Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৩৫ কিমি যানজট

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ। সড়ক-মহাসড়কগুলোতে দেখা দিয়েছে যানজট। কোনো কোনো সড়কে যানবাহন না থাকায় ট্রাকে, পিকআপে করে বৃষ্টিতে ভিজে যাতায়াত করতে হচ্ছে লোকজনকে।

বুধবার (২৮ জুন) ভোর ৪টা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাশ থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। মাঝে যানজট কিছুটা কমে আসলেও গুড়িগুড়ি বৃষ্টি, বেপরোয়া গতিতে যানচলাচল করাসহ দফায় দফায় টোল বন্ধ থাকার ফের যানজটের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে এখনো সড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে হাতিয়া, সল্লা, এলেঙ্গা, রাবনা, ভাতকুড়া পর্যন্ত থেমে থেমে যানজট বাধছে। তবে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

এই সড়কে যানজটের কারণ হিসেবে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, সেতুর ওপরে দুর্ঘটনা, গাড়ি বিকল হওয়া, দফায় দফায় টোল আদায় বন্ধ এবং চালকদের বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোকে দায়ী করেছেন ট্রাফিক পুলিশ।
জানা গেছে, বুধবার ভোরে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দুটি গাড়ির সংঘর্ষ ও একটি পিকআপ বিকল হয়। বিকল গাড়িটি সরিয়ে নিতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। এতে ভোর ৪ টা ১৫ থেকে ৪ টা ৫৩ মিনিট পর্যন্ত টোল আদায় বন্ধ রাখে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর আগেও কয়েক বার টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়। এতে যানজট শুরু হয় মহাসড়কে।

এদিকে, মহাসড়কে যানজটের কারণে বিপাকে পড়েছে ঘরমুখো মানুষ। বিশেষ করে যারা বাস না পেয়ে খোলা ট্রাক ও পিকআপে চেপে বাড়ি ফিরছেন বৃষ্টির কারণে তারা বেশি সমস্যায় পড়েছেন।

ঈদের আগের দিন এ যানজটের ফলে সাধারণ মানুষের অস্বস্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলগামী এক যাত্রী বলেন, আমি প্রায় দুই ঘণ্টা মহাসড়কের নাটিয়াপাড়া এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়িতে বসে আছি। রাস্তা একেবারে আটকে আছে।

খোলা ট্রাকে পরিবার নিয়ে রওনা দিয়েছেন মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, বাস না পেয়ে ট্রাকে উঠেছি, কিন্তু বৃষ্টি বিপাকে ফেলেছে। এই বৃষ্টি হচ্ছে, আবার কিছুক্ষণ হচ্ছে না। রাতে গাড়িতে উঠেছি, কোনাবাড়ি থেকে এখন সকাল ৭টা বাজে এলেঙ্গাতেই আছি। পরিবার নিয়ে কি যে একটা খারাপ অবস্থায় আছি তা বলে বুঝানো যাবে না।

বাসের চালকরা জানান, ঢাকা থেকে যানজট ঠেলে আসতেছি। মহাসড়কের চারলেন হলেও এলেঙ্গার যানজট মহাসড়কে গিয়ে ঠেকেছে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। স্বাভাবিকভাবে গড়ে ১৮-২০ হাজার যানবাহন সেতু দিয়ে পারাপার হয়। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটিতে পরিবহনের সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ফলে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত এই ১৪ কিলোমিটার সড়ক দুই লেন এবং অতিরিক্ত গাড়ির চাপে যানজট ও ভোগান্তি হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহিদ হাসান জানান, সেতুর ওপর ও মহাসড়কে দুর্ঘটনার কারণে যানজট শুরু হয়। বেপরোয়া যানবাহন, পথে পথে গাড়ি বিকল হওয়ার কারণে এখন নানাস্থানে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে তথ্য পাচ্ছি। তবে যানচলাচল স্বাভাবিক করতে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখন গাড়ির টান শুরু হয়েছে, আশা করছি দ্রুত যানচলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৩৫ কিমি যানজট

প্রকাশের সময় : ১২:১৮:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুন ২০২৩

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ। সড়ক-মহাসড়কগুলোতে দেখা দিয়েছে যানজট। কোনো কোনো সড়কে যানবাহন না থাকায় ট্রাকে, পিকআপে করে বৃষ্টিতে ভিজে যাতায়াত করতে হচ্ছে লোকজনকে।

বুধবার (২৮ জুন) ভোর ৪টা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাশ থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। মাঝে যানজট কিছুটা কমে আসলেও গুড়িগুড়ি বৃষ্টি, বেপরোয়া গতিতে যানচলাচল করাসহ দফায় দফায় টোল বন্ধ থাকার ফের যানজটের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে এখনো সড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে হাতিয়া, সল্লা, এলেঙ্গা, রাবনা, ভাতকুড়া পর্যন্ত থেমে থেমে যানজট বাধছে। তবে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

এই সড়কে যানজটের কারণ হিসেবে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, সেতুর ওপরে দুর্ঘটনা, গাড়ি বিকল হওয়া, দফায় দফায় টোল আদায় বন্ধ এবং চালকদের বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোকে দায়ী করেছেন ট্রাফিক পুলিশ।
জানা গেছে, বুধবার ভোরে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দুটি গাড়ির সংঘর্ষ ও একটি পিকআপ বিকল হয়। বিকল গাড়িটি সরিয়ে নিতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। এতে ভোর ৪ টা ১৫ থেকে ৪ টা ৫৩ মিনিট পর্যন্ত টোল আদায় বন্ধ রাখে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর আগেও কয়েক বার টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়। এতে যানজট শুরু হয় মহাসড়কে।

এদিকে, মহাসড়কে যানজটের কারণে বিপাকে পড়েছে ঘরমুখো মানুষ। বিশেষ করে যারা বাস না পেয়ে খোলা ট্রাক ও পিকআপে চেপে বাড়ি ফিরছেন বৃষ্টির কারণে তারা বেশি সমস্যায় পড়েছেন।

ঈদের আগের দিন এ যানজটের ফলে সাধারণ মানুষের অস্বস্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলগামী এক যাত্রী বলেন, আমি প্রায় দুই ঘণ্টা মহাসড়কের নাটিয়াপাড়া এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়িতে বসে আছি। রাস্তা একেবারে আটকে আছে।

খোলা ট্রাকে পরিবার নিয়ে রওনা দিয়েছেন মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, বাস না পেয়ে ট্রাকে উঠেছি, কিন্তু বৃষ্টি বিপাকে ফেলেছে। এই বৃষ্টি হচ্ছে, আবার কিছুক্ষণ হচ্ছে না। রাতে গাড়িতে উঠেছি, কোনাবাড়ি থেকে এখন সকাল ৭টা বাজে এলেঙ্গাতেই আছি। পরিবার নিয়ে কি যে একটা খারাপ অবস্থায় আছি তা বলে বুঝানো যাবে না।

বাসের চালকরা জানান, ঢাকা থেকে যানজট ঠেলে আসতেছি। মহাসড়কের চারলেন হলেও এলেঙ্গার যানজট মহাসড়কে গিয়ে ঠেকেছে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। স্বাভাবিকভাবে গড়ে ১৮-২০ হাজার যানবাহন সেতু দিয়ে পারাপার হয়। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটিতে পরিবহনের সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ফলে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত এই ১৪ কিলোমিটার সড়ক দুই লেন এবং অতিরিক্ত গাড়ির চাপে যানজট ও ভোগান্তি হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহিদ হাসান জানান, সেতুর ওপর ও মহাসড়কে দুর্ঘটনার কারণে যানজট শুরু হয়। বেপরোয়া যানবাহন, পথে পথে গাড়ি বিকল হওয়ার কারণে এখন নানাস্থানে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে তথ্য পাচ্ছি। তবে যানচলাচল স্বাভাবিক করতে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখন গাড়ির টান শুরু হয়েছে, আশা করছি দ্রুত যানচলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।