নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা চূড়ান্ত করেছে কমিশন। আগামী ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) নবম কমিশন সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশিনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সভা শুরু হয় সকাল ১১ টায়। এসময় এতে চার নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্ট বলেছেন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে রোজার আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য চিঠি দিয়েছেন। আমরা সেটাই আজকের মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইতিমধ্যে বলেছেন, ভোটের তারিখের দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। এই হিসেবে আপনারা ধরেই নিতে পারেন ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা হবে এমনটা বলা যাবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবো আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, না।
তিনি বলেন, প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন। তাদের ব্যালট পেপারে শুধু প্রতীক থাকবে। প্রার্থীর নাম থাকবে না।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, প্রবাসীদের কাছে সিম্বল ব্যালট (প্রতীক সম্বলিত) যাবে, যাতে সময় কম লাগে। প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পরে সিম্বল ব্যালটে ভোট দেবেন। ইসিতে এসে পোস্ট অফিস ব্যালট নিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে নিবন্ধন করে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর তারা অনলাইনে প্রার্থীর তালিকা দেখতে পারবেন। সেই অনুযায়ী তারা পছন্দের প্রার্থী দেখে ব্যালটে থাকা সেই প্রার্থীর প্রতীকে ভোট দেবেন।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রবাসীদের ভোট নিশ্চিত করতে চাই। মাধ্যমটা হবে পোস্টাল ব্যালট। এবার তিনভাবে পোস্টাল ব্যালটে ভোট হবে। যারা প্রবাসে থাকেন, কারাগারে থাকেন ও ভোটের দায়িত্বে থাকেন; তাদের জন্য এই ব্যবস্থা থাকবে। এজন্য আগেই নিবন্ধন করতে হবে। পোস্টাল ব্যালটের ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর থেকে প্রচার ও ভোটার-শিক্ষণের কাজ চলবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেষ মুহূর্তে প্রার্থী পরিবর্তন হলে আদালতের আদেশে, সেখানে পোস্টাল ব্যালট হবে না। তবে আইনি কার্যক্রম যেন দ্রুত হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, এটা ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি। আনা-নেওয়া করতে ব্যালট প্রতি ৫০০ টাকা, এরপর ছাপানোর খরচও আছে। আবার নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য ৪৮ টাকার প্রকল্প নেওয়া হবে। প্রতি এক লাখ ভেটারের জন্য সবমিলিয়ে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা লাগবে।
তিনি বলেন, ভোটার তালিকা আইনে সামান্য সংশোধন করেছিলাম। এজন্য বছরের মাঝামাঝিতে ভোটার করে নিতে পারব। এজন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ১৮ বছর পূর্ণ করবে তাদের তালিকায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে। এতে ১৮ থেকে ২০ লাখ তরুণ ভোটার যোগ হতে পারে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫) আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়ে সানাউল্লাহ বলেন, আমাদের তিনটি বিষয় ছিলো। রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫) ও বিদেশ থেকে পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান এবং দেশের ভিতরেও পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের প্রক্রিয়া।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, এর ভিতরের রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫ রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫) অনেক দূর এগিয়েছে। সভা মুলতবি হওয়ায় আরপিও নিয়ে আগামী সপ্তাহে বসে চূড়ান্ত করা হবে।