Dhaka বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার পদ্ধতি জানালেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সড়ক পরিবহন, সেতু ও রেলপথ মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পদ্ধতিতে অমূল পরিবর্তন করা হবে। এরমূল কাজ হবে প্রশিক্ষণ এবং তারজন্য যেসব আনুসঙ্গিক কমিটি আছে সেগুলো বাদ দেয়া হবে। আর ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে লাইসেন্স নিতে হলে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরে জাতীয় সড়ক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন তিনি। ‘মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি, কমবে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নবম বারের মতো এবার পালিত হচ্ছে দিবসটি।

তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পদ্ধতিতে অমূল পরিবর্তন করা হবে। এরমূল কাজ হবে প্রশিক্ষণ এবং তারজন্য যেসব আনুসঙ্গিক কমিটি আছে সেগুলো বাদ দেয়া হবে। আর ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে লাইসেন্স নিতে হলে। পাশাপশি প্রশিক্ষণ ভাতাও দেয়া হবে। সড়ককে নিরাপদ ও যানজটমুক্ত করতে হলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক লাগবে।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আমাদের সড়কে এইযে দুর্ঘটনা এবং যানজট হয় এগুলোর আসল কারণটা কী? এটা আমরা কিন্তু সবাই জানি। যানজট এবং দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ড্রাইভাররা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না। সড়ককে নিরাপদ ও যানজট মুক্ত করতে হলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ড্রাইভার হতে হবে। এজন্য আমরা ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার যে পদ্ধতি এটাকে আমূল পরিবর্তন করছি। এখন যে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে এটার মূল হবে প্রশিক্ষণ। বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার একটা কমিটি আছে, আমরা সেই কমিটি বাদ দিচ্ছি।

তাহলে এখন আপনারা কীভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, অন্য দেশে যেভাবে মানুষ লাইসেন্স পায়। লাইসেন্স পাওয়ার প্রথম ও পূর্ব শর্ত হচ্ছে আপনাকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। এজন্য আমরা বলেছি যে সামনে লাইসেন্স পেতে হলে আপনাকে ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

বিআরটিএকে নিয়ন্ত্রণমূলক সংস্থা থেকে সেবামূলক সংস্থায় পরিণত করতে চাই মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, আমরা মোটামুটিভাবে বেশিরভাগ কাজ বিআরটি থেকে হস্তান্তর করে ড্রাইভিং ইনস্টিটিউটে দিয়ে দেবো। সুতরাং বিআরটিএর যে একটা নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতা, সেটা থাকবে না।

সড়ক দুর্ঘটনার বেশিরভাগই মোটরসাইকেলে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু মোটরসাইকেলের ব্যবহার বাড়ছে, সেহেতু এই দুর্ঘটনার হার এবং মৃত্যুর হারও বাড়ছে। আমাদের হেলমেটের ব্যবহার বাড়াতে হবে। যেসব সড়কে নির্মাণকাজ চলছে এবং যাত্রীদের ভোগান্তি হচ্ছে- সেসব এলাকায় আমরা ১০ হাজার হেলমেট দেবো। আশা করবো এর মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি অনেকটাই কমে যাবে।

ফাওজুল কবির আরও বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা (কমাতে না পারা) আমাদের জন্য একটা ব্যর্থতা। এই সংখ্যাটা কিন্তু বেশ বড়। বাংলাদেশে প্রতিদিন ১৫টি করে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, এতে নিহত হচ্ছেন গড়ে ২৭ জন। এটা একটা গ্রিন স্ট্যাটিসটিক্স। এটা আমরা কোনো অবস্থাতেই চলতে দিতে পারি না। সাম্প্রতিককালে মোটরসাইকেল ব্যবহারের বাড়ার কারণে এই দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও বেড়েছে। দুর্ঘটনায় যখন একটা পরিবারের আয় উপার্জনের মানুষটি চলে যায় তখন তো পরিবারটি নিঃশ্ব হয়ে যায়। এজন্যই সড়ক আইনে পরিবারকে ৫ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়ার একটা আইনি বিধান আছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এটা পরিবার পায় না। আমরা বিআরটিএকে বলছি যে, আমরা একটা টার্গেট দেবো যে এই সময়ের মধ্যে এত শতাংশ লোকের পরিবারকে সহায়তা দিতে হবে।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার স্থানগুলো চিহ্নিত করে এগুলো যদি এলাইনমেন্টের সমস্যা থাকে সেই সমস্যা আমরা দূর করতে চেষ্টা করবো। সতর্কতামূলক যে চিহ্নগুলো সেগুলো আমরা দেবো। পুলিশের জন্য এই প্রকল্পের আওতায় কিছু যানবাহন দেওয়া হবে। নিয়মিতভাবে সড়কে যাতে হাইওয়ে পুলিশের প্রতিনিধিরা নিয়ন্ত্রণহীন গাড়িগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমরা বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের আওতায় অ্যাম্বুলেন্স কিনছি, যেগুলো হাইওয়েতে থাকবে। যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলা দ্রুত আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়।

সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান নিয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জন্য এক ধরনের গ্লানি ও ব্যর্থতা। ২০১৫ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে গড়ে ২৭ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হন।

উপদেষ্টার মতে, সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনাও বেড়েছে।

দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তারা তা পান না।

উপদেষ্টা বলেন, বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণের টাকা পায়।

সড়ক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, সড়ক নিরাপত্তা শুধু সড়ক বিভাগের দায়িত্ব নয়, বরং এটি করতে হবে সকল সংস্থার সমন্বয়ে।

একই অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মোহাম্মদ খোদা বকশ চৌধুরীও বক্তব্য রাখেন।

প্রযুক্তি আন্তর্জাতিক। গাড়ি একই রকম কিন্তু চালককে নিয়ম জানতে হবে, তিনি কিভাবে গাড়ি চালাবেন। দুর্ভাগ্য হলো তাদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী শিক্ষা দিতে পারিনি আমরা। আধুনিক ড্রাইভিং স্কুল তৈরি করে চালকদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

মালিক এবং শ্রমিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি সড়ককে নিরাপদ রাখার উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানান।

তিনি আরও বলেন, সবচে বেশি নিহত হয় সড়ক দুর্ঘটনায়। এতো সমস্যার মধ্যেও চালকরা কিভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন সেটিই বিস্ময়কর। দুর্ঘটনা শুধু চালকদের ভুলের জন্যই হয় না।

তিনি বলেন, মালিক এবং শ্রমিক সমিতি অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। আরও উদ্যোগী হন। উপদেষ্টাকে অনুরোধ সড়কে যে শৃঙ্খলা এনেছেন এর পাশাপাশি থ্রি হুইলারকে একিভূত করলে সড়কে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

রাজধানীর হাতিরঝিলের সড়ক ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেতু সচিব মো. আবদুর রউফ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, বিআরটিএ চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলমসহ অনেকে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিরসরাইয়ে ২০৯ কোটি টাকায় হবে অ্যাক্সেস সড়ক

ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার পদ্ধতি জানালেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৭:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সড়ক পরিবহন, সেতু ও রেলপথ মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পদ্ধতিতে অমূল পরিবর্তন করা হবে। এরমূল কাজ হবে প্রশিক্ষণ এবং তারজন্য যেসব আনুসঙ্গিক কমিটি আছে সেগুলো বাদ দেয়া হবে। আর ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে লাইসেন্স নিতে হলে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরে জাতীয় সড়ক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন তিনি। ‘মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি, কমবে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নবম বারের মতো এবার পালিত হচ্ছে দিবসটি।

তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পদ্ধতিতে অমূল পরিবর্তন করা হবে। এরমূল কাজ হবে প্রশিক্ষণ এবং তারজন্য যেসব আনুসঙ্গিক কমিটি আছে সেগুলো বাদ দেয়া হবে। আর ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে লাইসেন্স নিতে হলে। পাশাপশি প্রশিক্ষণ ভাতাও দেয়া হবে। সড়ককে নিরাপদ ও যানজটমুক্ত করতে হলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক লাগবে।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আমাদের সড়কে এইযে দুর্ঘটনা এবং যানজট হয় এগুলোর আসল কারণটা কী? এটা আমরা কিন্তু সবাই জানি। যানজট এবং দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ড্রাইভাররা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না। সড়ককে নিরাপদ ও যানজট মুক্ত করতে হলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ড্রাইভার হতে হবে। এজন্য আমরা ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার যে পদ্ধতি এটাকে আমূল পরিবর্তন করছি। এখন যে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে এটার মূল হবে প্রশিক্ষণ। বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার একটা কমিটি আছে, আমরা সেই কমিটি বাদ দিচ্ছি।

তাহলে এখন আপনারা কীভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, অন্য দেশে যেভাবে মানুষ লাইসেন্স পায়। লাইসেন্স পাওয়ার প্রথম ও পূর্ব শর্ত হচ্ছে আপনাকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। এজন্য আমরা বলেছি যে সামনে লাইসেন্স পেতে হলে আপনাকে ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

