নিজস্ব প্রতিবেদক :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এখন থেকে বিদেশি রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনাররা আর বাড়তি প্রটোকল সুবিধা পাবেন না। তবে কেউ নিতে চাইলে তিনি ভাড়া করতে পারবেন।
সোমবার (১৫ মে) গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানান। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সৌদি আরবসহ ছয় দেশের রাষ্ট্রদূতকে বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে থাকে বাংলাদেশ।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতরা এর আগে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স সুবিধা পেতেন। তবে এই সুবিধা আর দেওয়া হবে না জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা, ইইউ, সৌদি আরবে এ সুবিধা দেওয়া হয় না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর কাউকে এ সুবিধা দেব না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জানান, আমাদের দেশে চলাফেরার জন্য কয়েকটা দেশকে বিশেষ নিরাপত্তা ফোর্স দেওয়া হয়ে থাকে। তবে অনেক উন্নত দেশে এটা দেওয়া হয় না। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, সৌদি আরবে এ সুবিধা দেওয়া হয় না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর কাউকে এ সুবিধা দেব না।
বিদেশি দূতদের বাড়তি প্রটোকল সুবিধা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো, জানতে চাইলে তার ব্যাখ্যায় ড. মোমেন বলেন, সম্প্রতি আরও অনেক দেশের কূটনীতিকরা এ সুযোগ চাচ্ছিলেন। এটা একটা প্রেস্টিজের বিষয়। আমাদের এত সম্পদ নেই যে, আমরা ট্যাক্সের পয়সা দিয়ে সবাইকে বাড়তি প্রটোকল সুবিধা দেব। ৫৮ জনের সবাই চান এ সুযোগ। আমরা এটা দিতে পারছি না। এজন্য আমরা ঠিক করেছি কাউকে আর দেওয়া হবে না।
ড. মোমেন বলেন, আমরা শর্ত দিয়েছি, যদি কেউ নিতে চান, তিনি ভাড়া করতে পারবেন। বিদেশে এ সিস্টেম আছে। আমাদের সিকিউরিটি ফোর্স দরকার। মেট্রোরেল হয়েছে, পদ্মা সেতু হয়েছে; আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে আইন-শৃঙ্খলা উন্নত। এখানে রাস্তা-ঘাটে কেউ কাউকে গুলি করে মারে না, গাড়ি আটকে মারে না। তাই আমরা মনে করি, এগুলোর প্রয়োজন নেই। এটা রাখতে গেলে অনেকের মনে কষ্ট। সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি গত সপ্তাহে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিশনগুলোকে অবগত করা হয়েছে।
এদিন সন্ধ্যায় ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক গণমাধ্যমে বলেন, এখন থেকে আর কেউ এসকর্ট সুবিধা পাবেন না। সবাইকে এক লেভেলে আনা হয়েছে। সুবিধা নিতে হলে অন পেমেন্টে যেতে হবে।
পুলিশ জানায়, কূটনৈতিক এলাকার দূতাবাস থেকে কোনো দেশের কূটনীতিকরা যখন জরুরি কাজে অন্য কোথাও যেতেন তখন বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ‘পুলিশ এসকট’ দেওয়া হত তাদের। তবে এসব রাষ্ট্রদূতরা পরবর্তিতে যদি এই সুবিধা পেতে চান তাহলে পররাষ্ট্র মন্ত্রলয়ে আবেদন করে তাদের অনুমতি সাপেক্ষে সেটা পেতে পারেন তারা।
হঠাৎ তাদের এসকট সুবিধা প্রত্যাহারের কারণ জানতে চাইলে পুলিশ জানায়, ঢাকায় কূটনৈতিক জোনে ৫৩টি দেশ রয়েছে। প্রতিটি দেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দেখভাল করতে হয়। এতে অনেক ‘ফোর্স’ মোতায়েন রয়েছে। এর বাইরে কোনো বিশেষ দেশের জন্য আলাদা করে ফোর্স দেওয়ার মতো বাড়তি পুলিশ নেই।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিশেষ এসকর্টের শুধু পুলিশ সদস্যই নয় বাড়তি গাড়িসহ আরো অনেক সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়। শুধু এই চারটি দেশ নয়, সব দেশের কূটনিতিকরা যদি এই বাড়তি সুবিধা চান তাহলে সেটা দেওয়া সম্ভব নয়।