কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের টেকনাফ হ্নীলা থেকে অপহৃত পাঁচ কৃষি শ্রমিকের চারজন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। অপর একজন এখনো অপহরকারীদের হাতে বন্দি।
রোববার (২৪ মার্চ) ভোরে ৭২ ঘণ্টার মাথায় অপহরণকারীরা তাদের ফেরত দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পরিবারগুলো। মুক্তি পেয়ে পরিবারের কাছে ফেরত আসা কৃষকরা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
উদ্ধাররা হলেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী এলাকার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে মো. জিহান (১৩), একই এলাকার ফকির আহম্মদের ছেলে মো. রফিক (২২) ও মো. ছৈয়দুল্লাহ এর ছেলে মো. শামীম ও নুরুল আমিনের ছেলে আব্দুর রহমান। জিম্মি রয়েছে একই এলাকার আব্দু রকিমের ছেলে মোহাম্মদ নুর।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) টেকনাফের হ্নীলার পানখালী এলাকায় ক্ষেতে কাজ করতে যাওয়া পাঁচ কৃষি শ্রমিককে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। পরে অপহৃত পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে অপহৃত রফিকের ভাই শফিকের কাছে ফোন করে অপহরণকারীরা। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েও অপহৃতদের উদ্ধার করতে পারেনি। পরে অপহৃত চার কৃষকের পরিবার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাদের ফিরিয়ে আনে। এখনো অপহরণকারীদের হাতে জিম্মি রয়েছেন মুহাম্মদ নুর নামে আরেকজন।
স্বজনরা জানান, অপহরণের পর অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি স্বজনদের মোবাইল ফোন দিয়ে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এর মধ্যে মোহাম্মদ নুরের স্বজনের কাছে ১৫ লাখ টাকা এবং অন্যদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, মুক্তিপণ দিয়েছে কিনা জানি না। তবে পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধারে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে আসছে। রাতে অভিযানে গিয়ে চারজনকে উদ্ধার করা হয়। তারা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। অন্যজনকে উদ্ধারের অভিযান চলছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এর আগে ১০ মার্চ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে ৭ জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। একদিন পর ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা ফিরে আসেন। কিন্তু ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে অপহৃত মাদরাসা পড়ুয়া ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ (৬) এখনো বাড়ি ফেরেনি।
২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ এর মার্চ পর্যন্ত টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক ১০৩টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অপহরণের শিকার ৫২ জন স্থানীয় এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা।