Dhaka সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা ফাঁকা হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে : আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদের ছুটিতে ঢাকা ফাঁকা হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আব্দুল্লাহ আল মামুন।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ঘরে ফেরা মানুষের ঈদযাত্রা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ঢাকা ফাঁকা হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে, সেটার জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। ঈদে ঢাকায় সবসময় পুলিশের কড়া নিরাপত্তা থাকবে। রাতের বেলা ও দিনের বেলায় নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা ছাড়াও বড় বড় শহরেও আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। আমরা দেখেছি ফাঁকা ঢাকায় অনেকে বাসা-বাড়ি পরিবর্তন ও ফার্নিচার পরিবর্তন করেন। এমন পরিবর্তন কেউ করতে গেলে নিরাপত্তা প্রহরীরা যেন তাদের প্রশ্ন করেন। পুলিশসহ আমরা সবাই সচেতন থাকলে ফাঁকা ঢাকাকে আমরা নিরাপত্তার চাঁদরে ডেকে দিতে পারবো।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় সাব-কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাব-কন্ট্রোল রুম করে আমরা নিরাপত্তা জোরদার করেছি। যাত্রীসাধারণ যেন দ্রুত নিরাপদে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন, আমরা আমাদের সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অন্যান্য বছর সারা দিন যাত্রী সাধারণদের রাস্তায় বসে থাকতে হয়েছে। সরকারের উদ্যোগে পদ্মা সেতু চালু হয়েছি। আমরা জানি উত্তরবঙ্গের রাস্তারও অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে চন্দ্রার মোড়ে ৮-১০-২০ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। কিন্তু রাস্তার উন্নয়ন হওয়ায় যাতায়াত এখন অনেক সহজ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা পরিবহন কাউন্টারগুলোতে কথা বলেছি, এখনও তেমন যাত্রীর চাপ পড়েনি। সেহরির পর যাত্রীর চাপ বাড়বে। যাত্রীরা যেন নিরাপদের ভ্রমণ করে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন, সে জন্য গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে। ঈদের জামাতের মাঠের নিরাপত্তাব্যবস্থা রেখেছি।

আইজিপি বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার সময় ফাঁকা ঢাকায় ফাঁকা বাসায় অনেকে স্বর্ণালংকার ও টাকাপয়সা রেখে যান। দেখা যায় এসব বিষয়ে কাজের লোকসহ অনেকে জানে। এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। বাড়ি একেবারে ফাঁকা রেখে না যাওয়াই উচিত। যদি যান তাহলে গয়না ও টাকাপয়সা নিকট আত্মীয়স্বজন যারা ঢাকায় থাকবেন, তাদের কাছে রেখে যান অথবা সঙ্গে নিয়ে যান। এই লম্বা ছুটিতে এসব মূল্যবান সামগ্রী নিজের ফাঁকা বাসায় রেখে যাবে না।

তিনি বলেন, গত বছরগুলোতে ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের সারাদিন রাত রাস্তায় যানজটে বসে থেকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে পদ্মা সেতু চালু হয়েছে, উত্তরবঙ্গের রাস্তার অনেক উন্নতি হয়েছে, চন্দ্রার আগের সেই ৮/১০ ঘণ্টার যানজট নেই, ছুটির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে সবমিলিয়ে এবারের ঈদযাত্রা সন্তোষজনক হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া তৎপরতায় নিজ নিজ গন্তব্যে মানুষ পৌঁছাতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন পুলিশ প্রধান।

যাত্রীদের উদ্দেশ্যে পুলিশ প্রধান বলেন, রাস্তায় গমনাগমনকালে সহযাত্রী কিংবা কারো দেওয়া কোনোকিছু খাবেন না। এতে করে আপনি অজ্ঞান পার্টি কিংবা মলম পার্টির খপ্পরে পড়তে পারেন। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আরও বলেন, বেপরোয়া গাড়িচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। ঈদযাত্রা যেন সবার জন্য নির্বিঘ্ন হয় সেজন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি আশা করি এবারের ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনার সংখ্যা কমবে। চালক ভাইদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাবেন।

এ সময় যাত্রীদের অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, আপনারা ভ্রমণকালে অপরিচিত কোনও মানুষের দেওয়া কিছু খাবেন না। এগুলো খেলেই অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা আছে। আমরা আশা করছি সাধারণ মানুষ কোনও ধরনের ঝামেলা ছাড়া ঈদযাত্রা করতে পারবেন।

সম্প্রতি মার্কেটে আগুন লাগার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। প্রতিটি ঘটনা আমরা নিবিড়ভাবে তদন্ত করছি। এর মধ্যে নাশকতার কোনও গন্ধ আছে কিনা, থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের মার্কেটগুলোর কমিটির সঙ্গে পুলিশ আলোচনা করেছে। তাদের বিভিন্নমুখী নিরাপত্তাব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অপর আরেক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি জেলা পুলিশসহ অন্যান্য পুলিশের ইউনিট কাজ করছে। গাড়ি বেপরোয়া চালালে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবেন তারাও ব্যবস্থা নেবেন। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

এসময় তিনি টার্মিনালে নোঙর করা বিভিন্ন লঞ্চে ঘুরে ঘুরে যাত্রীদের সাথে কথা বলেন। নৌবন্দর পরিদর্শনকালে আইজিপির সাথে নৌ-পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলাম ও ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঢাকা ফাঁকা হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে : আইজিপি

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৫:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদের ছুটিতে ঢাকা ফাঁকা হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আব্দুল্লাহ আল মামুন।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ঘরে ফেরা মানুষের ঈদযাত্রা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ঢাকা ফাঁকা হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে, সেটার জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। ঈদে ঢাকায় সবসময় পুলিশের কড়া নিরাপত্তা থাকবে। রাতের বেলা ও দিনের বেলায় নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা ছাড়াও বড় বড় শহরেও আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। আমরা দেখেছি ফাঁকা ঢাকায় অনেকে বাসা-বাড়ি পরিবর্তন ও ফার্নিচার পরিবর্তন করেন। এমন পরিবর্তন কেউ করতে গেলে নিরাপত্তা প্রহরীরা যেন তাদের প্রশ্ন করেন। পুলিশসহ আমরা সবাই সচেতন থাকলে ফাঁকা ঢাকাকে আমরা নিরাপত্তার চাঁদরে ডেকে দিতে পারবো।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় সাব-কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাব-কন্ট্রোল রুম করে আমরা নিরাপত্তা জোরদার করেছি। যাত্রীসাধারণ যেন দ্রুত নিরাপদে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন, আমরা আমাদের সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অন্যান্য বছর সারা দিন যাত্রী সাধারণদের রাস্তায় বসে থাকতে হয়েছে। সরকারের উদ্যোগে পদ্মা সেতু চালু হয়েছি। আমরা জানি উত্তরবঙ্গের রাস্তারও অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে চন্দ্রার মোড়ে ৮-১০-২০ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। কিন্তু রাস্তার উন্নয়ন হওয়ায় যাতায়াত এখন অনেক সহজ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা পরিবহন কাউন্টারগুলোতে কথা বলেছি, এখনও তেমন যাত্রীর চাপ পড়েনি। সেহরির পর যাত্রীর চাপ বাড়বে। যাত্রীরা যেন নিরাপদের ভ্রমণ করে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন, সে জন্য গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে। ঈদের জামাতের মাঠের নিরাপত্তাব্যবস্থা রেখেছি।

আইজিপি বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার সময় ফাঁকা ঢাকায় ফাঁকা বাসায় অনেকে স্বর্ণালংকার ও টাকাপয়সা রেখে যান। দেখা যায় এসব বিষয়ে কাজের লোকসহ অনেকে জানে। এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। বাড়ি একেবারে ফাঁকা রেখে না যাওয়াই উচিত। যদি যান তাহলে গয়না ও টাকাপয়সা নিকট আত্মীয়স্বজন যারা ঢাকায় থাকবেন, তাদের কাছে রেখে যান অথবা সঙ্গে নিয়ে যান। এই লম্বা ছুটিতে এসব মূল্যবান সামগ্রী নিজের ফাঁকা বাসায় রেখে যাবে না।

তিনি বলেন, গত বছরগুলোতে ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের সারাদিন রাত রাস্তায় যানজটে বসে থেকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে পদ্মা সেতু চালু হয়েছে, উত্তরবঙ্গের রাস্তার অনেক উন্নতি হয়েছে, চন্দ্রার আগের সেই ৮/১০ ঘণ্টার যানজট নেই, ছুটির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে সবমিলিয়ে এবারের ঈদযাত্রা সন্তোষজনক হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া তৎপরতায় নিজ নিজ গন্তব্যে মানুষ পৌঁছাতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন পুলিশ প্রধান।

যাত্রীদের উদ্দেশ্যে পুলিশ প্রধান বলেন, রাস্তায় গমনাগমনকালে সহযাত্রী কিংবা কারো দেওয়া কোনোকিছু খাবেন না। এতে করে আপনি অজ্ঞান পার্টি কিংবা মলম পার্টির খপ্পরে পড়তে পারেন। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আরও বলেন, বেপরোয়া গাড়িচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। ঈদযাত্রা যেন সবার জন্য নির্বিঘ্ন হয় সেজন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি আশা করি এবারের ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনার সংখ্যা কমবে। চালক ভাইদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাবেন।

এ সময় যাত্রীদের অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, আপনারা ভ্রমণকালে অপরিচিত কোনও মানুষের দেওয়া কিছু খাবেন না। এগুলো খেলেই অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা আছে। আমরা আশা করছি সাধারণ মানুষ কোনও ধরনের ঝামেলা ছাড়া ঈদযাত্রা করতে পারবেন।

সম্প্রতি মার্কেটে আগুন লাগার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। প্রতিটি ঘটনা আমরা নিবিড়ভাবে তদন্ত করছি। এর মধ্যে নাশকতার কোনও গন্ধ আছে কিনা, থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের মার্কেটগুলোর কমিটির সঙ্গে পুলিশ আলোচনা করেছে। তাদের বিভিন্নমুখী নিরাপত্তাব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অপর আরেক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি জেলা পুলিশসহ অন্যান্য পুলিশের ইউনিট কাজ করছে। গাড়ি বেপরোয়া চালালে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবেন তারাও ব্যবস্থা নেবেন। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

এসময় তিনি টার্মিনালে নোঙর করা বিভিন্ন লঞ্চে ঘুরে ঘুরে যাত্রীদের সাথে কথা বলেন। নৌবন্দর পরিদর্শনকালে আইজিপির সাথে নৌ-পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলাম ও ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।