Dhaka মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তিন দিনের চিরুনি অভিযান শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে তিন দিনব্যাপী বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) থেকে ডিএসসিসির ২৫টি ওয়ার্ডে এ চিরুনি অভিযান শুরু করা হয়। ডিএসসিসির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বলদা গার্ডেন এলাকা থেকে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।

অভিযানের প্রথম দিনে বেশ কিছু বাড়ি ও স্থাপনার ভেতরে ও সীমানার অভ্যন্তরে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। পরে প্রতিটি বাড়ি ও স্থাপনার মালিকদের সতর্ক করে ডিএসসিসির অভিযান পরিচালনা দল। এ সময় ২৪৩ টিপু সুলতান রোডের একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে এডিশ মশার লার্ভা পাওয়ায় ভবনটির মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসব এলাকায় দুপুর ১টা পর্যন্ত লার্ভা সাইডিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানানো হয়।

আগে প্রতি ওয়ার্ডে এডিস মশা নিধনে সকালে ৩ জন এবং বিকেলে ৩ জন মশক নিধন কর্মী কাজ করতেন। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়াতে এখন থেকে ৭ জন সকালে এবং ৬ জন বিকেলে মশা নিধনের কাজ করবেন বলে জানানো হয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে।

এ সময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছেন সেখান থেকে রোগীদের বাসার ঠিকানা নিয়ে পরবর্তীতে আমরা গিয়ে দেখি কোথাও এডিস মশার উৎস আছে কি না। যদি থাকে তাহলে আমরা রোগীসহ এলাকাবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে আসি। মশা কোনো বর্ডার মানে না, তাই এই ক্ষেত্রে আমাদেরই সচেতন হতে হবে।

এডিস মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশন একসঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা যায় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ দুইটি আলাদা সিটি করপোরেশন এবং তাদের প্রশাসনিক কার্যক্রমও আলাদা। তবে এডিস মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশন সমানভাবে কাজ করছে। আমরা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যে সব কর্মসূচি হাতে নিয়েছি সেগুলো আমরা উত্তর সিটি করপোরেশনকে জানিয়ে দেবো। এজন্য পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আমরা আমাদের এডিস মশা নিধনে চিরুনি অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করছি এবং লিফলেট বিতরণ করে মানুষকে সচেতন করছি।

তিনি বলেন, আমরা নগরবাসীকে বলতে চাই, কাজ শেষে পানি যেন এক দিনের বেশি জমিয়ে না রাখা হয়। প্রতিদিনের পানি প্রতিদিন পরিষ্কার করলে এডিস মশার লার্ভা বংশবিস্তার করতে পারে না। এ বিষয়ে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। এছাড়া ডেঙ্গু প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।

এর আগে ডিএসসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির জানিয়েছিলেন, সার্ভেতে ডিএসসিসির কিছু ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই মোতাবেক এডিস মশার উৎস নির্মূলের লক্ষ্যে ৪ থেকে ৬ জুলাই চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। কর্মসূচিতে প্রতিদিন সকালে ১৩ জন এবং বিকেলে ১৩ জন মশক নিধন কর্মী ব্যাপকভাবে লার্ভিসাইডিং ও অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। সেইসঙ্গে এডিস মশার উৎসগুলো নির্মূলে বিশেষ কার্যক্রমও পরিচালনা করা হবে। এ ব্যাপারে জনগণকে আরও সচেতন করে তুলতে মাইকিং করতে কাউন্সিলরদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ডিএসসিসির ২, ৩, ৪, ৬, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৫, ১৯, ২২, ২৩, ২৬, ৩০, ৩৪, ৩৬, ৪১, ৪৪ ৪৫ ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে এ বিশেষ মশক নিধন অভিযান চালানো হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ৫২, ৫৩, ৫৪ ও ৬২ নম্বর ওয়ার্ডেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ৫ জোনের কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সরকার, ডিভিশনাল এস্টেট অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকার মো. সফি উল্লাহ, ৪১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারওয়ার হাসান আলো ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. ফজলে শামশুল কবির।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তিন দিনের চিরুনি অভিযান শুরু

