চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
পেশাকে সবকিছুর ওপর স্থান দিতে ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ডাক্তারদের কোনো দল থাকতে পারে না। সবার ওপরে তারা ডাক্তার। তাদের মানবিক হতে হবে। সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সৎ থাকতে হবে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সম্মেলন কক্ষে কার্যনির্বাহী কমিটি, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
দক্ষ নার্সদের বিদেশে প্রচুর কর্মসংস্থান আছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের নার্সদের বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষভাবে তৈরি করতে হবে। ইংরেজি ভাষায় তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। জাপানে প্রচুর নার্সের চাহিদা রয়েছে। তাদের জাপানি ভাষা শিখতে হবে। এজন্য আমাদের কেয়ার গিভার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
মেডিকেলে শিক্ষায় কোয়ালিটির ব্যাপারে কোনো ছাড় নয় জানিয়ে নূরজাহান বেগম বলেন, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে কোয়ালিটি টিচিং দরকার। বর্তমান সরকার মেডিকেলে শিক্ষায় কোয়ালিটির ব্যাপারে কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। যারা কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে পারবে না, তাদের ব্যাপারে সরকার কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে।
চট্টগ্রামে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা খুবই অপ্রতুল মন্তব্য করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো ঢাকাকেন্দ্রিক। সরকারি পর্যায়ে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল চট্টগ্রামের মানুষ। এটা চট্টগ্রামবাসীর জন্য দুর্ভাগ্যজনক।
হার্টের রোগীদের রিংয়ের দাম এবং ক্যানসারের ওষুধসহ অনেক ওষুধের দাম কমানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত একটা অর্থনীতি নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সরকারের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারপরও আমরা অগ্রাধিকার অনুযায়ী সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা স্বাস্থ্য খাতে অনেক কাজ করে যাচ্ছি। হার্টের রোগীদের রিংয়ের দাম কমানো হয়েছে, ক্যান্সারের ওষুধসহ অনেক ওষুধের দাম কমানো হয়েছে।
এ সময় চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রমের বিষয়ে তাকে অবহিত করেন এবং হাসপাতালের গ্রান্ট ইন অ্যাইড খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে সহযোগিতা কামনা করেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও উপদেষ্টার একান্ত সচিব ড. মো. মনজুরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শেখ ফজলে রাব্বি, সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, ডেপুটি সিভিল সার্জন তৌহিদুল ইসলাম, হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডোনার) ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানা, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. এ টি এম রেজাউল করিম, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নূরুল হক, ডেন্টাল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর ডা. মো. কামরুল ইসলাম, নার্সিং কলেজের প্রিন্সিপাল স্মৃতি রাণী ঘোষ, নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল ঝিনু রানী দাশ প্রমুখ।