Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝালকাঠি-রাজাপুর অংশের অবস্থা বেহাল দশা, ভোগান্তিতে চলাচলকারী

ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি : 

খুলনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি-রাজাপুর অংশের অবস্থা বেহাল। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গেছে। বাড়ছে ছোট-বড় ও মাঝারি ধরনের খানাখন্দ। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে এসব খানাখন্দে পানি জমে যান চলাচলে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। খানাখন্দ মাড়িয়ে সড়কে প্রতিদিন চলাচলকারী স্থানীয় বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পড়ছেন। এমনকি ভাঙা অংশগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যানবাহন চলাচল করায় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে আহতও হচ্ছেন অনেকে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বাগড়ি বাঁশতলা এলাকা থেকে শুরু করে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে মাঝারি থেকে বড় আকারের খানাখন্দ ও গর্ত। এসব গর্তে পড়ে ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়তই। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনায় পড়ছে।

মোটরসাইকেল চালক কালাম, মিজু ও ফিরোজ জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সড়কের ওপর পানি জমে থাকে। এতে খানাখন্দগুলো আর বোঝার উপায় থাকে না। এতে করে অপরিচিত চালকরা আরো বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ইজিবাইক চালক সালাম, হাসিফ ও আল আমিন জানান, খানাখন্দে পড়ে গাড়ির চাকা ডেবে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গাড়ির চাকা এমনভাবে আটকে যায় যে গাড়ি আর সামনে এগোয় না। দু’দিন পর পর গাড়ি নষ্ট হয়। মেরামত করতে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয়।

বাস চালক মাহবুব, আলমগীর ও সাইদুল জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই সড়ক পথে বাসযাত্রী বেশি পাচ্ছেন। কিন্তু সড়কের যে বেহাল অবস্থা, তাতে গাড়ি চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ। বাস চালানোর সময় সবচেয়ে বেশি বিরক্ত করে ছোট তিন চাকার গাড়িগুলো। সড়কে খানাখন্দ থাকায় তিন চাকার গাড়ি ও মোটরসাইকেলগুলো সড়কের পাশে সরে যেতে চায় না। এদের কারণে আরো ঝামেলায় পড়তে হয় আমাদের মতো বাসচালকদের।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। যা দূর থেকে অনেক সময় চোখে পড়ছে না। ফলে এসব রুটে নতুন কোনো চালক এলেই দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন।

ইজিবাইক চালক সালাম, হাসিব ও আল আমিন জানান, সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খানাখন্দে গাড়ির চাকা আটকে যায়, স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালানো যায় না। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে খুলনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কে যাত্রীচাপ বেড়েছে। কয়েক কিলোমিটারের সড়ক সংস্কার করা হলে দুর্ভোগ যেমন কমতো, অল্প সময়ে নিরাপদে যাত্রীদের গন্তব্যেও পৌঁছে দেওয়া যেতো।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সড়ক বেহাল হওয়ায় প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় শিগগির সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। খানাখন্দ থাকায় যানবাহনের কর্দমাক্ত পানি ছিটে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা শিক্ষার্থীরাসহ অন্য পথচারীরাও ভোগান্তিতে পড়ছেন।

তারা বলছেন, মেরামতের অংশ হিসেবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মাঝেমধ্যে বালু ও পাথর ফেলে সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করলেও তাতে কোনো সুফল মিলছে না। বরং বৃষ্টির পানির সঙ্গে বালু আর লাল মাটি মিশে সড়কজুড়ে কর্দমাক্ত অবস্থা তৈরি হচ্ছে।

জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক পথ এটি। এই সড়ক পথে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের এই অতিরিক্ত চাপে আরো বেহাল হয়ে পড়ছে সড়কটি। সেই সাথে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের। মাঝে মধ্যেই ঘটছে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, ট্রাক ও বাস দুর্ঘটনা। মহাসড়কের এই বেহাল অবস্থার কারণে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার হালকা ও ভারী যানবাহন নতুন অবস্থাতেই পুরনো হয়ে যাচ্ছে। ক্ষয়ে যাচ্ছে এর যন্ত্রপাতি ও পার্টসগুলো। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জরুরি অবস্থায় মাঝে মধ্যে বালু ও পাথর ফেলে কিছুটা সংস্কার করলেও এর কোনো সুফল মিলছে না। উল্টো এতে কাদা-মাটি-পানির নিত্যখেলা আরো বেড়ে যাচ্ছে। কাদাপানি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পরিবেশ আরো নষ্ট হচ্ছে।

ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন জানান, কয়েক বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিল। এখন সড়কের বিভিন্ন স্থানে আবার খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি খানাখন্দ যেমন বাড়ছে সড়কটিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিগগির সংস্কার করে সড়কটি স্বাভাবিক যান চলাচলের উপযোগী করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

