Dhaka শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ : উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

২০২৪ সালের ১৭ জুলাই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে ঢাবি হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের এ ঘোষণা দেওয়া হলো।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টা ৪৫টার দিকে ১৮ টি হলে ছাত্রদলের কমিটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এ ঘোষণা দেন।

উপাচার্য বলেন, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেটিই বহাল থাকবে এবং প্রত্যেক হল প্রশাসন এই নীতিমালার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত হল কমিটি নিয়েও সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন তিনি।

পরে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত হলো হল পর্যায়ে কোনো ছাত্ররাজনীতি চলবে না। তারা কেন্দ্রে, মধুর ক্যান্টিন করতে পারবে। যেটা সমঝোতা হয়েছিল। তবে আমরা কোনো ছাত্রসংগঠনকে ফোর্স করতে পারি না, আপনি বাতিল করেন। আমরা জানিয়েছি, ১৭ জুলাই যা নিষিদ্ধ হয়েছিল সেটা বহাল থাকবে। নিয়ম ভাঙার বিষয়ে আজকে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং হবে। তারপর যে ছাত্রসংগঠনগুলোর নাম এসেছে, তাদের সঙ্গেও আমাদের কথা বলতে হবে।

প্রক্টর আরও বলেন, আমরা এজন্য তাৎক্ষণিক শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি শাস্তির বিষয়ে। সবার সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এটা সময় লাগবে।

তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে হলপলিটিক্সের সম্পূর্ণ অবসান দাবি করেন। তারা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন: কেন কমিটি দেওয়া হলো উপাচার্যকে জবাব দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, বামসহ হলে এক্সিসটিং গুপ্ত কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতির সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে ছাত্ররাজনীতির পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব হল কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে। হল প্রভোস্টদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে। দ্রুত ডাকসু বাস্তবায়ন করতে হবে।

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন হল ইউনিটে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুপুর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে, সেখানে ছাত্রদলের প্রকাশ্য কমিটি ঘোষণা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়।

বিশেষ করে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা প্রথমে আন্দোলনে নামেন। সন্ধ্যার পর আন্দোলনের মাত্রা বাড়তে থাকে এবং রাত ১২টার পর টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হন। সেখান থেকে পরে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন, যেখানে রাত ২টার দিকে উপাচার্য তাঁদের সামনে উপস্থিত হয়ে ঘোষণাটি দেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকাশ্য, গোপন বা সুপ্ত— কোনো ধরনের হলপলিটিক্সই বরদাশত করা হবে না।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

স্বাধীনতা নিয়ে বক্তব্য দিয়ে জাতিকে আর বিভক্ত করা যাবে না : সালাহউদ্দিন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ : উপাচার্য

প্রকাশের সময় : ১১:২০:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

২০২৪ সালের ১৭ জুলাই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে ঢাবি হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের এ ঘোষণা দেওয়া হলো।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টা ৪৫টার দিকে ১৮ টি হলে ছাত্রদলের কমিটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এ ঘোষণা দেন।

উপাচার্য বলেন, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেটিই বহাল থাকবে এবং প্রত্যেক হল প্রশাসন এই নীতিমালার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত হল কমিটি নিয়েও সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন তিনি।

পরে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত হলো হল পর্যায়ে কোনো ছাত্ররাজনীতি চলবে না। তারা কেন্দ্রে, মধুর ক্যান্টিন করতে পারবে। যেটা সমঝোতা হয়েছিল। তবে আমরা কোনো ছাত্রসংগঠনকে ফোর্স করতে পারি না, আপনি বাতিল করেন। আমরা জানিয়েছি, ১৭ জুলাই যা নিষিদ্ধ হয়েছিল সেটা বহাল থাকবে। নিয়ম ভাঙার বিষয়ে আজকে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং হবে। তারপর যে ছাত্রসংগঠনগুলোর নাম এসেছে, তাদের সঙ্গেও আমাদের কথা বলতে হবে।

প্রক্টর আরও বলেন, আমরা এজন্য তাৎক্ষণিক শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি শাস্তির বিষয়ে। সবার সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এটা সময় লাগবে।

তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে হলপলিটিক্সের সম্পূর্ণ অবসান দাবি করেন। তারা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন: কেন কমিটি দেওয়া হলো উপাচার্যকে জবাব দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, বামসহ হলে এক্সিসটিং গুপ্ত কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতির সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে ছাত্ররাজনীতির পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব হল কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে। হল প্রভোস্টদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে। দ্রুত ডাকসু বাস্তবায়ন করতে হবে।

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন হল ইউনিটে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুপুর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে, সেখানে ছাত্রদলের প্রকাশ্য কমিটি ঘোষণা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়।

বিশেষ করে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা প্রথমে আন্দোলনে নামেন। সন্ধ্যার পর আন্দোলনের মাত্রা বাড়তে থাকে এবং রাত ১২টার পর টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হন। সেখান থেকে পরে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন, যেখানে রাত ২টার দিকে উপাচার্য তাঁদের সামনে উপস্থিত হয়ে ঘোষণাটি দেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকাশ্য, গোপন বা সুপ্ত— কোনো ধরনের হলপলিটিক্সই বরদাশত করা হবে না।