Dhaka শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ ড. ইউনূসকেই দিতে হবে : নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে দ্রুত নির্বাচনের জন্য জাতি অপেক্ষা করছে। জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট বলে কিছু থাকবে না এবং এর বাস্তবায়ন আদেশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেই দিতে হবে। ঐকমত্য প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পড়েও রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে আয়োজিত ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরাম (ইউটিএফ) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সত্যিকারের পরিবর্তন ছাড়া ঐকমত্য কমিশন, নির্বাচন কিংবা গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যাবে। যদি সাধারণ জনগণের বদলে গণঅভ্যুত্থানের সুফল কিছু লোকের হাতে কুক্ষিগত হয়ে যায় তাহলে আবারো গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন পড়বে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট বলে কিছু থাকবে না। যা ঐকমত্য হয়েছে জনগণ বাকিটা ঠিক করবে। জনগণ যদি বলে সেগুলাই বাস্তবায়িত হবে। আমরা আশা করি খুব দ্রুতই জুলাই সনদের আইনের ভিত্তির মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব।

তিনি বলেন, আগামী সংসদ এবং যে সংস্কার পরিষদ গঠন হবে, সেখানে তরুণ, শিক্ষক, নারী, সংখ্যালঘু ও বিভিন্ন পেশাজীবী অংশ নেবেন। এভাবে জুলাই সনদের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে। তার আগে অবশ্যই আমাদের এখনকার যে দাবি দাওয়া গণভোট, এবং আমরা বলেছি জুলাই সনদের অর্ডার ড. মুহাম্মদ ইউনুসকেই দিতে হবে।

আগামী নির্বাচনে গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার যারা তাদের পার্লামেন্টে থাকা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেই পার্লামেন্টের সংস্কার পরিষদ হবে নতুন সংবিধান নিয়ে কাজ হবে। সেখানে শিক্ষকদের অবশ্যই অংশগ্রহণ প্রয়োজন। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে আমরা সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করব বলেও জানান তিনি।

নাহিদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের একটা প্রেক্ষাপট ছিল অর্থনৈতিক সংকট, বিশেষত তরুণরা সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী ছিল। আমাদের সামনে দুটি অপশন ছিল, সরকারি চাকরি বা বিদেশে যেতে হবে। কিন্তু এই সরকারি চাকরিতেও কোটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়ালো।

তিনি বলেন, এখন নির্বাচন আসছে, অনেক রাজনৈতিক দল ‘এত কোটি’ চাকরির ব্যবস্থার কথা বলছেন। তরুণরা কেউ আর বেকার থাকবে না। কিন্তু এই কথাগুলো যখন আমরা বলি, আমরা যেন মিন করে বলি। আমরা কোনো প্রক্রিয়ায় কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করবো, কোনো প্রক্রিয়ায় তরুণদের ক্ষমতায়িত করবো, এটার প্রস্তাবনা কেউ হাজির করতে পারছে না।

‘আমরা ২৪ দফার ইশতেহারে শিক্ষা ইশতেহার দিয়েছি। তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য বিনিয়োগ, উদ্যোক্তা তৈরি ও চাকরি সবই লাগবে, কিন্তু গড়ায় হাত দিতে হলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় হাত দিতে হবে— যোগ করেন নাহিদ।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে চাইলে ইতিহাসের পেছনের দিকে আমাদের পড়াশোনা করতে হবে। কোনো সময়ের মধ্য দিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গড়ে উঠেছিল। বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে গড়ে উঠেছিল। ঢাবি এ ধরনের একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে সামনে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। বঙ্গভঙ্গ রদের পরে পূর্ব বাংলার মুসলমানদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু কলকাতাসহ উচ্চবর্ণের হিন্দুরা এর বিরোধিতা করেছিল।

তিনি বলেন, একটি ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গড়ে উঠেছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, আমাদের তাবৎ রাষ্ট্র, আইন সব প্রতিষ্ঠানই একটি উপনিবেশিত সমাজের মধ্য দিয়েই প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফলে আমাদের আগের যে শিক্ষাব্যবস্থা ছিল, তার সাথে একটা বিচ্ছেদ ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমাজ-সংস্কৃতির সংযোগ কমেছে। আগামীতে কীভাবে সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক তৈরি করা যায়, তা আমাদের ভাবতে হবে।

