Dhaka রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টেস্টকে বিদায়ই বলে দিলেন কোহলি

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অনুরোধ রাখলেন না বিরাট কোহলি। নিজের সিদ্ধান্ত মতো টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিলেন। রোহিত শর্মার পথ ধরে এবার সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পথচলা থামালেন সাবেক এই অধিনায়ক।

সোমবার (১২ মে) আনুষ্ঠানিকভাবেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন ভারতীয় দলের কিংবদন্তি এই ব্যাটার। কোহলির টেস্ট অবসরের মধ্য দিয়ে ভারতের সাদা পোশাকের ক্রিকেটে গৌরবময় এক যুগের পরিসমাপ্তি ঘটলো।

সোমবার (১২ মে) সকালে সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে কোহলি বলেন, টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবার ব্যাগি ব্লু (ভারতের টেস্ট ক্যাপ) পরেছিলাম ১৪ বছর আগে। সত্যি বলতে আমি কখনও কল্পনাও করিনি এই ফরম্যাট আমাকে এমন এক সফরে নিয়ে যাবে। এটা আমাকে পরীক্ষায় ফেলেছে, গড়ে তুলেছে আর এমন সব শিক্ষা দিয়েছে যা সারাজীবন সঙ্গে থাকবে। সাদা জার্সিতে খেলার মধ্যে একটা গভীর ব্যক্তিগত অনুভূতি আছে। নিঃশব্দ পরিশ্রম, দীর্ঘ দিনগুলোর লড়াই, এমন সব ছোট ছোট মুহূর্ত যা কেউ দেখে না, কিন্তু মনের গভীরে চিরদিন থেকে যায়।

কোহলি আরও লেখেন, আমি যখন এই ফরম্যাট থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি, এটা সহজ নয়—তবে মনে হচ্ছে এটাই সঠিক সময়। আমি এই খেলায় আমার সবটুকু দিয়েছি। এটা আমাকে তার চেয়েও অনেক বেশি ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ এক হৃদয় নিয়ে সরে দাঁড়াচ্ছি এই খেলা থেকে। সতীর্থ এবং প্রত্যেকটি মানুষের জন্য যারা আমাকে এই যাত্রায় মূল্যবান অনুভব করিয়েছেন। আমি সব সময় হাসিমুখেই আমার টেস্ট ক্যারিয়ারকে স্মরণ করবো।

নিজের টেস্ট ক্যাপ নম্বর (২৬৯)কে হ্যাশট্যাগ দিয়ে সাইনিং অফ লিখে কোহলি জানান তৃপ্তির কথা, ‘আমি সর্বদা আমার টেস্ট ক্যারিয়ারের দিকে হাসিমুখে ফিরে তাকাব।’

ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচনা করা হয় কোহলিকে। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় কোহলির। ১২৩টি টেস্টে ৯ হাজার ২৩০ রান করেছেন। গড় ৪৬.৮৫। শতরান ৩০টি, অর্ধশতরান রয়েছে ৩১টি। লাল বলের ক্রিকেটে তিনি যে আর খেলতে ইচ্ছুক নন, এ কথা বিসিসিআইকে কদিন আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন কোহলি। কিন্তু বোর্ডের পক্ষ থেকে তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য। কোহলি তাতে রাজি হননি।

৩০ সেঞ্চুরিতে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ সফল টেস্ট ব্যাটার কোহলি। যেখানে সবার ওপরে শচীন টেন্ডুলকার (৫১), রাহুল দ্রাবিড় (৩৬) ও সুনীল গাভাস্কার (৩৪)। টেস্টে তার ডাবল সেঞ্চুরি ৭টি। যা কোনও ভারতীয় ব্যাটারের সর্বোচ্চ। অধিনায়ক হিসেবেও তার সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি ২০টি।

সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরের পর থেকেই টেস্ট থেকে সরে যাওয়ার কথা ভাবছিলেন কোহলি। ওই সফরে প্রথম টেস্টে শতরান করলেও বাকি সিরিজে নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন। কিন্তু ফর্মটা যেমনই হোক, বোর্ড চেয়েছিল ইংল্যান্ড সফরে তাকে রেখেই দল সাজাতে। কারণ, রোহিতের পর কোহলিকেও যদি আসন্ন এই সফরে না পাওয়া যায়, তাহলে ভারতীয় ব্যাটিং অনেকটাই অনভিজ্ঞ হয়ে পড়বে।

সেই কারণেই বোর্ডের পক্ষ থেকে কোহলিকে অনুরোধ করা হয়েছিল এখনই টেস্ট ক্রিকেট না ছাড়তে। কিন্তু কোহলি শেষ পর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকলেন। রোহিতের মতো তিনিও বিদায়ী টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর রোহিতের সঙ্গেই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। সে হিসেবে দুজনই এখন আর কেবল ওয়ানডে তথা একদিনের ক্রিকেট খেলবেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে কারাগারে যাওয়া সেই রিকশাচালক জামিন পেলেন

