Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রেনে স্বস্তি নিয়ে ফিরছেন মানুষ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১২:৫৮:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
  • ২১৪ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদের ছুটি শেষে ষষ্ঠ দিনেও ঢাকা ফিরছেন কর্মজীবী মানুষজন। রাজধানীর ব্যস্ততম পয়েন্টগুলোতে সকাল থেকে ঢাকামুখী মানুষের চাপ দেখা যাচ্ছে। বিশেষত, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকামুখী সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করছে। সোমবার (২৪ এপ্রিল) অফিস আদালতে খুললেও অতিরিক্ত ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা গেছে যাত্রীদের চাপ।

সরেজমিন দেখা যায়, কমলাপুর রেলস্টেশনে বাড়িফেরা মানুষের ভিড়। প্লাটফর্মে ট্রেন থামতেই নামছেন বহু যাত্রী। পরিবারের সঙ্গে ঈদ শেষে এবার কাজে যোগ দেওয়ার পালা।

কথা হয় কিশোরগঞ্জ থেকে ফেরা বেসরকারি চাকরিজীবী মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন বাড়ি গিয়েছিলাম। সরকারি ছুটির পাশাপাশি অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছিলাম। সেটা শেষ করে আজ ঢাকা ফিরলাম।

তবে যাত্রাপথে কোনো ভোগান্তি হয়নি বলে জানান তিনি।

আরেক যাত্রী ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাবা মায়ের সঙ্গে বছরের এই ঈদের সময়টাতেই দেখা হয়, থাকা হয়। তাই ঈদের আগের দিন গিয়ে টানা ৪-৫ দিন থেকে এলাম।

টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনে ফিরেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী নূর মোহাম্মদ। বাস করেন রাজধানীর মিরপুরে। তিনি বলেন, ঈদের দুদিন আগেই অনলাইনে টিকিট কেটে বাড়ি গিয়েছিলাম। অফিস থেকে অতিরিক্ত ছুটি নেওয়াছিল। তাই আজ ফিরছি। ফেরার টিকিটও সহজে অনলাইন থেকে কিনতে পেরেছি। যাওয়া আসার পথে এবার কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।

পরিবারসহ ফিরেছেন চাকরিজীবী আবু বকর। তিনি বলেন, বাড়িতে যাওয়াই হয় ঈদের সময়। তাই ছুটি নিয়ে বেশিদিন থেকে এলাম।তবে এবারের ঈদযাত্রায় রেলে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।

পঞ্চগড় থেকে আসা এক যাত্রী মাহফুজুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরলাম। এই কয়েকদিন বাবা-মা ও পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটিয়েছি। সবাইকে ছেড়ে আবারও ঢাকায় ফিরতে হয়েছে, একটু খারাপ লাগছে।

পরিবার নিয়ে গ্রামে গিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন। তিনি বলেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। ঈদ করতে পরিবার নিয়ে গ্রামে গিয়েছিলাম। বাচ্চাদের স্কুল শুরু হবে আগামী সপ্তাহে। তাই আগেই চলে এলাম। যেন সবাই একটি বিশ্রাম নিতে পারি।

কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের যাত্রী রিফাত হোসেন বলেন, গ্রামের বাড়িতে ঈদ করে ঢাকায় ফিরলাম। টিকিট কাটতে কোনো অসুবিধা হয়নি। এবার ভালোই হয়েছে ট্রেনযাত্রা। ব্যবসার কাজে আবারও ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে আগামীকাল থেকেই।

এদিকে ঈদের ষষ্ঠ দিনেও অনেকে বাড়ি যাচ্ছেন। ঈদের আগে নানা ব্যস্ততায় বাড়ি যেতে না পারায় ঈদের পড়ে এখন বাড়ি যাচ্ছেন অনেকে। আশরাফুল নামে কাপড়ের দোকানের এক কর্মচারী বলেন, ঈদের দিন পর্যন্ত দোকানদারি করে পরিবারের জন্য কিছু কেনাকাটা ও দরকারি জিনিসপত্র নিতে নিতে দেরি হয়ে গেছে। তাই এখন বাড়ি যাচ্ছি। বাড়ি গিয়ে সবার সঙ্গে দেখা হবে, সময় কাটাবো, এটাই আনন্দ।

সিলেটের উদ্দেশে কমলাপুর স্টেশন ছাড়ার আগে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের যাত্রী হারুন উদ্দিন মামুন বলেন, ঈদের মৌসুমে এবারের মত সুন্দর ও শান্ত পরিবেশ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আগে দেখিনি। একটু নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য ট্রেনে ভ্রমণ করি। শুধু ঈদ নয়, এমন ঝামেলামুক্ত ট্রেন ভ্রমণ যেন সবসময় থাকে।

