Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টিআইবির প্রতিবেদনে বিআরটিএসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে : বিআরটিএ চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, টিআইবির প্রতিবেদনে বিআরটিএসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুমাননির্ভর তথ্য, যা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টিসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে, এরূপ প্রতিবেদন প্রকাশে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। তবে টিআইবি যে গঠনমূলক ও বাস্তবধর্মী সুপারিশগুলো করেছে, তা আমরা আমলে নিয়ে কাজ করব।

বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে বিআরটিএ বনানী কার্যালয়ে টিআইবির প্রতিবেদনের প্রতিবাদের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ‘ব্যক্তিমালিকানাধীন বাস পরিবহন ব্যবসায় শুদ্ধাচার’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গবেষণায় এসেছে, বাস-মিনিবাসের মালিকের কাছ থেকে বিআরটিএর কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বছরে ৯০০ কোটি টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে আদায় করেন। সব মিলিয়ে বাস–মিনিবাসের মালিকেরা চাঁদা ও ঘুষ হিসেবে বিভিন্ন পক্ষকে বছরে প্রায় ১ হাজার ৬০ কোটি টাকা দেয় বলে গবেষণায় উঠে আসে।

তিনি বলেন, আপনি যেভাবে বলছেন এখানে ১০০ পার্সেন্টের বিষয় না। তারাই (টিআইবি) তো বলেছে ৪৬ শতাংশ। ঘুষ লেনদেন হয় না, এটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট কেউ হলফ করে বলতে পারবে না। যদি হয়ে থাকে, সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তো আছে। পৃথিবীর সব দেশে যারা অনিয়ম-দুর্নীতি করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আছে।

টিআইবির প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কি না বা চ্যালেঞ্জ করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা চ্যালেঞ্জের কোনো বিষয় না। তাদের প্রতিবেদনে দেখবেন কিছু গঠনমূলক সুপারিশও আছে। আমরা গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই প্রতিবেদন আমরা সংগ্রহ করেছি এবং এই প্রতিবেদনের বিপরীতে তাদের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাইবো।

অন্য প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টা কিন্তু এমন না যে বিআরটিএতে কিছুই হচ্ছে না। আমরা কিন্তু অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আমরা মনিটরিং বাড়াচ্ছি। আমরা গ্রাহকদের বরাবরই দালালের কাছে যেতে না বলি। আমরা সব প্রক্রিয়ায় অনলাইন করেছি যেন তারা সহজেই ঘরে বসে কাজটি করতে পারে। এখন কিন্তু বিআরটিএতে দালাল নেই বললেই চলে।

তিনি আরও বলেন, এই প্রতিবেদন অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রতিবেদনে চাঁদাবাজির কথাও বলা হয়েছে। এটা তাদের একটা গোঁজামিল রিপোর্ট। সবকিছু মিলে তারা ৯০০ কোটি টাকা রাখতে হিসাব দিয়েছে। এই ৯০০ কোটি টাকার হিসাব তারা কোথায় পেলে এখানে তথ্য প্রমাণ টা কি? সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ সহ তারা তো আমাদের কাছেও আসতে পারতো। তারা আসলে আমরা সেই ভাবে ব্যবস্থা নিতাম। এখানে আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমরা দুর্নীতিকে কখনও প্রশ্রয় দেই না দিব না। আমরা চাই হয়রানি মুক্ত কাজ হোক।

নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, তথ্য প্রকাশের বিরুদ্ধে বিআরটিএ তীব্র প্রতিবাদ এবং তা প্রত্যাখান করছে। কারণ, এতে বিআরটিএসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুমান নির্ভর তথ্য যা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টিসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এরূপ প্রতিবেদন প্রকাশে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। আমরা টিআইবির কাছে এর লিখিত ব্যাখ্যা চাইবো। টিআইবি যে গঠনমূলক ও বাস্তবধর্মী সুপারিশগুলো করেছে তা আমরা আমলে নিয়ে কাজ করবো।

বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল (নংঢ়.নৎঃধ.মড়া.নফ) এর মাধ্যমে সেবাগ্রহীতারা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স, রাইডশেয়ারিং সার্ভিসের আবেদন ঘরে বসে দাখিল ও ঘরে বসেই সার্টিফিকেট প্রিন্ট করতে পারছেন জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, অধিকন্তু, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারী পরীক্ষার দিনই বায়োমেট্রিক প্রদান করে দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে অনলাইনে প্রযোজ্য ফি জমা প্রদানপূর্বক আবেদন দাখিল করে ই-ডাইভিং লাইসেন্স ঐ দিনই পেয়ে যাচ্ছে যা ব্যবহার করে গাড়ি চালাতে পারছে। এছাড়াও অনলাইনে আবেদন দাখিলের ৭-১৫ দিনের মধ্যে স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাকযোগে আবেদনকারীর কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। যেহেতু সেবা পেতে স্বশরীরে বিআরটিএ তে আসার প্রয়োজন হয়না, সেহেতু উল্লেখিত সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি যুক্তিযুক্ত নয়।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান আরো বলেন, মোটরযান মালিক ডিলার বা শো-রুম থেকে মোটরযান ক্রয়ের পর অনলাইনে মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের জন্য নিজে বা ডিলার /শো-রুম এর মাধ্যমে বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল এ দাখিল করতে পারেন। অনলাইনে আবেদন দাখিলের পর নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিসে মোটরযান সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক একই দিনে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রদান করা হচ্ছে। সুতরাং এক্ষেত্রে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হওয়া এবং সংশ্লিষ্ট সেবা পেতে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখিত গড় ব্যয়িত সময় ৩০ কর্মদিবসের বিষয়টি অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত।

১৫ অক্টোবর ২০২০ থেকে ফিটনেস নবায়নে অনলাইনে অ্যাপয়নমেন্ট গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, অ্যাপয়নমেন্ট অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে মোটরযান সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে হাজির করে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উপযুক্ততা সাপেক্ষে ফিটনেস সার্টিফিকেট একই দিনে প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, ফিটনেস নবায়নে মোটরযান ভেহিকেল ইন্সপেকশন সেন্টার (ভিআইসি) এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানের লক্ষ্যে বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেল, মিরপুর অফিসে ১২ (বার) লেন বিশিষ্ট ভিআইসি চালু করা হয়েছে। অন্যান্য সার্কেল অফিসে ফিটনেস প্রদানের সময় সংশ্লিষ্ট মোটরযানের স্বচিত্র ছবি ধারণ করে ডিজিটালি আর্কাইভ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ফিটনেস নবায়নে ১৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফিটনেস সনদ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে যেহেতু স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে সেহেতু সংশ্লিষ্ট সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি সঠিক নয় এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তিনি বলেন, রুট পারমিট সার্টিফিকেট ইস্যু/নবায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অধিক্ষেত্রের যাত্রী, ও পণ্য পরিবহন কমিটির সুপারিশের আলোকে বিআরটিএ থেকে নির্ধারিত সময়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রুট পারমিট সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটির সভা অনুষ্ঠানের বিলম্ব হওয়ার কারণে রুট পারমিট ইস্যু/নবায়নে সময়ক্ষেপন হতে পারে। তবে এই সময় কোনোক্রমেই প্রতিবেদনে উল্লেখিত ৪৫ কর্মদিবস নয়। এক্ষেত্রে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।

ড্রাইভিং লাইসেন্স এখন একদিনেই পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, গ্রাহক যেদিন গাড়ি চালানোর পরীক্ষায় পাস করেন, সেদিনই অনলাইনে ফি জমার মাধ্যমে ই-লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। সেটিই ড্রাইভিং লাইসেন্স।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ই-লাইসেন্সটাই এখন ড্রাইভিং লাইসেন্স। হার্ড কপি পেতে ১৫/২০ দিন বা তারও বেশি সময় লাগলেও, গ্রাহক তার অনলাইনে প্রাপ্ত ই-লাইসেন্স দেখিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে পারবেন।

নূর মোহাম্মদ বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি নিয়ে হয়রানির কোনো সুযোগ নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশে এরচেয়ে আর কী সুবিধা দেওয়া সম্ভব। আমরা ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড যেন ভবিষ্যতে না লাগে, সেই ব্যবস্থাও নিচ্ছি। যাতে গ্রাহকরা অনলাইনেই তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে চলাচল করতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেশের বাহিরেও স্মার্ট কার্ড যেন না নেয়া লাগে, সেই লক্ষ্যেও কাজ করছি। যাতে করে গ্রাহকরা তাদের অনলাইনে প্রাপ্ত লাইসেন্স দিয়েই কাজ করতে পারেন।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স এখন একদিনেই পাওয়া যায়। গ্রাহক যেদিন গাড়ি চালানোর পরীক্ষায় পাস করেন, সেদিনই অনলাইনে ফি জমার মাধ্যমে একটি ই-লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। সেটিই ড্রাইভিং লাইসেন্স।হার্ড কপি দেখাতে হবে না। অনলাইন কপিই মোবাইলে সংরক্ষণ করে দেখালেই, তা গ্রহণযোগ্য হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

