Dhaka বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে দেবে গেছে সড়ক, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামে বুধবার (৬ আগস্ট) রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে নগরীর দুই নম্বর গেট-অক্সিজেন সড়কের স্টারশিপ কারখানা এলাকায় সড়ক দেবে গেছে। এতে সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে; সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের। বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কে গাড়ির সংখ্যাও কম। এতে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।

নগরের অক্সিজেনের স্টার শিপ গলি এলাকায় শীতল ঝরনার খালের ওপর এ সেতুর অবস্থান। সেতুটি দিয়ে নগরের ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন যাতায়াত করেন লোকজন। নগরের অন্যতম প্রধান ও ব্যস্ততম সড়ক বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের ওপর অবস্থিত। নগরের ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেনমুখী সড়কের ওপর থাকা সেতুর অংশ ভেঙে যায়।

সিটি করপোরেশন দুই প্রকৌশলী জানান, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় শীতল ঝরনা খাল প্রশস্ত করা হয়। এর পর থেকে খালে পানিপ্রবাহ বেড়ে যায়। খাল প্রশস্ত হলেও ইটের তৈরি সেতু আগের মতো ছিল। এতে পানিপ্রবাহের কারণে ধীরে ধীরে সেতুর দুই পাশ থেকে মাটি সরে যেতে থাকে। দেয়ালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর আজ ভোর থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। পানির চাপে সেতুটি দুই ভাগ হয়ে গেছে।

নগরের বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের অক্সিজেন অংশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, এ এলাকায় পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ গাড়ি চলাচল করে সড়কটি দিয়ে। এ জন্য সেতুটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন লোকজন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান বলেন, শীতল ঝরনা খালের ওপর সেতুটি নির্মিত হয় ১৯৮০ সালের দিকে। ওই সময়ের নকশায় করা সেতুটি অনেক দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় শীতল ঝরনা খাল প্রশস্ত করার পর আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি হয়। কেননা, ওই সময় খালের প্রশস্ততা বেড়ে গিয়েছিল।

প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান জানান, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেতু সংস্কারের জন্য পাঁচ কোটি টাকার প্রাক্কলন করা হয়েছে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু করবেন তাঁরা।

এদিকে ব্যস্ততম সড়কের ওপর সেতু ভেঙে যাওয়ায় সড়কে গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে। এখন এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে।

মোটরসাইকেল আরোহী বেলায়েত হোসেন বলেন, জরুরি কাজে তাঁরা এ সড়ক দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝপথে এসে দেখেন সেতু ভেঙে গেছে। এতে ওই পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এখন অন্য পাশ ব্যবহার করে গন্তব্যে যান। এ সেতু দ্রুত সংস্কার না করলে সড়কে আরও বেশি যানজট হবে।

চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের শিক্ষক মনসুর নবী বলেন, সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে দেখি বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের সেতুটি ভেঙে গেছে। এরমধ্যে খবর পাই অতি বৃষ্টির কারণে কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই বাসায় ফিরে এসেছি। গাড়ি একপাশ দিয়ে চলাচল করায় যানজট তৈরি হয়েছে। সেতুর অন্য অংশও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।

ঘটনাস্থল থাকা বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক শামসুল ইসলাম বলেন, সেতুটি আজ সকাল ছয়টায় ভেঙে যায়। এ জন্য এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ আছে। আরেক পাশ দিয়ে সীমিত পরিসরে গাড়ি চলাচল করছে। তবে ওই অংশটি ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

১২ মাসে সরকারের ১২ সাফল্য তুলে ধরলেন প্রেস সচিব

টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে দেবে গেছে সড়ক, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি

প্রকাশের সময় : ১১:৫৯:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামে বুধবার (৬ আগস্ট) রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে নগরীর দুই নম্বর গেট-অক্সিজেন সড়কের স্টারশিপ কারখানা এলাকায় সড়ক দেবে গেছে। এতে সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে; সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের। বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কে গাড়ির সংখ্যাও কম। এতে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।

নগরের অক্সিজেনের স্টার শিপ গলি এলাকায় শীতল ঝরনার খালের ওপর এ সেতুর অবস্থান। সেতুটি দিয়ে নগরের ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন যাতায়াত করেন লোকজন। নগরের অন্যতম প্রধান ও ব্যস্ততম সড়ক বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের ওপর অবস্থিত। নগরের ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেনমুখী সড়কের ওপর থাকা সেতুর অংশ ভেঙে যায়।

সিটি করপোরেশন দুই প্রকৌশলী জানান, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় শীতল ঝরনা খাল প্রশস্ত করা হয়। এর পর থেকে খালে পানিপ্রবাহ বেড়ে যায়। খাল প্রশস্ত হলেও ইটের তৈরি সেতু আগের মতো ছিল। এতে পানিপ্রবাহের কারণে ধীরে ধীরে সেতুর দুই পাশ থেকে মাটি সরে যেতে থাকে। দেয়ালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর আজ ভোর থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। পানির চাপে সেতুটি দুই ভাগ হয়ে গেছে।

নগরের বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের অক্সিজেন অংশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, এ এলাকায় পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ গাড়ি চলাচল করে সড়কটি দিয়ে। এ জন্য সেতুটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন লোকজন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান বলেন, শীতল ঝরনা খালের ওপর সেতুটি নির্মিত হয় ১৯৮০ সালের দিকে। ওই সময়ের নকশায় করা সেতুটি অনেক দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় শীতল ঝরনা খাল প্রশস্ত করার পর আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি হয়। কেননা, ওই সময় খালের প্রশস্ততা বেড়ে গিয়েছিল।

প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান জানান, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেতু সংস্কারের জন্য পাঁচ কোটি টাকার প্রাক্কলন করা হয়েছে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু করবেন তাঁরা।

এদিকে ব্যস্ততম সড়কের ওপর সেতু ভেঙে যাওয়ায় সড়কে গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে। এখন এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে।

মোটরসাইকেল আরোহী বেলায়েত হোসেন বলেন, জরুরি কাজে তাঁরা এ সড়ক দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝপথে এসে দেখেন সেতু ভেঙে গেছে। এতে ওই পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এখন অন্য পাশ ব্যবহার করে গন্তব্যে যান। এ সেতু দ্রুত সংস্কার না করলে সড়কে আরও বেশি যানজট হবে।

চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের শিক্ষক মনসুর নবী বলেন, সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে দেখি বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের সেতুটি ভেঙে গেছে। এরমধ্যে খবর পাই অতি বৃষ্টির কারণে কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই বাসায় ফিরে এসেছি। গাড়ি একপাশ দিয়ে চলাচল করায় যানজট তৈরি হয়েছে। সেতুর অন্য অংশও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।

ঘটনাস্থল থাকা বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক শামসুল ইসলাম বলেন, সেতুটি আজ সকাল ছয়টায় ভেঙে যায়। এ জন্য এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ আছে। আরেক পাশ দিয়ে সীমিত পরিসরে গাড়ি চলাচল করছে। তবে ওই অংশটি ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে।