Dhaka শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে বিবাহ বিচ্ছেদে এগিয়ে নারীরা

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

কোন দম্পতির বিয়ের বয়স ৬ মাস, কারো ২ বছর আবার কারো ৫ বছরও পেরিয়েছে। অনেকের বিয়ের বয়স এক দশক পেরিয়ে হয়েছেন সন্তানের অভিভাবক। স্বামী-স্ত্রীর এমন সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে নিমিষেই। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে দিন দিন বেড়ে চলছে বিচ্ছেদের ঘটনা।

কয়েক বছর আগে এমন ঘটনা কম শোনা গেলেও ঠাকুরগাঁওয়ে এখন তা হয়ে উঠেছে নিত্যদিনের কর্মযজ্ঞ। প্রতিদিন গড়ে বিবাহ-বিচ্ছেদ হচ্ছে ৪টি। যার অন্যতম প্রধান কারণ পরকীয়া প্রেম। এছাড়াও সংসারে বনিবনা না হওয়া, প্রেম করে বিয়ে, যৌতুকসহ আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে।

জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় মোট কাজি রয়েছে ৬২ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮ মাসে জেলায় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে ১ হাজার ১০০টি। নারীর মাধ্যমে বিচ্ছেদ হয়েছে ৬০০টি, ছেলের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হয়েছে ৩০০টি, আর পারিবারিকভাবে বিচ্ছেদ হয়েছে ২০০টি।

স্থানীয় সমাজকর্মী আবু মহিউদ্দিন বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ থেকে প্রতিকারের জন্য সচেতনতা জরুরি। বর্তমান সমাজে পরকীয়ার কারণেই বেশিরভাগ সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে। পরিবারের যে প্রয়োজনীয়তা এসব সম্পর্কে সমাজের সকলকে অবগত হতে হবে। আর বিবাহ বিচ্ছেদ কমানোর জন্য ধর্মীয় মূল্যবোধ বৃদ্ধি করতে হবে।

কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের জন্য অনেকগুলো কারণ থাকে। আমি গত ১ মাসে যতগুলো তালাক করিয়েছি বেশিরভাগই মেয়ের পক্ষ থেকে। ছেলের পক্ষ থেকে বা উভয় পক্ষ থেকে তালাক খুবই কম। আর মেয়ের পক্ষ থেকে বিচ্ছেদের অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেমন প্রধান কারণ পরকীয়া, বনিবনা না হওয়া, মেয়ের মা ও বোনের কুমন্ত্রণা, যৌতুকের জন্য নির্যাতন। বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদ অনেক বেড়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করি একটি বিচ্ছেদের আগে যেন কোনোভাবে সেটাকে আটকানো যায়, কিন্তু তারপরও তা সম্ভব হয় না। আর একটি বিচ্ছেদের জন্য অনেকগুলো মানুষকে সেটার কুফল ভোগ করতে হয়।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন বলেন, কোর্টে এখন যতগুলো বিচ্ছেদ আসে তার মধ্যে মেয়ের পক্ষ থেকে বেশি আসে। সংসারে স্বামী-স্ত্রী মিল না হওয়ার কারণেই তালাক হচ্ছে। তবে আমি মনে করি সংসার জীবনে সমস্যাগুলো সমাধান করে একে অপরের ভুলত্রুটি মেনে নিয়ে চলাই জীবন।

জেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার হেলাল উদ্দিন বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাক সাধারণত তিন প্রকার। ছেলের পক্ষ থেকে তালাক, মেয়ের পক্ষ থেকে তালাক, উভয় পক্ষ থেকে তালাক। এ বছরে মেয়ের পক্ষ থেকে তালাক বেশি হয়েছে। পারিবারিকভাবে তালাকের সংখ্যা খুবই কম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়ক বেহাল, দুর্ভোগে স্থানীয়রা

ঠাকুরগাঁওয়ে বিবাহ বিচ্ছেদে এগিয়ে নারীরা

প্রকাশের সময় : ০৯:২৫:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

কোন দম্পতির বিয়ের বয়স ৬ মাস, কারো ২ বছর আবার কারো ৫ বছরও পেরিয়েছে। অনেকের বিয়ের বয়স এক দশক পেরিয়ে হয়েছেন সন্তানের অভিভাবক। স্বামী-স্ত্রীর এমন সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে নিমিষেই। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে দিন দিন বেড়ে চলছে বিচ্ছেদের ঘটনা।

কয়েক বছর আগে এমন ঘটনা কম শোনা গেলেও ঠাকুরগাঁওয়ে এখন তা হয়ে উঠেছে নিত্যদিনের কর্মযজ্ঞ। প্রতিদিন গড়ে বিবাহ-বিচ্ছেদ হচ্ছে ৪টি। যার অন্যতম প্রধান কারণ পরকীয়া প্রেম। এছাড়াও সংসারে বনিবনা না হওয়া, প্রেম করে বিয়ে, যৌতুকসহ আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে।

জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় মোট কাজি রয়েছে ৬২ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮ মাসে জেলায় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে ১ হাজার ১০০টি। নারীর মাধ্যমে বিচ্ছেদ হয়েছে ৬০০টি, ছেলের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হয়েছে ৩০০টি, আর পারিবারিকভাবে বিচ্ছেদ হয়েছে ২০০টি।

স্থানীয় সমাজকর্মী আবু মহিউদ্দিন বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ থেকে প্রতিকারের জন্য সচেতনতা জরুরি। বর্তমান সমাজে পরকীয়ার কারণেই বেশিরভাগ সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে। পরিবারের যে প্রয়োজনীয়তা এসব সম্পর্কে সমাজের সকলকে অবগত হতে হবে। আর বিবাহ বিচ্ছেদ কমানোর জন্য ধর্মীয় মূল্যবোধ বৃদ্ধি করতে হবে।

কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের জন্য অনেকগুলো কারণ থাকে। আমি গত ১ মাসে যতগুলো তালাক করিয়েছি বেশিরভাগই মেয়ের পক্ষ থেকে। ছেলের পক্ষ থেকে বা উভয় পক্ষ থেকে তালাক খুবই কম। আর মেয়ের পক্ষ থেকে বিচ্ছেদের অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেমন প্রধান কারণ পরকীয়া, বনিবনা না হওয়া, মেয়ের মা ও বোনের কুমন্ত্রণা, যৌতুকের জন্য নির্যাতন। বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদ অনেক বেড়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করি একটি বিচ্ছেদের আগে যেন কোনোভাবে সেটাকে আটকানো যায়, কিন্তু তারপরও তা সম্ভব হয় না। আর একটি বিচ্ছেদের জন্য অনেকগুলো মানুষকে সেটার কুফল ভোগ করতে হয়।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন বলেন, কোর্টে এখন যতগুলো বিচ্ছেদ আসে তার মধ্যে মেয়ের পক্ষ থেকে বেশি আসে। সংসারে স্বামী-স্ত্রী মিল না হওয়ার কারণেই তালাক হচ্ছে। তবে আমি মনে করি সংসার জীবনে সমস্যাগুলো সমাধান করে একে অপরের ভুলত্রুটি মেনে নিয়ে চলাই জীবন।

জেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার হেলাল উদ্দিন বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাক সাধারণত তিন প্রকার। ছেলের পক্ষ থেকে তালাক, মেয়ের পক্ষ থেকে তালাক, উভয় পক্ষ থেকে তালাক। এ বছরে মেয়ের পক্ষ থেকে তালাক বেশি হয়েছে। পারিবারিকভাবে তালাকের সংখ্যা খুবই কম।