টেস্টকে বিদায়ই বলে দিলেন কোহলি

প্রকাশের সময় : ০২:৫৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অনুরোধ রাখলেন না বিরাট কোহলি। নিজের সিদ্ধান্ত মতো টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিলেন। রোহিত শর্মার পথ ধরে এবার সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পথচলা থামালেন সাবেক এই অধিনায়ক।

সোমবার (১২ মে) আনুষ্ঠানিকভাবেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন ভারতীয় দলের কিংবদন্তি এই ব্যাটার। কোহলির টেস্ট অবসরের মধ্য দিয়ে ভারতের সাদা পোশাকের ক্রিকেটে গৌরবময় এক যুগের পরিসমাপ্তি ঘটলো।

সোমবার (১২ মে) সকালে সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে কোহলি বলেন, টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবার ব্যাগি ব্লু (ভারতের টেস্ট ক্যাপ) পরেছিলাম ১৪ বছর আগে। সত্যি বলতে আমি কখনও কল্পনাও করিনি এই ফরম্যাট আমাকে এমন এক সফরে নিয়ে যাবে। এটা আমাকে পরীক্ষায় ফেলেছে, গড়ে তুলেছে আর এমন সব শিক্ষা দিয়েছে যা সারাজীবন সঙ্গে থাকবে। সাদা জার্সিতে খেলার মধ্যে একটা গভীর ব্যক্তিগত অনুভূতি আছে। নিঃশব্দ পরিশ্রম, দীর্ঘ দিনগুলোর লড়াই, এমন সব ছোট ছোট মুহূর্ত যা কেউ দেখে না, কিন্তু মনের গভীরে চিরদিন থেকে যায়।

কোহলি আরও লেখেন, আমি যখন এই ফরম্যাট থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি, এটা সহজ নয়—তবে মনে হচ্ছে এটাই সঠিক সময়। আমি এই খেলায় আমার সবটুকু দিয়েছি। এটা আমাকে তার চেয়েও অনেক বেশি ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ এক হৃদয় নিয়ে সরে দাঁড়াচ্ছি এই খেলা থেকে। সতীর্থ এবং প্রত্যেকটি মানুষের জন্য যারা আমাকে এই যাত্রায় মূল্যবান অনুভব করিয়েছেন। আমি সব সময় হাসিমুখেই আমার টেস্ট ক্যারিয়ারকে স্মরণ করবো।

নিজের টেস্ট ক্যাপ নম্বর (২৬৯)কে হ্যাশট্যাগ দিয়ে সাইনিং অফ লিখে কোহলি জানান তৃপ্তির কথা, ‘আমি সর্বদা আমার টেস্ট ক্যারিয়ারের দিকে হাসিমুখে ফিরে তাকাব।’

ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচনা করা হয় কোহলিকে। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় কোহলির। ১২৩টি টেস্টে ৯ হাজার ২৩০ রান করেছেন। গড় ৪৬.৮৫। শতরান ৩০টি, অর্ধশতরান রয়েছে ৩১টি। লাল বলের ক্রিকেটে তিনি যে আর খেলতে ইচ্ছুক নন, এ কথা বিসিসিআইকে কদিন আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন কোহলি। কিন্তু বোর্ডের পক্ষ থেকে তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য। কোহলি তাতে রাজি হননি।

৩০ সেঞ্চুরিতে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ সফল টেস্ট ব্যাটার কোহলি। যেখানে সবার ওপরে শচীন টেন্ডুলকার (৫১), রাহুল দ্রাবিড় (৩৬) ও সুনীল গাভাস্কার (৩৪)। টেস্টে তার ডাবল সেঞ্চুরি ৭টি। যা কোনও ভারতীয় ব্যাটারের সর্বোচ্চ। অধিনায়ক হিসেবেও তার সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি ২০টি।

সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরের পর থেকেই টেস্ট থেকে সরে যাওয়ার কথা ভাবছিলেন কোহলি। ওই সফরে প্রথম টেস্টে শতরান করলেও বাকি সিরিজে নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন। কিন্তু ফর্মটা যেমনই হোক, বোর্ড চেয়েছিল ইংল্যান্ড সফরে তাকে রেখেই দল সাজাতে। কারণ, রোহিতের পর কোহলিকেও যদি আসন্ন এই সফরে না পাওয়া যায়, তাহলে ভারতীয় ব্যাটিং অনেকটাই অনভিজ্ঞ হয়ে পড়বে।

সেই কারণেই বোর্ডের পক্ষ থেকে কোহলিকে অনুরোধ করা হয়েছিল এখনই টেস্ট ক্রিকেট না ছাড়তে। কিন্তু কোহলি শেষ পর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকলেন। রোহিতের মতো তিনিও বিদায়ী টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর রোহিতের সঙ্গেই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। সে হিসেবে দুজনই এখন আর কেবল ওয়ানডে তথা একদিনের ক্রিকেট খেলবেন।