Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে গোসল করতে গিয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সুইমিংপুলে বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে নেমে পানিতে ডুবে মুহাম্মদ সোয়াদ (১৯) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশে অবস্থিত সুইমিংপুলে এই ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে পরিচালক মো. শাহজান আলী।

জানা যায়, নিহত ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগের এবং হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ছাত্র ছিলেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঢাবির গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মোর্শেদ আলম শফিক বলেন, আমাদের সামনেই ঘটনাটি ঘটে, কিন্তু বুঝিনি সে মারা যাবে। আট ফুট গভীরের পুলে ছিল ছেলেটা। সম্ভবত সাঁতার জানতো না সে। ইমার্জেন্সির কথা অনেকবার বলেছি, কিন্তু কেউ হেল্প করেনি। তাছাড়া, ফার্স্ট এইড দেওয়ার মতো কোনো লোকও ছিল না। সিপিআর দেওয়ার সময়ও সে জীবিত ছিল।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আরমান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা তখন গোসল করে উঠে কাপড় বদলাইতেছি। এমন সময় একজন বলতেছে এক ছেলে পানি খাইছে। ইতোমধ্যে ওরে পাড়ে ওঠানোও হইলো। কিন্তু প্রাথমিক চিকিৎসা কী করতে হবে কেউই কিছু বুঝতেছে না। একজন একেকটা বলতেছে। পরে একজনে তাকে চিত করে শোয়ানো অবস্থায়ই তার পেটে জোর করে চাপিতেছিল যেন পানি বের হয়ে যায়। তখনও ছেলের শ্বাস বদ্ধ, নড়াচড়া নেই। সবাই শোরগোল করতেছে। সবাই সবাইরে বলতেছে অ্যাম্বুলেন্স ডাকো। কিন্তু কেউই ডাকতেছে না।

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ওখানে সুইমিংপুলের দায়িত্বে থাকা অনেকজন ছিল। কেউ কিছু করতেছে না। তারা একবার একেকটা বলতেছে। কাউরে বলতেছে অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন। কাউরে বলতেছে রিকশা ডাকেন। কিন্তু তারা কিছু করতেছে না। এখানেই অনেক সময় চলে গেছে। পরে কোলে করে রিকশায় নেবে এমন সময় আরেক বড় ভাই আসলো। তিনি এসে বলল, আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি। পরে তিনি উপর করে শোয়াইয়া পেটের নিচে হাত রেখে উপরে চাপ দিয়ে অনেক পানি বের করছে। তখন ওই ছেলের শ্বাস নেওয়া শুরু হইছে এবং তা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিলো। এরপর রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। আমরা আর কিছু জানি না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ঘণ্টাখানেক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষার্থীকে নিয়া আসা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থী পানি বেশি খেয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেছে। তার মরদেহ এখন মর্গে রাখা আছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে গোসল করতে গিয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ০৪:১২:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সুইমিংপুলে বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে নেমে পানিতে ডুবে মুহাম্মদ সোয়াদ (১৯) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশে অবস্থিত সুইমিংপুলে এই ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে পরিচালক মো. শাহজান আলী।

জানা যায়, নিহত ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগের এবং হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ছাত্র ছিলেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঢাবির গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মোর্শেদ আলম শফিক বলেন, আমাদের সামনেই ঘটনাটি ঘটে, কিন্তু বুঝিনি সে মারা যাবে। আট ফুট গভীরের পুলে ছিল ছেলেটা। সম্ভবত সাঁতার জানতো না সে। ইমার্জেন্সির কথা অনেকবার বলেছি, কিন্তু কেউ হেল্প করেনি। তাছাড়া, ফার্স্ট এইড দেওয়ার মতো কোনো লোকও ছিল না। সিপিআর দেওয়ার সময়ও সে জীবিত ছিল।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আরমান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা তখন গোসল করে উঠে কাপড় বদলাইতেছি। এমন সময় একজন বলতেছে এক ছেলে পানি খাইছে। ইতোমধ্যে ওরে পাড়ে ওঠানোও হইলো। কিন্তু প্রাথমিক চিকিৎসা কী করতে হবে কেউই কিছু বুঝতেছে না। একজন একেকটা বলতেছে। পরে একজনে তাকে চিত করে শোয়ানো অবস্থায়ই তার পেটে জোর করে চাপিতেছিল যেন পানি বের হয়ে যায়। তখনও ছেলের শ্বাস বদ্ধ, নড়াচড়া নেই। সবাই শোরগোল করতেছে। সবাই সবাইরে বলতেছে অ্যাম্বুলেন্স ডাকো। কিন্তু কেউই ডাকতেছে না।

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ওখানে সুইমিংপুলের দায়িত্বে থাকা অনেকজন ছিল। কেউ কিছু করতেছে না। তারা একবার একেকটা বলতেছে। কাউরে বলতেছে অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন। কাউরে বলতেছে রিকশা ডাকেন। কিন্তু তারা কিছু করতেছে না। এখানেই অনেক সময় চলে গেছে। পরে কোলে করে রিকশায় নেবে এমন সময় আরেক বড় ভাই আসলো। তিনি এসে বলল, আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি। পরে তিনি উপর করে শোয়াইয়া পেটের নিচে হাত রেখে উপরে চাপ দিয়ে অনেক পানি বের করছে। তখন ওই ছেলের শ্বাস নেওয়া শুরু হইছে এবং তা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিলো। এরপর রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। আমরা আর কিছু জানি না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ঘণ্টাখানেক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষার্থীকে নিয়া আসা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থী পানি বেশি খেয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেছে। তার মরদেহ এখন মর্গে রাখা আছে।