নীলসাগর এক্সপ্রেসে ঢাকা ফেরা যাত্রী শাহরিয়ার হোসেন বলেন, এবারের ঈদের দুটি যাত্রাই (আসা-যাওয়া) ট্রেনে। ট্রেনের সেবার মান বেড়েছে। তেমন কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।

আবার ফিরতি ট্রেনে অনেককে ঢাকা ছাড়তেও দেখা গেছে। মূলত ঈদের পর ছুটি নিয়ে তারা ঢাকা ছাড়ছেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) অধিকাংশ ট্রেনই যথাসময়ে ঢাকা ছেড়ে গেছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে দিনের প্রথম ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস যথাসময়ে ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশ্য প্ল্যাটফর্ম ছেড়েছে।

দ্বিতীয় ট্রেন উত্তরবঙ্গের নীল সাগর এক্সপ্রেস ৬টা ৪০ মিনিটে ঢাকা ছেড়েছে যথাসময়েই।

তবে দেড় ঘণ্টা দেরিতে স্টেশন ছেড়েছে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস। ৯টা ৪০ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকা ছেড়ে যায়।

সুন্দরবন এক্সপ্রেসে ঢাকা ছাড়ছেন শরিফুল ইসলাম নামে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী। তিনি বলেন, ঈদে বিশেষ ডিউটি থাকায় ছুটি পাইনি। এজন্য এখন ছুটিতে যশোর যাচ্ছি।

আরেক যাত্রী শামীম হোসেন বলেন, ঈদের আগে অনেক ভিড় থাকে। ট্রেনের টিকিট পাইনি, বাস ভাড়াও বেশি ছিলো। এজন্য এখন বাড়িতে যাচ্ছি।

কমলাপুর স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলছেন, আজও সকাল থেকে নির্ধারিত সময়ে ফিরছে ট্রেন। বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়েও যাচ্ছে সময়মতো। ট্রেনে এবারের ঈদযাত্রা খুবই স্বস্তিদায়ক হয়েছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার বলেন, এখনও ট্রেনে অনেকে ঢাকা ছাড়ছেন। কয়েকটি ট্রেন দেরিতে ছাড়লেও অধিকাংশ যথাসময়ে ঢাকা ছেড়ে গেছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

ট্রেনে স্বস্তি নিয়ে ফিরছেন মানুষ

প্রকাশের সময় : ১২:৫৮:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদের ছুটি শেষে ষষ্ঠ দিনেও ঢাকা ফিরছেন কর্মজীবী মানুষজন। রাজধানীর ব্যস্ততম পয়েন্টগুলোতে সকাল থেকে ঢাকামুখী মানুষের চাপ দেখা যাচ্ছে। বিশেষত, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকামুখী সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করছে। সোমবার (২৪ এপ্রিল) অফিস আদালতে খুললেও অতিরিক্ত ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা গেছে যাত্রীদের চাপ।

সরেজমিন দেখা যায়, কমলাপুর রেলস্টেশনে বাড়িফেরা মানুষের ভিড়। প্লাটফর্মে ট্রেন থামতেই নামছেন বহু যাত্রী। পরিবারের সঙ্গে ঈদ শেষে এবার কাজে যোগ দেওয়ার পালা।

কথা হয় কিশোরগঞ্জ থেকে ফেরা বেসরকারি চাকরিজীবী মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন বাড়ি গিয়েছিলাম। সরকারি ছুটির পাশাপাশি অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছিলাম। সেটা শেষ করে আজ ঢাকা ফিরলাম।

তবে যাত্রাপথে কোনো ভোগান্তি হয়নি বলে জানান তিনি।

আরেক যাত্রী ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাবা মায়ের সঙ্গে বছরের এই ঈদের সময়টাতেই দেখা হয়, থাকা হয়। তাই ঈদের আগের দিন গিয়ে টানা ৪-৫ দিন থেকে এলাম।

টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনে ফিরেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী নূর মোহাম্মদ। বাস করেন রাজধানীর মিরপুরে। তিনি বলেন, ঈদের দুদিন আগেই অনলাইনে টিকিট কেটে বাড়ি গিয়েছিলাম। অফিস থেকে অতিরিক্ত ছুটি নেওয়াছিল। তাই আজ ফিরছি। ফেরার টিকিটও সহজে অনলাইন থেকে কিনতে পেরেছি। যাওয়া আসার পথে এবার কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।

পরিবারসহ ফিরেছেন চাকরিজীবী আবু বকর। তিনি বলেন, বাড়িতে যাওয়াই হয় ঈদের সময়। তাই ছুটি নিয়ে বেশিদিন থেকে এলাম।তবে এবারের ঈদযাত্রায় রেলে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।

