বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :
বান্দরবানের থানচিতে ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু ও সড়কের চলাচল করছে ২০ গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করতে না পারায় কাঙ্ক্ষিত লাভের দেখা পাচ্ছেন না। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হেঁটে বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ওই এলাকার জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের অর্থায়নে ২০১৫-১৬ সালে মরিয়মপাড়ায় ঝিরির ওপর প্রায় ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেই সঙ্গে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মরিয়মপাড়া থেকে নকথাহাপাড়া পর্যন্ত রাস্তায় ইট বিছানো হয়। একইভাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নকথাহাপাড়া থেকে হানারাংপাড়া পর্যন্ত রাস্তায় ইট দেওয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দের টাকা নয়ছয় করে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে সেতু ও রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়ে গেলে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলা সদর ইউনিয়নের উত্তরে মরিয়মপাড়ার অবস্থান। সেখানকার একটি সেতু নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যেই ভেঙে যাওয়ায় আশপাশের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের এখন হেঁটে চলতে হচ্ছে। সেতুসংলগ্ন সড়কের ইটও উঠে যাওয়ায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা অনবাহাদুর কার্বারি জানান, সেতু নির্মাণের এক বছর না পেরোতেই এর একটি অংশ ভেঙে রড বেরিয়ে আসে। অপরদিকে থানচি বলিপাড়া সড়কের মরিয়মপাড়া থেকে নকথাহাপাড়ায় যাওয়ার রাস্তায় ইটগুলো উঠে এলোমেলো হয়ে গেছে। বর্ষাকালে পানির স্রোত রাস্তাটি পাহাড়ি ঝিরির মতো হয়ে গেছে।
নকথাহাপাড়ার কার্বারি হামবাহাদুর ত্রিপুরা বলেন, এই রাস্তা দিয়ে আমাদের পাড়া থেকে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী চলাচল করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য তাদের দুটি ড্রেস নিয়ে যেতে হয়। বর্ষার সময় ভিজে প্রতিষ্ঠানের পৌঁছাতে হয়।
হানারাংপাড়ার কার্বারি শান্তি জয় ত্রিপুরা বলেন, সেতু ও রাস্তা দিয়ে খুশির মতো হেঁটে যাতায়াত করতে পারিনি। গ্রামবাসীর বাগানের কলা, কাজুবাদাম, আম, নারিকেল, লিচু ইত্যাদি ফসল বাজারজাত করতে অনেক কষ্ট হয়। একটি কলার ছড়া মজুরি দিয়ে বহন করানোর পর বিক্রি করে সব শ্রমিককে দিলে একটি পানও খাওয়া যায় না।
যোগাযোগ করা হলে পিআইও মোহাম্মদ সুজন মিঞা জানান, গত বছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল মনসুরসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ওই এলাকা পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন। সড়ক ও সেতু নির্মাণে ২০২৪ সালের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।