Dhaka মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা শহর হর্নমুক্ত করতে কার্যক্রম শুরু করছে সরকার : রিজওয়ানা হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অক্টোবর, নভেম্বরে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি থেকে সারা ঢাকা শহর হর্নমুক্ত করতে কার্যক্রম শুরু করছে সরকার বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদর দপ্তরের সামনে থেকে ‘নীরব এলাকা’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর সামনে ৩ কিলোমিটার মহাসড়কে (উত্তরে স্কলাস্টিকা পয়েন্ট থেকে দক্ষিণে লা মেরিডিয়ান পয়েন্ট পর্যন্ত) ঘোষিত হর্নমুক্ত ‘নীরব এলাকা’ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে সচেতনতামূলকভাবে এই কার্যক্রম পরিচালনা করবো। আপতত এই এলাকার ৩ কিলোমিটার নীরব এলাকা ঘোষণা করে সূচনা করা হয়েছে। আসলে সবাই সচেতন এবং নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেষ্ট হলেই আমরা এই নীরব এলাকা কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করতে পারবো।
বিশ্বের অন্য কোথাও বাংলাদেশের মতো এতটা হর্ন বাজায় না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বলেন, গাড়িতে হর্ন বাজানো এটা আমাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাসের বিষয় তাই হুট করে হর্ন না বাজানো কঠিন কাজ। তবে অবশ্যই আমাদের ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে হবে। প্রথম এক সপ্তাহ আমরা এই এলাকাতে ‘নীরব এলাকা’র কর্মসূচি পরিচালনা করবো, কারণ বিদেশ থেকে যখন কেউ এসে নামে তার কানে এই হর্নের শব্দ বাজে। তাই আমরা প্রথমে এই এলাকাকে বেছে নিয়েছি। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এতটা হর্ন বাজায় না। বিমানবন্দর এলাকার পরে ক্রমান্বয়ে ঢাকা শহরের অন্যান্য এলাকাতেও আমরা ‘নীরব এলাকা’র কর্মসূচি চালু করবো।

নিজের গাড়িতে হর্ন বাজান না, এমন কি উপদেষ্টা হিসেবে চলাচলের সময় প্রটোকলের সাইরেনও কখনও বাজাননি বলে জানিয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমি যখন উপদেষ্টা ছিলাম না তখনও আমার গাড়ির হর্ন আমি বাজাতাম না আর এখনও বাজাই না। এমন কি উপদেষ্টা হিসেবে প্রোটোকলের সাইরেনও বাজাইনি কখনও। আমি বাজাতে দেয়নি। তবে ঢাকার বাইরে যখন উপদেষ্টা হিসেবে গেছি তখন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যখন ঢুকে তখন স্থানীয় প্রোটোকল চেঞ্জ হয় সেই সময়গুলোতে আমি তাদের নিষেধ করার সুযোগ পাইনি।

উপদেষ্টা আরও বলেন, বিমানবন্দর এলাকাকে নীরব এলাকার কর্মসূচি পালনের সময় সচেতন করার পাশাপাশি আমরা আইনের প্রয়োগও রাখবো। কাজটা শুরু করতে পেরেছি এটাই আমাদের জন্য বড় ব্যাপার। দীর্ঘ দিনের অভ্যাস, তাই এখান থেকে বের হয়ে আসতে আমাদের সময় লাগবে। নীরব এলাকার কনসেপ্ট প্রথমে বিমানবন্দর পরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং এরপর আমরা ঢাকার বাইরে ধীরে ধীরে এটা বাস্তবায়ন করবো।

তিনি আরও বলেন, যদিও এমন উদ্যোগ কার্যকর হতে সময় লাগবে। কারণ হর্ন বাজানো যে অপরাধ এটাই অনেক চালক কোনোদিন শোনেনি। তাই আমরা চিন্তা করেছি ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার সময় এই বিষয় জানানো বা উল্লেখ রাখার ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেই বিষয়ে উদ্যোগ নেব। সার্বিকভাবে সচেতন করার সময় আমরা নীরব এলাকায় হর্ন বাজানোর জন্য জরিমানা মিনিমাম রেখেছি, আর সেটা ৫০০ টাকা। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাঠে থাকবেন।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে নীরব এলাকা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, বিআরটিএ, ঢাকা ট্রাফিক, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে, পরিবেশ অধিদপ্তর, এপিবিএন, বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