পঞ্চগড় থেকে আসা এক যাত্রী মাহফুজুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরলাম। এই কয়েকদিন বাবা-মা ও পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটিয়েছি। সবাইকে ছেড়ে আবারও ঢাকায় ফিরতে হয়েছে, একটু খারাপ লাগছে।

পরিবার নিয়ে গ্রামে গিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন। তিনি বলেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। ঈদ করতে পরিবার নিয়ে গ্রামে গিয়েছিলাম। বাচ্চাদের স্কুল শুরু হবে আগামী সপ্তাহে। তাই আগেই চলে এলাম। যেন সবাই একটি বিশ্রাম নিতে পারি।

কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের যাত্রী রিফাত হোসেন বলেন, গ্রামের বাড়িতে ঈদ করে ঢাকায় ফিরলাম। টিকিট কাটতে কোনো অসুবিধা হয়নি। এবার ভালোই হয়েছে ট্রেনযাত্রা। ব্যবসার কাজে আবারও ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে আগামীকাল থেকেই।

এদিকে ঈদের ষষ্ঠ দিনেও অনেকে বাড়ি যাচ্ছেন। ঈদের আগে নানা ব্যস্ততায় বাড়ি যেতে না পারায় ঈদের পড়ে এখন বাড়ি যাচ্ছেন অনেকে। আশরাফুল নামে কাপড়ের দোকানের এক কর্মচারী বলেন, ঈদের দিন পর্যন্ত দোকানদারি করে পরিবারের জন্য কিছু কেনাকাটা ও দরকারি জিনিসপত্র নিতে নিতে দেরি হয়ে গেছে। তাই এখন বাড়ি যাচ্ছি। বাড়ি গিয়ে সবার সঙ্গে দেখা হবে, সময় কাটাবো, এটাই আনন্দ।

সিলেটের উদ্দেশে কমলাপুর স্টেশন ছাড়ার আগে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের যাত্রী হারুন উদ্দিন মামুন বলেন, ঈদের মৌসুমে এবারের মত সুন্দর ও শান্ত পরিবেশ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আগে দেখিনি। একটু নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য ট্রেনে ভ্রমণ করি। শুধু ঈদ নয়, এমন ঝামেলামুক্ত ট্রেন ভ্রমণ যেন সবসময় থাকে।

নীলসাগর এক্সপ্রেসে ঢাকা ফেরা যাত্রী শাহরিয়ার হোসেন বলেন, এবারের ঈদের দুটি যাত্রাই (আসা-যাওয়া) ট্রেনে। ট্রেনের সেবার মান বেড়েছে। তেমন কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।

আবার ফিরতি ট্রেনে অনেককে ঢাকা ছাড়তেও দেখা গেছে। মূলত ঈদের পর ছুটি নিয়ে তারা ঢাকা ছাড়ছেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) অধিকাংশ ট্রেনই যথাসময়ে ঢাকা ছেড়ে গেছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে দিনের প্রথম ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস যথাসময়ে ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশ্য প্ল্যাটফর্ম ছেড়েছে।

দ্বিতীয় ট্রেন উত্তরবঙ্গের নীল সাগর এক্সপ্রেস ৬টা ৪০ মিনিটে ঢাকা ছেড়েছে যথাসময়েই।

তবে দেড় ঘণ্টা দেরিতে স্টেশন ছেড়েছে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস। ৯টা ৪০ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকা ছেড়ে যায়।

সুন্দরবন এক্সপ্রেসে ঢাকা ছাড়ছেন শরিফুল ইসলাম নামে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী। তিনি বলেন, ঈদে বিশেষ ডিউটি থাকায় ছুটি পাইনি। এজন্য এখন ছুটিতে যশোর যাচ্ছি।

আরেক যাত্রী শামীম হোসেন বলেন, ঈদের আগে অনেক ভিড় থাকে। ট্রেনের টিকিট পাইনি, বাস ভাড়াও বেশি ছিলো। এজন্য এখন বাড়িতে যাচ্ছি।

কমলাপুর স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলছেন, আজও সকাল থেকে নির্ধারিত সময়ে ফিরছে ট্রেন। বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়েও যাচ্ছে সময়মতো। ট্রেনে এবারের ঈদযাত্রা খুবই স্বস্তিদায়ক হয়েছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার বলেন, এখনও ট্রেনে অনেকে ঢাকা ছাড়ছেন। কয়েকটি ট্রেন দেরিতে ছাড়লেও অধিকাংশ যথাসময়ে ঢাকা ছেড়ে গেছে।