Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ কি.মি তীব্র যানজট

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে মোঘরাপাড়া পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ তীর্থ মহাষ্টমী স্নান উৎসব উপলক্ষে বন্দরের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে যাত্রাকে ঘিরে লাখ লাখ মানুষের আগমনের কারণে এ যানজট বলে জানিয়েছে পুলিশ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মস্থলে যাওয়া যাত্রীরা।

বুধবার (২৯ মার্চ) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। তীব্র যানজটের কারণে অধিকাংশ মানুষ হেঁটে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। অনেকে আবার বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন জরুরি কাজে বের হওয়া নারী ও বৃদ্ধরা।

যাত্রী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত থেকে সমাসড়কসহ আশপাশের এলাকার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটের তীব্রতায় বিরক্ত হয়ে যাত্রীরা পায়ে হেঁটে পথ পাড়ি দিচ্ছেন। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী লেনে তীব্র যানজট রয়েছে। আর মদনপুর থেকে সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজটের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। তবে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী লেনে কোথাও যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে আবার কোথাও ফাঁকা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লাখ লাখ পুণ্যার্থী আগমনের কারণে ভোর থেকেই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়েছে। মদনপুরসহ কয়েকটি পয়েন্টে পুণ্যার্থীরা যানবাহন থেকে নেমে রাস্তা পারাপারের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

আশরাফুল আলম নামের এক চাকরিজীবী বলেন, কাঁচপুরের উদ্দেশ্যে ৩০ মিনিট আগে শিমরাইল মোড় থেকে নাফ বাসে উঠেছি। কিন্তু রাস্তায় এত যানজট যে, বাস একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। সাধারণ দিনগুলোতে কাঁচপুর যেতে সর্বোচ্চ ৬-৭ মিনিট লাগতো। রাস্তার যে অবস্থা দেখছি, আজ অফিসে যাওয়া হবে কি-না কে জানে।

রহিমা খাতুন নামের এক পোশাকশ্রমিক বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে বাসেই বসে আছি। কতক্ষণ রাস্তার এ অবস্থা থাকবে জানি না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি হেঁটেই কারখানায় যাবো।’

রফিকুল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ব্যবসার জরুরি কাজে রাস্তায় বের হয়েছিলাম। মহাসড়কে যে যানজট দেখছি তাতে করে আজ আর গন্তব্যস্থলে যেতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না।

তীব্র যানজটের ফলে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আবু জাফর মিয়া। তিনি বলেন, সকাল থেকে মহাসড়কে তীব্র যানজট রয়েছে। মদনপুর এলাকা থেকে বাসে করে মেঘনা ব্রিজ পার হতে চেয়েছি। সেখানে একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করি। কিন্তু তীব্র যানজটের ফলে এক ঘণ্টায় আধা কিলোমিটার এগোতে পারিনি। এ কারণে বাস ছেড়ে পায়ে হেঁটে রওনা করেছি। সামনে যানজট কম দেখলে অন্য কোনো যানবাহনে করে গন্তব্যে পৌঁছাবো। নয়তো পায়ে হেঁটে পুরো পথ পাড়ি দিতে হবে।

সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বসে গরমের মধ্যে পত্রিকা হাতে বাতাস করছেন জামাল মিয়া। তিনি বলেন, যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে একই জায়গায় বসে আছি। কর্মস্থলে যেতে হলে মহাসড়ক দিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনও পথ নেই।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালামাল নিয়ে কুমিল্লা জেলায় ট্রাক চালিয়ে যাচ্ছেন চালক রাশেদ আহমেদ। তিনি বলেন, সকাল থেকে যানজটের মধ্যে গাড়ি বন্ধ করে বসে আছি। মাঝে মধ্যে সামনের গাড়ি কিছুটা এগোলে গাড়ি স্টার্ট দিই। এভাবে সকাল থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে কাঁচপুর এলাকায় বসে আছি। কখন যানজট শেষ হবে কে জানে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইব্রাহিম জানান, লাঙ্গলবন্দে সাময়িকভাবে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মোগড়াপাড়া, লাঙ্গলবন্দ ও বন্দর এলাকায় ওই যানজট দেখা যায়। দুদিনব্যাপী মহাষ্টমী স্নানোৎসবের কারণে এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। এর কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সকাল থেকে দীর্ঘ এ যানজট সৃষ্টি হয়। তবে স্নান শেষে পুণ্যার্থীরা ফিরে যাওয়া শুরু করলে যানজট অনেকটাই কমে যাবে। যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ। যানজট নিয়ন্ত্রণে হাইওয়ে পুলিশের প্রায় ২০টি টিম মহাসড়কে কাজ করছে।

 

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক চার লেন দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন 