আবহাওয়া

ঢাকা শহর হর্নমুক্ত করতে কার্যক্রম শুরু করছে সরকার : রিজওয়ানা হাসান

প্রকাশের সময় : ০২:৩৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অক্টোবর, নভেম্বরে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি থেকে সারা ঢাকা শহর হর্নমুক্ত করতে কার্যক্রম শুরু করছে সরকার বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদর দপ্তরের সামনে থেকে ‘নীরব এলাকা’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর সামনে ৩ কিলোমিটার মহাসড়কে (উত্তরে স্কলাস্টিকা পয়েন্ট থেকে দক্ষিণে লা মেরিডিয়ান পয়েন্ট পর্যন্ত) ঘোষিত হর্নমুক্ত ‘নীরব এলাকা’ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে সচেতনতামূলকভাবে এই কার্যক্রম পরিচালনা করবো। আপতত এই এলাকার ৩ কিলোমিটার নীরব এলাকা ঘোষণা করে সূচনা করা হয়েছে। আসলে সবাই সচেতন এবং নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেষ্ট হলেই আমরা এই নীরব এলাকা কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করতে পারবো।
বিশ্বের অন্য কোথাও বাংলাদেশের মতো এতটা হর্ন বাজায় না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বলেন, গাড়িতে হর্ন বাজানো এটা আমাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাসের বিষয় তাই হুট করে হর্ন না বাজানো কঠিন কাজ। তবে অবশ্যই আমাদের ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে হবে। প্রথম এক সপ্তাহ আমরা এই এলাকাতে ‘নীরব এলাকা’র কর্মসূচি পরিচালনা করবো, কারণ বিদেশ থেকে যখন কেউ এসে নামে তার কানে এই হর্নের শব্দ বাজে। তাই আমরা প্রথমে এই এলাকাকে বেছে নিয়েছি। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এতটা হর্ন বাজায় না। বিমানবন্দর এলাকার পরে ক্রমান্বয়ে ঢাকা শহরের অন্যান্য এলাকাতেও আমরা ‘নীরব এলাকা’র কর্মসূচি চালু করবো।

নিজের গাড়িতে হর্ন বাজান না, এমন কি উপদেষ্টা হিসেবে চলাচলের সময় প্রটোকলের সাইরেনও কখনও বাজাননি বলে জানিয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমি যখন উপদেষ্টা ছিলাম না তখনও আমার গাড়ির হর্ন আমি বাজাতাম না আর এখনও বাজাই না। এমন কি উপদেষ্টা হিসেবে প্রোটোকলের সাইরেনও বাজাইনি কখনও। আমি বাজাতে দেয়নি। তবে ঢাকার বাইরে যখন উপদেষ্টা হিসেবে গেছি তখন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যখন ঢুকে তখন স্থানীয় প্রোটোকল চেঞ্জ হয় সেই সময়গুলোতে আমি তাদের নিষেধ করার সুযোগ পাইনি।

উপদেষ্টা আরও বলেন, বিমানবন্দর এলাকাকে নীরব এলাকার কর্মসূচি পালনের সময় সচেতন করার পাশাপাশি আমরা আইনের প্রয়োগও রাখবো। কাজটা শুরু করতে পেরেছি এটাই আমাদের জন্য বড় ব্যাপার। দীর্ঘ দিনের অভ্যাস, তাই এখান থেকে বের হয়ে আসতে আমাদের সময় লাগবে। নীরব এলাকার কনসেপ্ট প্রথমে বিমানবন্দর পরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং এরপর আমরা ঢাকার বাইরে ধীরে ধীরে এটা বাস্তবায়ন করবো।

তিনি আরও বলেন, যদিও এমন উদ্যোগ কার্যকর হতে সময় লাগবে। কারণ হর্ন বাজানো যে অপরাধ এটাই অনেক চালক কোনোদিন শোনেনি। তাই আমরা চিন্তা করেছি ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার সময় এই বিষয় জানানো বা উল্লেখ রাখার ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেই বিষয়ে উদ্যোগ নেব। সার্বিকভাবে সচেতন করার সময় আমরা নীরব এলাকায় হর্ন বাজানোর জন্য জরিমানা মিনিমাম রেখেছি, আর সেটা ৫০০ টাকা। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাঠে থাকবেন।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে নীরব এলাকা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, বিআরটিএ, ঢাকা ট্রাফিক, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে, পরিবেশ অধিদপ্তর, এপিবিএন, বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।