরাসা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করেন। প্রতিদিন তারা ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় নদী পারাপার হন। এ ছাড়া রয়েছে জনতা ব্যাংক ধামাইচ শাখা, ধামাইচ হাট, চলনবিল অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী রসুনের হাট।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার সারোয়ার ধ্রুব জানান, এলাকার সংসদ সদস্য একটি ডিউলেটার আমাদের হেড অফিসে পাঠিয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলেই আমরা সেতুটি নির্মাণ করতে পারব।
সেতু নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল আজিজ বলেন, সংসদে এ বিষয়ে একাধিকবার কথা বলেছি। করোনার কারণে দেরি হয়েছে। অচিরেই প্রকল্পটির অনুমোদন হবে।