প্রকাশের সময় : ০২:০৩:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে তিন দিনব্যাপী বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) থেকে ডিএসসিসির ২৫টি ওয়ার্ডে এ চিরুনি অভিযান শুরু করা হয়। ডিএসসিসির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বলদা গার্ডেন এলাকা থেকে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।

অভিযানের প্রথম দিনে বেশ কিছু বাড়ি ও স্থাপনার ভেতরে ও সীমানার অভ্যন্তরে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। পরে প্রতিটি বাড়ি ও স্থাপনার মালিকদের সতর্ক করে ডিএসসিসির অভিযান পরিচালনা দল। এ সময় ২৪৩ টিপু সুলতান রোডের একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে এডিশ মশার লার্ভা পাওয়ায় ভবনটির মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসব এলাকায় দুপুর ১টা পর্যন্ত লার্ভা সাইডিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানানো হয়।

আগে প্রতি ওয়ার্ডে এডিস মশা নিধনে সকালে ৩ জন এবং বিকেলে ৩ জন মশক নিধন কর্মী কাজ করতেন। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়াতে এখন থেকে ৭ জন সকালে এবং ৬ জন বিকেলে মশা নিধনের কাজ করবেন বলে জানানো হয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে।

এ সময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছেন সেখান থেকে রোগীদের বাসার ঠিকানা নিয়ে পরবর্তীতে আমরা গিয়ে দেখি কোথাও এডিস মশার উৎস আছে কি না। যদি থাকে তাহলে আমরা রোগীসহ এলাকাবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে আসি। মশা কোনো বর্ডার মানে না, তাই এই ক্ষেত্রে আমাদেরই সচেতন হতে হবে।

এডিস মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশন একসঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা যায় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ দুইটি আলাদা সিটি করপোরেশন এবং তাদের প্রশাসনিক কার্যক্রমও আলাদা। তবে এডিস মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশন সমানভাবে কাজ করছে। আমরা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যে সব কর্মসূচি হাতে নিয়েছি সেগুলো আমরা উত্তর সিটি করপোরেশনকে জানিয়ে দেবো। এজন্য পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আমরা আমাদের এডিস মশা নিধনে চিরুনি অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করছি এবং লিফলেট বিতরণ করে মানুষকে সচেতন করছি।

তিনি বলেন, আমরা নগরবাসীকে বলতে চাই, কাজ শেষে পানি যেন এক দিনের বেশি জমিয়ে না রাখা হয়। প্রতিদিনের পানি প্রতিদিন পরিষ্কার করলে এডিস মশার লার্ভা বংশবিস্তার করতে পারে না। এ বিষয়ে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। এছাড়া ডেঙ্গু প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।

এর আগে ডিএসসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির জানিয়েছিলেন, সার্ভেতে ডিএসসিসির কিছু ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই মোতাবেক এডিস মশার উৎস নির্মূলের লক্ষ্যে ৪ থেকে ৬ জুলাই চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। কর্মসূচিতে প্রতিদিন সকালে ১৩ জন এবং বিকেলে ১৩ জন মশক নিধন কর্মী ব্যাপকভাবে লার্ভিসাইডিং ও অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। সেইসঙ্গে এডিস মশার উৎসগুলো নির্মূলে বিশেষ কার্যক্রমও পরিচালনা করা হবে। এ ব্যাপারে জনগণকে আরও সচেতন করে তুলতে মাইকিং করতে কাউন্সিলরদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ডিএসসিসির ২, ৩, ৪, ৬, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৫, ১৯, ২২, ২৩, ২৬, ৩০, ৩৪, ৩৬, ৪১, ৪৪ ৪৫ ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে এ বিশেষ মশক নিধন অভিযান চালানো হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ৫২, ৫৩, ৫৪ ও ৬২ নম্বর ওয়ার্ডেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ৫ জোনের কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সরকার, ডিভিশনাল এস্টেট অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকার মো. সফি উল্লাহ, ৪১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারওয়ার হাসান আলো ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. ফজলে শামশুল কবির।