ঝালকাঠি-রাজাপুর অংশের অবস্থা বেহাল দশা, ভোগান্তিতে চলাচলকারী

প্রকাশের সময় : ০১:৫১:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অগাস্ট ২০২৩

ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি : 

খুলনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি-রাজাপুর অংশের অবস্থা বেহাল। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গেছে। বাড়ছে ছোট-বড় ও মাঝারি ধরনের খানাখন্দ। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে এসব খানাখন্দে পানি জমে যান চলাচলে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। খানাখন্দ মাড়িয়ে সড়কে প্রতিদিন চলাচলকারী স্থানীয় বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পড়ছেন। এমনকি ভাঙা অংশগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যানবাহন চলাচল করায় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে আহতও হচ্ছেন অনেকে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বাগড়ি বাঁশতলা এলাকা থেকে শুরু করে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে মাঝারি থেকে বড় আকারের খানাখন্দ ও গর্ত। এসব গর্তে পড়ে ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়তই। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনায় পড়ছে।

মোটরসাইকেল চালক কালাম, মিজু ও ফিরোজ জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সড়কের ওপর পানি জমে থাকে। এতে খানাখন্দগুলো আর বোঝার উপায় থাকে না। এতে করে অপরিচিত চালকরা আরো বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ইজিবাইক চালক সালাম, হাসিফ ও আল আমিন জানান, খানাখন্দে পড়ে গাড়ির চাকা ডেবে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গাড়ির চাকা এমনভাবে আটকে যায় যে গাড়ি আর সামনে এগোয় না। দু’দিন পর পর গাড়ি নষ্ট হয়। মেরামত করতে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয়।

বাস চালক মাহবুব, আলমগীর ও সাইদুল জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই সড়ক পথে বাসযাত্রী বেশি পাচ্ছেন। কিন্তু সড়কের যে বেহাল অবস্থা, তাতে গাড়ি চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ। বাস চালানোর সময় সবচেয়ে বেশি বিরক্ত করে ছোট তিন চাকার গাড়িগুলো। সড়কে খানাখন্দ থাকায় তিন চাকার গাড়ি ও মোটরসাইকেলগুলো সড়কের পাশে সরে যেতে চায় না। এদের কারণে আরো ঝামেলায় পড়তে হয় আমাদের মতো বাসচালকদের।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। যা দূর থেকে অনেক সময় চোখে পড়ছে না। ফলে এসব রুটে নতুন কোনো চালক এলেই দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন।

ইজিবাইক চালক সালাম, হাসিব ও আল আমিন জানান, সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খানাখন্দে গাড়ির চাকা আটকে যায়, স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালানো যায় না। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে খুলনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কে যাত্রীচাপ বেড়েছে। কয়েক কিলোমিটারের সড়ক সংস্কার করা হলে দুর্ভোগ যেমন কমতো, অল্প সময়ে নিরাপদে যাত্রীদের গন্তব্যেও পৌঁছে দেওয়া যেতো।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সড়ক বেহাল হওয়ায় প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় শিগগির সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। খানাখন্দ থাকায় যানবাহনের কর্দমাক্ত পানি ছিটে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা শিক্ষার্থীরাসহ অন্য পথচারীরাও ভোগান্তিতে পড়ছেন।

তারা বলছেন, মেরামতের অংশ হিসেবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মাঝেমধ্যে বালু ও পাথর ফেলে সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করলেও তাতে কোনো সুফল মিলছে না। বরং বৃষ্টির পানির সঙ্গে বালু আর লাল মাটি মিশে সড়কজুড়ে কর্দমাক্ত অবস্থা তৈরি হচ্ছে।

জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক পথ এটি। এই সড়ক পথে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের এই অতিরিক্ত চাপে আরো বেহাল হয়ে পড়ছে সড়কটি। সেই সাথে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের। মাঝে মধ্যেই ঘটছে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, ট্রাক ও বাস দুর্ঘটনা। মহাসড়কের এই বেহাল অবস্থার কারণে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার হালকা ও ভারী যানবাহন নতুন অবস্থাতেই পুরনো হয়ে যাচ্ছে। ক্ষয়ে যাচ্ছে এর যন্ত্রপাতি ও পার্টসগুলো। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জরুরি অবস্থায় মাঝে মধ্যে বালু ও পাথর ফেলে কিছুটা সংস্কার করলেও এর কোনো সুফল মিলছে না। উল্টো এতে কাদা-মাটি-পানির নিত্যখেলা আরো বেড়ে যাচ্ছে। কাদাপানি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পরিবেশ আরো নষ্ট হচ্ছে।

ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন জানান, কয়েক বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিল। এখন সড়কের বিভিন্ন স্থানে আবার খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি খানাখন্দ যেমন বাড়ছে সড়কটিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিগগির সংস্কার করে সড়কটি স্বাভাবিক যান চলাচলের উপযোগী করা হবে।