টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি :
একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুর রহমান খান ফারুক মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের থানাপাড়া নিজ বাস ভবনে মৃত্যু বরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ফজলুর রহমান খান ফারুক দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। পরে শনিবার সকালে তার কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ফারুকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার বাড়িতে জেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষ সমবেদনা জানতে জড়ো হলেও নিজ দলের কোনো নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি।
ফজলুর রহমান খান ১৯৪৪ সালের ১২ অক্টোবর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শী ইউনিয়নের কহেলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাস করেন। তাঁর একমাত্র পুত্র খান আহমেদ শুভ টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের সদ্য সাবেক এমপি।
ফজলুর রহমান খান ফারুক পাকিস্তান গণপরিষদ সদস্য এবং টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২১ সালে একুশে পদক প্রদান করেন।
তিনি ১৯৬০ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬২ সালে টাঙ্গাইল মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
ফজলুর রহমান খান ফারুক ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের গণপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জোরালো ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে টাঙ্গাইল-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর, ১৯৭৪ সালে বাকশাল গঠিত হলে টাঙ্গাইল জেলা বাকশালের যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৫ সালের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন।