নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দক্ষ ছিলেন বলে ডিবির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে ‘জ্বীন’ নামে ডাকতেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) আদালতে দেওয়া জবানবন্দির অনুলিপি হাতে এসেছে।
৫ পৃষ্ঠার জবানবন্দির এক জায়গায় তিনি বলেছেন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের গভীর সম্পর্ক ছিল। আসাদুজ্জামান খান কামাল হারুনকে জিন নামে ডাকতেন। তিনি হারুনকে খুব কর্মতৎপর এবং সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রাজনৈতিকভাবে খুব কার্যকর মনে করতেন।
জবানবন্দিতে চৌধুরী মামুন বলেন, কোর কমিটির একটি বৈঠকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিএফআই এবং ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদকে আটক করার দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
পরবর্তী সময়ে তাদেরকে আটক করে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয় এবং সরকারের সঙ্গে আপস করার জন্য বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতনসহ চাপ প্রয়োগ করা হয়। তাদের আত্মীয়-স্বজনকেও নিয়ে আসা হয়। সমন্বয়কদেরকে আন্দোলন প্রত্যাহার করার জন্য টেলিভিশনে বিবৃতি প্রদানে বাধ্য করা হয়।
কোর কমিটির মিটিংয়ে তাদেরকে আটকের বিষয়ে আমি বিরোধিতা করি। কিন্তু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে আটক করা হয়। ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামালের গভীর সম্পর্ক ছিল। আসাদুজ্জামান খান কামাল তাকে জিন নামে ডাকতেন। তিনি হারুনকে খুব কর্মতৎপর এবং সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রাজনৈতিকভাবে খুব কার্যকর মনে করতেন।
এ ছাড়া, স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় অফিসিয়াল মিটিং বহির্ভূত হিসেবে কতিপয় পুলিশ অফিসার, ওসি, এনটিএমসির ডিজি মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, ডিজিএফআই, এনএসআইয়ের ডিজি ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা মন্ত্রীর বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন।
জবানবন্দিতে ২০১৮-এর ভোটে অনিয়ম, গুম, খুন ও জুলাই আন্দোলন নিয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন সাবেক এই পুলিশ প্রধান।
আদালতে সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশ করার শর্তে সম্প্রতি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন গ্রহণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্টাইব্যুনাল।