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ কি.মি তীব্র যানজট

প্রকাশের সময় : ১২:২০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে মোঘরাপাড়া পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ তীর্থ মহাষ্টমী স্নান উৎসব উপলক্ষে বন্দরের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে যাত্রাকে ঘিরে লাখ লাখ মানুষের আগমনের কারণে এ যানজট বলে জানিয়েছে পুলিশ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মস্থলে যাওয়া যাত্রীরা।

বুধবার (২৯ মার্চ) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। তীব্র যানজটের কারণে অধিকাংশ মানুষ হেঁটে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। অনেকে আবার বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন জরুরি কাজে বের হওয়া নারী ও বৃদ্ধরা।

যাত্রী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত থেকে সমাসড়কসহ আশপাশের এলাকার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটের তীব্রতায় বিরক্ত হয়ে যাত্রীরা পায়ে হেঁটে পথ পাড়ি দিচ্ছেন। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী লেনে তীব্র যানজট রয়েছে। আর মদনপুর থেকে সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজটের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। তবে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী লেনে কোথাও যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে আবার কোথাও ফাঁকা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লাখ লাখ পুণ্যার্থী আগমনের কারণে ভোর থেকেই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়েছে। মদনপুরসহ কয়েকটি পয়েন্টে পুণ্যার্থীরা যানবাহন থেকে নেমে রাস্তা পারাপারের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

আশরাফুল আলম নামের এক চাকরিজীবী বলেন, কাঁচপুরের উদ্দেশ্যে ৩০ মিনিট আগে শিমরাইল মোড় থেকে নাফ বাসে উঠেছি। কিন্তু রাস্তায় এত যানজট যে, বাস একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। সাধারণ দিনগুলোতে কাঁচপুর যেতে সর্বোচ্চ ৬-৭ মিনিট লাগতো। রাস্তার যে অবস্থা দেখছি, আজ অফিসে যাওয়া হবে কি-না কে জানে।

রহিমা খাতুন নামের এক পোশাকশ্রমিক বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে বাসেই বসে আছি। কতক্ষণ রাস্তার এ অবস্থা থাকবে জানি না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি হেঁটেই কারখানায় যাবো।’

রফিকুল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ব্যবসার জরুরি কাজে রাস্তায় বের হয়েছিলাম। মহাসড়কে যে যানজট দেখছি তাতে করে আজ আর গন্তব্যস্থলে যেতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না।

তীব্র যানজটের ফলে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আবু জাফর মিয়া। তিনি বলেন, সকাল থেকে মহাসড়কে তীব্র যানজট রয়েছে। মদনপুর এলাকা থেকে বাসে করে মেঘনা ব্রিজ পার হতে চেয়েছি। সেখানে একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করি। কিন্তু তীব্র যানজটের ফলে এক ঘণ্টায় আধা কিলোমিটার এগোতে পারিনি। এ কারণে বাস ছেড়ে পায়ে হেঁটে রওনা করেছি। সামনে যানজট কম দেখলে অন্য কোনো যানবাহনে করে গন্তব্যে পৌঁছাবো। নয়তো পায়ে হেঁটে পুরো পথ পাড়ি দিতে হবে।

সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বসে গরমের মধ্যে পত্রিকা হাতে বাতাস করছেন জামাল মিয়া। তিনি বলেন, যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে একই জায়গায় বসে আছি। কর্মস্থলে যেতে হলে মহাসড়ক দিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনও পথ নেই।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালামাল নিয়ে কুমিল্লা জেলায় ট্রাক চালিয়ে যাচ্ছেন চালক রাশেদ আহমেদ। তিনি বলেন, সকাল থেকে যানজটের মধ্যে গাড়ি বন্ধ করে বসে আছি। মাঝে মধ্যে সামনের গাড়ি কিছুটা এগোলে গাড়ি স্টার্ট দিই। এভাবে সকাল থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে কাঁচপুর এলাকায় বসে আছি। কখন যানজট শেষ হবে কে জানে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইব্রাহিম জানান, লাঙ্গলবন্দে সাময়িকভাবে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মোগড়াপাড়া, লাঙ্গলবন্দ ও বন্দর এলাকায় ওই যানজট দেখা যায়। দুদিনব্যাপী মহাষ্টমী স্নানোৎসবের কারণে এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। এর কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সকাল থেকে দীর্ঘ এ যানজট সৃষ্টি হয়। তবে স্নান শেষে পুণ্যার্থীরা ফিরে যাওয়া শুরু করলে যানজট অনেকটাই কমে যাবে। যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ। যানজট নিয়ন্ত্রণে হাইওয়ে পুলিশের প্রায় ২০টি টিম মহাসড়কে কাজ করছে।