বিআরটিএকে নিয়ন্ত্রণমূলক সংস্থা থেকে সেবামূলক সংস্থায় পরিণত করতে চাই মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, আমরা মোটামুটিভাবে বেশিরভাগ কাজ বিআরটি থেকে হস্তান্তর করে ড্রাইভিং ইনস্টিটিউটে দিয়ে দেবো। সুতরাং বিআরটিএর যে একটা নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতা, সেটা থাকবে না।

সড়ক দুর্ঘটনার বেশিরভাগই মোটরসাইকেলে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু মোটরসাইকেলের ব্যবহার বাড়ছে, সেহেতু এই দুর্ঘটনার হার এবং মৃত্যুর হারও বাড়ছে। আমাদের হেলমেটের ব্যবহার বাড়াতে হবে। যেসব সড়কে নির্মাণকাজ চলছে এবং যাত্রীদের ভোগান্তি হচ্ছে- সেসব এলাকায় আমরা ১০ হাজার হেলমেট দেবো। আশা করবো এর মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি অনেকটাই কমে যাবে।

ফাওজুল কবির আরও বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা (কমাতে না পারা) আমাদের জন্য একটা ব্যর্থতা। এই সংখ্যাটা কিন্তু বেশ বড়। বাংলাদেশে প্রতিদিন ১৫টি করে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, এতে নিহত হচ্ছেন গড়ে ২৭ জন। এটা একটা গ্রিন স্ট্যাটিসটিক্স। এটা আমরা কোনো অবস্থাতেই চলতে দিতে পারি না। সাম্প্রতিককালে মোটরসাইকেল ব্যবহারের বাড়ার কারণে এই দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও বেড়েছে। দুর্ঘটনায় যখন একটা পরিবারের আয় উপার্জনের মানুষটি চলে যায় তখন তো পরিবারটি নিঃশ্ব হয়ে যায়। এজন্যই সড়ক আইনে পরিবারকে ৫ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়ার একটা আইনি বিধান আছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এটা পরিবার পায় না। আমরা বিআরটিএকে বলছি যে, আমরা একটা টার্গেট দেবো যে এই সময়ের মধ্যে এত শতাংশ লোকের পরিবারকে সহায়তা দিতে হবে।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার স্থানগুলো চিহ্নিত করে এগুলো যদি এলাইনমেন্টের সমস্যা থাকে সেই সমস্যা আমরা দূর করতে চেষ্টা করবো। সতর্কতামূলক যে চিহ্নগুলো সেগুলো আমরা দেবো। পুলিশের জন্য এই প্রকল্পের আওতায় কিছু যানবাহন দেওয়া হবে। নিয়মিতভাবে সড়কে যাতে হাইওয়ে পুলিশের প্রতিনিধিরা নিয়ন্ত্রণহীন গাড়িগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমরা বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের আওতায় অ্যাম্বুলেন্স কিনছি, যেগুলো হাইওয়েতে থাকবে। যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলা দ্রুত আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়।

সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান নিয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জন্য এক ধরনের গ্লানি ও ব্যর্থতা। ২০১৫ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে গড়ে ২৭ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হন।

উপদেষ্টার মতে, সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনাও বেড়েছে।

দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তারা তা পান না।

উপদেষ্টা বলেন, বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণের টাকা পায়।

সড়ক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, সড়ক নিরাপত্তা শুধু সড়ক বিভাগের দায়িত্ব নয়, বরং এটি করতে হবে সকল সংস্থার সমন্বয়ে।

একই অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মোহাম্মদ খোদা বকশ চৌধুরীও বক্তব্য রাখেন।

প্রযুক্তি আন্তর্জাতিক। গাড়ি একই রকম কিন্তু চালককে নিয়ম জানতে হবে, তিনি কিভাবে গাড়ি চালাবেন। দুর্ভাগ্য হলো তাদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী শিক্ষা দিতে পারিনি আমরা। আধুনিক ড্রাইভিং স্কুল তৈরি করে চালকদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

মালিক এবং শ্রমিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি সড়ককে নিরাপদ রাখার উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানান।

তিনি আরও বলেন, সবচে বেশি নিহত হয় সড়ক দুর্ঘটনায়। এতো সমস্যার মধ্যেও চালকরা কিভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন সেটিই বিস্ময়কর। দুর্ঘটনা শুধু চালকদের ভুলের জন্যই হয় না।

তিনি বলেন, মালিক এবং শ্রমিক সমিতি অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। আরও উদ্যোগী হন। উপদেষ্টাকে অনুরোধ সড়কে যে শৃঙ্খলা এনেছেন এর পাশাপাশি থ্রি হুইলারকে একিভূত করলে সড়কে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

রাজধানীর হাতিরঝিলের সড়ক ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেতু সচিব মো. আবদুর রউফ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, বিআরটিএ চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলমসহ অনেকে।