Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
চট্টগ্রামে তারুণ্যের সমাবেশে মির্জা ফখরুল

‘তরুণেরা রক্ত দিয়ে হাসিনার ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটিয়েছে, কিন্তু এখনো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি’

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তরুণেরা রক্ত দিয়ে হাসিনার ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটিয়েছে, কিন্তু এখনো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। আর তাই সবাইকে চোখ, কান খোলা রেখে যে কোন চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করে কেউ যেন কোন স্বার্থ উদ্ধার করতে না পারে।

শনিবার (১০ মে) বিকাল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম নগরের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

ফখরুল ইসলাম বলেন, এক-দুজন নয়, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অত্যাচারে লাখ লাখ মানুষ নির্যাতিত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে। ১৫ বছর সে গোটা জাতির ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। ২০ হাজারের মতো মানুষকে হত্যা করেছে। ১ হাজার ৭ শর বেশি মানুষকে গুম করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে ছয় বছর কারাগারে অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছিল। আমাদের নেতা তারেক রহমান যার দিকে বাংলাদেশ তাকিয়ে রয়েছে, তিনি এখনো দেশে ফিরতে পারেননি। এই অবস্থার অবসান হয়েছে শুধু আমাদের তরুণ ভাইদের জন্য।

চট্টগ্রামের নিউমার্কেট ও ঢাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে। আমরা দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে আর দেখতে চাই না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা মুক্ত এ বাংলাদেশে সংগ্রামী মাটি চট্টগ্রামে জন্ম দিয়েছে লাখো সৈনিকের। আমাদের মহান নেতা জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিল এ চট্টগ্রাম থেকে। এজন্য বীর চট্টলার মানুষকে আমরা আলাদা চোখে দেখি। এ চট্টগ্রামে শহীদ হয়েছিল জুলাই আন্দোলনের ওয়াসিম আকরাম। তরুণদের রক্তের উপর দিয়ে ফ্যাসিবাদের বিদায় হয়েছে। তার আগে ১৭ বছর ৬০ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। হাজার হাজার তরুণ প্রাণ দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৫ বছর পুরো জাতির ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। ২০ হাজারের ওপর মানুষ হত্যা করেছে। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। প্রিয়নেত্রীকে ৬ বছর কারাগারের অন্ধকারে বন্দি রেখেছিল। আমাদের তরুণ নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরতে দেননি। তরুণদের জীবনের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের অবসান হয়েছে। তরুণরাই আগামী দিনের চালিকাশক্তি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের পরিকল্পনায় তরুণ নেতারা চট্টগ্রামে অভাবনীয় এ সমাবেশ করেছে।