টিআইবির প্রতিবেদনে বিআরটিএসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে : বিআরটিএ চেয়ারম্যান

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৩:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, টিআইবির প্রতিবেদনে বিআরটিএসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুমাননির্ভর তথ্য, যা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টিসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে, এরূপ প্রতিবেদন প্রকাশে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। তবে টিআইবি যে গঠনমূলক ও বাস্তবধর্মী সুপারিশগুলো করেছে, তা আমরা আমলে নিয়ে কাজ করব।

বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে বিআরটিএ বনানী কার্যালয়ে টিআইবির প্রতিবেদনের প্রতিবাদের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ‘ব্যক্তিমালিকানাধীন বাস পরিবহন ব্যবসায় শুদ্ধাচার’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গবেষণায় এসেছে, বাস-মিনিবাসের মালিকের কাছ থেকে বিআরটিএর কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বছরে ৯০০ কোটি টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে আদায় করেন। সব মিলিয়ে বাস–মিনিবাসের মালিকেরা চাঁদা ও ঘুষ হিসেবে বিভিন্ন পক্ষকে বছরে প্রায় ১ হাজার ৬০ কোটি টাকা দেয় বলে গবেষণায় উঠে আসে।

তিনি বলেন, আপনি যেভাবে বলছেন এখানে ১০০ পার্সেন্টের বিষয় না। তারাই (টিআইবি) তো বলেছে ৪৬ শতাংশ। ঘুষ লেনদেন হয় না, এটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট কেউ হলফ করে বলতে পারবে না। যদি হয়ে থাকে, সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তো আছে। পৃথিবীর সব দেশে যারা অনিয়ম-দুর্নীতি করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আছে।

টিআইবির প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কি না বা চ্যালেঞ্জ করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা চ্যালেঞ্জের কোনো বিষয় না। তাদের প্রতিবেদনে দেখবেন কিছু গঠনমূলক সুপারিশও আছে। আমরা গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই প্রতিবেদন আমরা সংগ্রহ করেছি এবং এই প্রতিবেদনের বিপরীতে তাদের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাইবো।

অন্য প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টা কিন্তু এমন না যে বিআরটিএতে কিছুই হচ্ছে না। আমরা কিন্তু অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আমরা মনিটরিং বাড়াচ্ছি। আমরা গ্রাহকদের বরাবরই দালালের কাছে যেতে না বলি। আমরা সব প্রক্রিয়ায় অনলাইন করেছি যেন তারা সহজেই ঘরে বসে কাজটি করতে পারে। এখন কিন্তু বিআরটিএতে দালাল নেই বললেই চলে।

তিনি আরও বলেন, এই প্রতিবেদন অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রতিবেদনে চাঁদাবাজির কথাও বলা হয়েছে। এটা তাদের একটা গোঁজামিল রিপোর্ট। সবকিছু মিলে তারা ৯০০ কোটি টাকা রাখতে হিসাব দিয়েছে। এই ৯০০ কোটি টাকার হিসাব তারা কোথায় পেলে এখানে তথ্য প্রমাণ টা কি? সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ সহ তারা তো আমাদের কাছেও আসতে পারতো। তারা আসলে আমরা সেই ভাবে ব্যবস্থা নিতাম। এখানে আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমরা দুর্নীতিকে কখনও প্রশ্রয় দেই না দিব না। আমরা চাই হয়রানি মুক্ত কাজ হোক।

নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, তথ্য প্রকাশের বিরুদ্ধে বিআরটিএ তীব্র প্রতিবাদ এবং তা প্রত্যাখান করছে। কারণ, এতে বিআরটিএসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুমান নির্ভর তথ্য যা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টিসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এরূপ প্রতিবেদন প্রকাশে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। আমরা টিআইবির কাছে এর লিখিত ব্যাখ্যা চাইবো। টিআইবি যে গঠনমূলক ও বাস্তবধর্মী সুপারিশগুলো করেছে তা আমরা আমলে নিয়ে কাজ করবো।

বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল (নংঢ়.নৎঃধ.মড়া.নফ) এর মাধ্যমে সেবাগ্রহীতারা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স, রাইডশেয়ারিং সার্ভিসের আবেদন ঘরে বসে দাখিল ও ঘরে বসেই সার্টিফিকেট প্রিন্ট করতে পারছেন জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, অধিকন্তু, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারী পরীক্ষার দিনই বায়োমেট্রিক প্রদান করে দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে অনলাইনে প্রযোজ্য ফি জমা প্রদানপূর্বক আবেদন দাখিল করে ই-ডাইভিং লাইসেন্স ঐ দিনই পেয়ে যাচ্ছে যা ব্যবহার করে গাড়ি চালাতে পারছে। এছাড়াও অনলাইনে আবেদন দাখিলের ৭-১৫ দিনের মধ্যে স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাকযোগে আবেদনকারীর কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। যেহেতু সেবা পেতে স্বশরীরে বিআরটিএ তে আসার প্রয়োজন হয়না, সেহেতু উল্লেখিত সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি যুক্তিযুক্ত নয়।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান আরো বলেন, মোটরযান মালিক ডিলার বা শো-রুম থেকে মোটরযান ক্রয়ের পর অনলাইনে মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের জন্য নিজে বা ডিলার /শো-রুম এর মাধ্যমে বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল এ দাখিল করতে পারেন। অনলাইনে আবেদন দাখিলের পর নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিসে মোটরযান সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক একই দিনে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রদান করা হচ্ছে। সুতরাং এক্ষেত্রে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হওয়া এবং সংশ্লিষ্ট সেবা পেতে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখিত গড় ব্যয়িত সময় ৩০ কর্মদিবসের বিষয়টি অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত।

১৫ অক্টোবর ২০২০ থেকে ফিটনেস নবায়নে অনলাইনে অ্যাপয়নমেন্ট গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, অ্যাপয়নমেন্ট অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে মোটরযান সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে হাজির করে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উপযুক্ততা সাপেক্ষে ফিটনেস সার্টিফিকেট একই দিনে প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, ফিটনেস নবায়নে মোটরযান ভেহিকেল ইন্সপেকশন সেন্টার (ভিআইসি) এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানের লক্ষ্যে বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেল, মিরপুর অফিসে ১২ (বার) লেন বিশিষ্ট ভিআইসি চালু করা হয়েছে। অন্যান্য সার্কেল অফিসে ফিটনেস প্রদানের সময় সংশ্লিষ্ট মোটরযানের স্বচিত্র ছবি ধারণ করে ডিজিটালি আর্কাইভ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ফিটনেস নবায়নে ১৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফিটনেস সনদ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে যেহেতু স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে সেহেতু সংশ্লিষ্ট সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি সঠিক নয় এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তিনি বলেন, রুট পারমিট সার্টিফিকেট ইস্যু/নবায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অধিক্ষেত্রের যাত্রী, ও পণ্য পরিবহন কমিটির সুপারিশের আলোকে বিআরটিএ থেকে নির্ধারিত সময়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রুট পারমিট সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটির সভা অনুষ্ঠানের বিলম্ব হওয়ার কারণে রুট পারমিট ইস্যু/নবায়নে সময়ক্ষেপন হতে পারে। তবে এই সময় কোনোক্রমেই প্রতিবেদনে উল্লেখিত ৪৫ কর্মদিবস নয়। এক্ষেত্রে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।

ড্রাইভিং লাইসেন্স এখন একদিনেই পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, গ্রাহক যেদিন গাড়ি চালানোর পরীক্ষায় পাস করেন, সেদিনই অনলাইনে ফি জমার মাধ্যমে ই-লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। সেটিই ড্রাইভিং লাইসেন্স।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ই-লাইসেন্সটাই এখন ড্রাইভিং লাইসেন্স। হার্ড কপি পেতে ১৫/২০ দিন বা তারও বেশি সময় লাগলেও, গ্রাহক তার অনলাইনে প্রাপ্ত ই-লাইসেন্স দেখিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে পারবেন।

নূর মোহাম্মদ বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি নিয়ে হয়রানির কোনো সুযোগ নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশে এরচেয়ে আর কী সুবিধা দেওয়া সম্ভব। আমরা ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড যেন ভবিষ্যতে না লাগে, সেই ব্যবস্থাও নিচ্ছি। যাতে গ্রাহকরা অনলাইনেই তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে চলাচল করতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেশের বাহিরেও স্মার্ট কার্ড যেন না নেয়া লাগে, সেই লক্ষ্যেও কাজ করছি। যাতে করে গ্রাহকরা তাদের অনলাইনে প্রাপ্ত লাইসেন্স দিয়েই কাজ করতে পারেন।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স এখন একদিনেই পাওয়া যায়। গ্রাহক যেদিন গাড়ি চালানোর পরীক্ষায় পাস করেন, সেদিনই অনলাইনে ফি জমার মাধ্যমে একটি ই-লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। সেটিই ড্রাইভিং লাইসেন্স।হার্ড কপি দেখাতে হবে না। অনলাইন কপিই মোবাইলে সংরক্ষণ করে দেখালেই, তা গ্রহণযোগ্য হবে।