স্পোর্টস ডেস্ক :
২০২৪ সালে ঘরের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতে ভারত। ২০ ওভারের ক্রিকেটে তাদের দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটানোর অন্যতম নায়ক অর্শদীপ সিং। এবার এই পেসার হয়েছেন ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টির বর্ষসেরা পুরুষ খেলোয়াড়।
অর্শদীপ ২০২২ সালে ভারতের জার্সিতে অভিষিক্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে টি-টোয়েন্টিতে ভারতের মূল বোলিং ভরসায় পরিণত হন। ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে বিশ্বমানের বোলারে রূপান্তরিত করেন এই বাঁহাতি পেসার। গত জুনে ক্যারিবিয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লে ও ডেথ ওভারে অর্শদীপের বোলিং ছিল নজরকাড়া।
২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ভারতীয় অর্শদীপ। মাত্র ১৮টি টি-টোয়েন্টি খেলে ৩৬ উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। ওই বছর তার চেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন- সৌদি আরবের উসমান নজীব (৩৮), শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (৩৮), সংযুক্ত আরব আমিরাতের জুনাইদ সিদ্দিক (৪০) এবং হংকংয়ের এহসান খান (৪৬)। তাদের মধ্যে ৪ জনই অর্শদীপের চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন এবং হাসারাঙ্গা একাই আইসিসির পুর্ণাঙ্গ সদস্য দেশের খেলোয়াড়।
গত বছর ভারতীয় বোলিং ইউনিটের নেতৃত্বে চলে আসেন অর্শদীপ। নিয়মিত পাওয়ার প্লে ও ডেথ ওভারে বোলিং করেও মাত্র ১৫.৩১ গড়ে উইকেট পেয়েছেন তিনি; ইকোনোমি রেট মাত্র ৭.৪৯। উইকেট তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে তার স্ট্রাইক রেট মাত্র ১০.৮০।
২০২৪ সালে বেশ কয়েকটি ম্যাচে বোলিং ঝলক দেখিয়েছেন অর্শদীপ। নিউইয়র্কে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৯ রান খরচে ৪ উইকেট নেন তিনি। তবে তার সবচেয়ে দারুণ পারফরম্যান্সের দেখা মিলেছে আসরের ফাইনালে। বারবাডোজের সেই ফাইনালে তার বোলিংয়ে ভর করেই ১৭৬ রানের পুঁজি নিয়ে জয় পায় ভারত।
যদিও ওই ম্যাচে জসপ্রিত বুমরাহ ও হার্দিক পান্ডিয়া বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তবে অর্শদীপের ৪ ওভারে ২/২০ বোলিং ফিগারের গুরুত্বও কম নয়। সেদিন পাওয়ার প্লের তৃতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে তিনি বিদায় করেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিধ্বংসী ওপেনার ও অধিনায়ক এইডেন মার্করামকে। এরপর মাঝের ওভারগুলোতে যখন উইকেটের খোঁজে ছিল ভারত, তখন কুইন্টন ডি কককে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন অর্শদীপ।
অর্শদীপ ও বাকি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যের চেয়ে ৭ রান কম করে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ১২ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ২০ রান। প্রচণ্ড চাপ মাথায় নিয়ে ১৯তম ওভারে মাত্র ৪ রান খরচ করেন অর্শদীপ। ফলে শেষ ওভারে ১৬ রান আটকানোর দায়িত্ব পান হার্দিক। যা তিনি ভালোভাবেই করতে সক্ষম হন। সবমিলিয়ে ভারতের বিশ্বকাপ স্বপ্ন পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন অর্শদীপ।