তিনি বলেন, আমরা একটি কঠিন ও অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছি। হাসিনা পালিয়েছে। কিন্তু তার প্রেত্মারা এখনও আছে। তারা এখনও ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশে আবার তাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠার। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র আমাদের তরুণদের সামনে টিকে থাকতে পারবেনা। কিন্তু দুভার্গ্য হচ্ছে আমরা যাদের দায়িত্ব দিয়েছি একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে তারা সঠিকভাবে কাজটি এখনও করতে পারছে না। এজন্য মাঝে মাঝে এরকম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আজকে এখানে যখন সভা হচ্ছে তখন আরেকটি সভা হচ্ছে এখানের নিউমার্কেটে, ঢাকায়ও হচ্ছে। দাবিটা কি? দাবি হল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা এ মাঠে আছি তারা নয়, আমরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চাই না। কারণ এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এদেশের মানুষকে নির্যাতন করেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে বাকশাল করেছে। সব পত্রিকা বন্ধ করেছিল। শুধুমাত্র ৪টি পত্রিকা খোলা রেখেছিল। অর্থনীতি বন্ধ করে দিছিল। সেই অর্থনীতিকে জিয়াউর রহমান সাহেব এসে খুলে দিয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, এখন সংস্কার সংস্কারের কথা বলেন? আরে প্রথম সংস্কার করেন জিয়াউর রহমান। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র আনেন তিনি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন, গার্মেন্টস খাত এবং বিদেশে মানবসম্পদ পাঠানো সব কিছুর শুরু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান করেছিলেন। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া ৯ বছর মাঠেঘাটে ঘুরে ঘুরে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এরশাদকে পরাজিত করছিল। তিনি সংসদীয় গনতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ঠিক রাখতে কেয়ারটেকার সরকারও করেছিলেন খালেদা জিয়া। কিছু কিছু মানুষ সব ভুলে যায়। তারা মনে করে যে, বাইরে থেকে লেখাপড়া শিখে এসে আমাদের সামনে কিছু সুন্দর সুন্দর মুখোরোচক কথা বললে জাতি বোধহয় সবকিছু ভুলে যাবে। তাদেরকে বলব, আজকে এ সমাবেশ দেখেন। যদি সমাবেশ দেখে বুঝতে পারেন, তাহলে জাতি উপকৃত হবেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, অধিকার প্রয়োগ করতে চায়। তরুণরা চাকরি, ব্যবসা ও কর্মসংস্থান চায়। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চায়। অভিভাবকরা তাদের সন্তানের পড়ালেখা চায়। কৃষক ভাইয়ের ফসলের মূল্য চায়। একটা দেশ চায় যেখানে সবাই কথা বলতে পারবে। যেটা সহনশীলতার মধ্য ঐক্যের মধ্য দিয়ে হবে। তারেক রহমানের এ তারুণ্যের সমাবেশের মূুল উদ্দেশ্য, এ তরুণরাই জেগে উঠেছে। আপনারাই পরাজিত করেছেন ফ্যাসিস্টকে। সেই তরুণদের বলছি আপনারাই জেগে উঠুন। আপনার অধিকার আপনারা কেড়ে নিন। মাথা ঠান্ড রেখে সজাগ থেকে সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিতে হবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে কোনো কিছু করতে দিব না। বাংলাদেশের প্রশ্নে আমরা আপোষহীন। যে কারণে তারেক রহমান বলেছিলেন, সবার আগে বাংলাদেশ। এর আগে বলেছিল ফয়সালা হবেন-রাজপথে। টেক ব্যাক-বাংলাদেশ। আর এবার বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ।

তরুণদের উদ্দেশে বলছি, আমরা দেখতে চাই সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। যেখানে মানুষ মানুষকে ভালবাসবে। বাংলাদেশের মাথাটা এবং পতাকা পত পত করে উড়বে। মাথা উঁচু করে থাকবে। আমাদের সমাবেশ মঞ্চে তামিম আছে। সে চট্টগ্রামের ছেলে। সে অসংখ্য তামিম তৈরি করতে বলেছে। সবাই সেদিকে যাবেন। চট্টগ্রামকে স্যালুট। চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিমকে শ্রদ্ধা জানাই। তবে সরকার পাঠ্যপুস্তকে শহীদ ওয়াসিমের নাম দেয়নি। আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান সরকার সংশোধন করে ওয়াসিমের নাম সংযুক্ত করবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডাম যেদিন ফিরে আসেন সেদিন লাখ লাখ মানুষ রাজপথে ছিল। আজকে সমাবেশ লক্ষ মানুষের সমাবেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দয়াকরে মতবাদকে সঠিকপথে নিয়ে আসেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সঠিক পথে আনতে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই।

স্বেচ্ছাসেবকদল সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে তারুণ্যের এ মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী , প্রধান বক্তা ছিলেন যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। বক্তব্য রাখেন জুলাই বিপ্লবে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিম আকরামের পিতা, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির। মঞ্চের সামনের সারিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, সাবেক সেক্রেটারী আবুল হাশেম বক্কর, মাহাবুবের রহমান শামীম, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, হুমাম কাদের চৌধুরী, সাইয়েদ আল নোমান, ইসরাফিল খসরু, ব্যারিস্টার ফয়সল দস্তগীর প্রমুখ।

আবহাওয়া

চট্টগ্রামে তারুণ্যের সমাবেশে মির্জা ফখরুল

‘তরুণেরা রক্ত দিয়ে হাসিনার ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটিয়েছে, কিন্তু এখনো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি’

প্রকাশের সময় : ১০:৫৪:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তরুণেরা রক্ত দিয়ে হাসিনার ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটিয়েছে, কিন্তু এখনো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। আর তাই সবাইকে চোখ, কান খোলা রেখে যে কোন চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করে কেউ যেন কোন স্বার্থ উদ্ধার করতে না পারে।

শনিবার (১০ মে) বিকাল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম নগরের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

ফখরুল ইসলাম বলেন, এক-দুজন নয়, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অত্যাচারে লাখ লাখ মানুষ নির্যাতিত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে। ১৫ বছর সে গোটা জাতির ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। ২০ হাজারের মতো মানুষকে হত্যা করেছে। ১ হাজার ৭ শর বেশি মানুষকে গুম করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে ছয় বছর কারাগারে অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছিল। আমাদের নেতা তারেক রহমান যার দিকে বাংলাদেশ তাকিয়ে রয়েছে, তিনি এখনো দেশে ফিরতে পারেননি। এই অবস্থার অবসান হয়েছে শুধু আমাদের তরুণ ভাইদের জন্য।

চট্টগ্রামের নিউমার্কেট ও ঢাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে। আমরা দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে আর দেখতে চাই না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা মুক্ত এ বাংলাদেশে সংগ্রামী মাটি চট্টগ্রামে জন্ম দিয়েছে লাখো সৈনিকের। আমাদের মহান নেতা জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিল এ চট্টগ্রাম থেকে। এজন্য বীর চট্টলার মানুষকে আমরা আলাদা চোখে দেখি। এ চট্টগ্রামে শহীদ হয়েছিল জুলাই আন্দোলনের ওয়াসিম আকরাম। তরুণদের রক্তের উপর দিয়ে ফ্যাসিবাদের বিদায় হয়েছে। তার আগে ১৭ বছর ৬০ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। হাজার হাজার তরুণ প্রাণ দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৫ বছর পুরো জাতির ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। ২০ হাজারের ওপর মানুষ হত্যা করেছে। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। প্রিয়নেত্রীকে ৬ বছর কারাগারের অন্ধকারে বন্দি রেখেছিল। আমাদের তরুণ নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরতে দেননি। তরুণদের জীবনের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের অবসান হয়েছে। তরুণরাই আগামী দিনের চালিকাশক্তি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের পরিকল্পনায় তরুণ নেতারা চট্টগ্রামে অভাবনীয় এ সমাবেশ করেছে।

তিনি বলেন, আমরা একটি কঠিন ও অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছি। হাসিনা পালিয়েছে। কিন্তু তার প্রেত্মারা এখনও আছে। তারা এখনও ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশে আবার তাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠার। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র আমাদের তরুণদের সামনে টিকে থাকতে পারবেনা। কিন্তু দুভার্গ্য হচ্ছে আমরা যাদের দায়িত্ব দিয়েছি একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে তারা সঠিকভাবে কাজটি এখনও করতে পারছে না। এজন্য মাঝে মাঝে এরকম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আজকে এখানে যখন সভা হচ্ছে তখন আরেকটি সভা হচ্ছে এখানের নিউমার্কেটে, ঢাকায়ও হচ্ছে। দাবিটা কি? দাবি হল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা এ মাঠে আছি তারা নয়, আমরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চাই না। কারণ এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এদেশের মানুষকে নির্যাতন করেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে বাকশাল করেছে। সব পত্রিকা বন্ধ করেছিল। শুধুমাত্র ৪টি পত্রিকা খোলা রেখেছিল। অর্থনীতি বন্ধ করে দিছিল। সেই অর্থনীতিকে জিয়াউর রহমান সাহেব এসে খুলে দিয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, এখন সংস্কার সংস্কারের কথা বলেন? আরে প্রথম সংস্কার করেন জিয়াউর রহমান। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র আনেন তিনি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন, গার্মেন্টস খাত এবং বিদেশে মানবসম্পদ পাঠানো সব কিছুর শুরু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান করেছিলেন। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া ৯ বছর মাঠেঘাটে ঘুরে ঘুরে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এরশাদকে পরাজিত করছিল। তিনি সংসদীয় গনতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ঠিক রাখতে কেয়ারটেকার সরকারও করেছিলেন খালেদা জিয়া। কিছু কিছু মানুষ সব ভুলে যায়। তারা মনে করে যে, বাইরে থেকে লেখাপড়া শিখে এসে আমাদের সামনে কিছু সুন্দর সুন্দর মুখোরোচক কথা বললে জাতি বোধহয় সবকিছু ভুলে যাবে। তাদেরকে বলব, আজকে এ সমাবেশ দেখেন। যদি সমাবেশ দেখে বুঝতে পারেন, তাহলে জাতি উপকৃত হবেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, অধিকার প্রয়োগ করতে চায়। তরুণরা চাকরি, ব্যবসা ও কর্মসংস্থান চায়। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চায়। অভিভাবকরা তাদের সন্তানের পড়ালেখা চায়। কৃষক ভাইয়ের ফসলের মূল্য চায়। একটা দেশ চায় যেখানে সবাই কথা বলতে পারবে। যেটা সহনশীলতার মধ্য ঐক্যের মধ্য দিয়ে হবে। তারেক রহমানের এ তারুণ্যের সমাবেশের মূুল উদ্দেশ্য, এ তরুণরাই জেগে উঠেছে। আপনারাই পরাজিত করেছেন ফ্যাসিস্টকে। সেই তরুণদের বলছি আপনারাই জেগে উঠুন। আপনার অধিকার আপনারা কেড়ে নিন। মাথা ঠান্ড রেখে সজাগ থেকে সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিতে হবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে কোনো কিছু করতে দিব না। বাংলাদেশের প্রশ্নে আমরা আপোষহীন। যে কারণে তারেক রহমান বলেছিলেন, সবার আগে বাংলাদেশ। এর আগে বলেছিল ফয়সালা হবেন-রাজপথে। টেক ব্যাক-বাংলাদেশ। আর এবার বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ।

তরুণদের উদ্দেশে বলছি, আমরা দেখতে চাই সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। যেখানে মানুষ মানুষকে ভালবাসবে। বাংলাদেশের মাথাটা এবং পতাকা পত পত করে উড়বে। মাথা উঁচু করে থাকবে। আমাদের সমাবেশ মঞ্চে তামিম আছে। সে চট্টগ্রামের ছেলে। সে অসংখ্য তামিম তৈরি করতে বলেছে। সবাই সেদিকে যাবেন। চট্টগ্রামকে স্যালুট। চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিমকে শ্রদ্ধা জানাই। তবে সরকার পাঠ্যপুস্তকে শহীদ ওয়াসিমের নাম দেয়নি। আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান সরকার সংশোধন করে ওয়াসিমের নাম সংযুক্ত করবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডাম যেদিন ফিরে আসেন সেদিন লাখ লাখ মানুষ রাজপথে ছিল। আজকে সমাবেশ লক্ষ মানুষের সমাবেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দয়াকরে মতবাদকে সঠিকপথে নিয়ে আসেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সঠিক পথে আনতে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই।

স্বেচ্ছাসেবকদল সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে তারুণ্যের এ মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী , প্রধান বক্তা ছিলেন যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। বক্তব্য রাখেন জুলাই বিপ্লবে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিম আকরামের পিতা, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির। মঞ্চের সামনের সারিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, সাবেক সেক্রেটারী আবুল হাশেম বক্কর, মাহাবুবের রহমান শামীম, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, হুমাম কাদের চৌধুরী, সাইয়েদ আল নোমান, ইসরাফিল খসরু, ব্যারিস্টার ফয়সল দস্তগীর প্রমুখ।