নাহিদ বলেন, ১৬ বছরে শিক্ষাব্যবস্থার বেহালদশা ছিল। সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। মেধার মূল্যায়ন ছিল না। কেউ প্রমোশন পাবেন কি-না, উপাচার্য, প্রক্টর, প্রাধ্যক্ষ হবে কি না, তা দলীয় পরিচয়ের ওপর নির্ভর করতো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উপাচার্য তার আত্মীয়-স্বজনদের চাকরি দিতে নতুন নতুন ডিপার্টমেন্ট খুলেছেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী কাঠামো এখনও রয়ে গেছে। শিক্ষা নিয়ে কোনো কমিশন হয়নি। কিন্তু অন্য যে কমিশন হয়েছে, তা নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। মাত্র ছয়টি কমিশন, যেগুলো সাথে নির্বাচন ও রাজনীতি সম্পর্কিত; সেগুলো নিয়েই সবার আগ্রহ। আলোচনাকে আমরা এর বাইরে আনতে পারিনি। এখন সেই আলোচনায়ও ঐকমত্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছে। পরিবর্তন ছাড়া অভ্যুত্থান, নির্বাচন, ঐকমত্য কমিশন সবই ব্যর্থ হবে। অভ্যুত্থানের সুফল যদি প্রত্যেক মানুষ না হয়, কেবল রাজনৈতিক দল, কিছু মুষ্টিমেয় ব্যক্তি হয়, তাহলে এটা কোনো পরিবর্তন হলো না। জনগণ আবার রাস্তায় নামবে।

অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম এবং সদস্যসচিব হিসেবে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. শামীম হামিদী রয়েছেন।

আবহাওয়া

২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভেন্যু তালিকা প্রকাশ

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ ড. ইউনূসকেই দিতে হবে : নাহিদ ইসলাম

প্রকাশের সময় : ০৪:৫৩:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে দ্রুত নির্বাচনের জন্য জাতি অপেক্ষা করছে। জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট বলে কিছু থাকবে না এবং এর বাস্তবায়ন আদেশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেই দিতে হবে। ঐকমত্য প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পড়েও রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে আয়োজিত ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরাম (ইউটিএফ) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সত্যিকারের পরিবর্তন ছাড়া ঐকমত্য কমিশন, নির্বাচন কিংবা গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যাবে। যদি সাধারণ জনগণের বদলে গণঅভ্যুত্থানের সুফল কিছু লোকের হাতে কুক্ষিগত হয়ে যায় তাহলে আবারো গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন পড়বে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট বলে কিছু থাকবে না। যা ঐকমত্য হয়েছে জনগণ বাকিটা ঠিক করবে। জনগণ যদি বলে সেগুলাই বাস্তবায়িত হবে। আমরা আশা করি খুব দ্রুতই জুলাই সনদের আইনের ভিত্তির মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব।

তিনি বলেন, আগামী সংসদ এবং যে সংস্কার পরিষদ গঠন হবে, সেখানে তরুণ, শিক্ষক, নারী, সংখ্যালঘু ও বিভিন্ন পেশাজীবী অংশ নেবেন। এভাবে জুলাই সনদের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে। তার আগে অবশ্যই আমাদের এখনকার যে দাবি দাওয়া গণভোট, এবং আমরা বলেছি জুলাই সনদের অর্ডার ড. মুহাম্মদ ইউনুসকেই দিতে হবে।

আগামী নির্বাচনে গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার যারা তাদের পার্লামেন্টে থাকা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেই পার্লামেন্টের সংস্কার পরিষদ হবে নতুন সংবিধান নিয়ে কাজ হবে। সেখানে শিক্ষকদের অবশ্যই অংশগ্রহণ প্রয়োজন। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে আমরা সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করব বলেও জানান তিনি।

নাহিদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের একটা প্রেক্ষাপট ছিল অর্থনৈতিক সংকট, বিশেষত তরুণরা সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী ছিল। আমাদের সামনে দুটি অপশন ছিল, সরকারি চাকরি বা বিদেশে যেতে হবে। কিন্তু এই সরকারি চাকরিতেও কোটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়ালো।

তিনি বলেন, এখন নির্বাচন আসছে, অনেক রাজনৈতিক দল ‘এত কোটি’ চাকরির ব্যবস্থার কথা বলছেন। তরুণরা কেউ আর বেকার থাকবে না। কিন্তু এই কথাগুলো যখন আমরা বলি, আমরা যেন মিন করে বলি। আমরা কোনো প্রক্রিয়ায় কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করবো, কোনো প্রক্রিয়ায় তরুণদের ক্ষমতায়িত করবো, এটার প্রস্তাবনা কেউ হাজির করতে পারছে না।

‘আমরা ২৪ দফার ইশতেহারে শিক্ষা ইশতেহার দিয়েছি। তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য বিনিয়োগ, উদ্যোক্তা তৈরি ও চাকরি সবই লাগবে, কিন্তু গড়ায় হাত দিতে হলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় হাত দিতে হবে— যোগ করেন নাহিদ।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে চাইলে ইতিহাসের পেছনের দিকে আমাদের পড়াশোনা করতে হবে। কোনো সময়ের মধ্য দিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গড়ে উঠেছিল। বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে গড়ে উঠেছিল। ঢাবি এ ধরনের একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে সামনে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। বঙ্গভঙ্গ রদের পরে পূর্ব বাংলার মুসলমানদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু কলকাতাসহ উচ্চবর্ণের হিন্দুরা এর বিরোধিতা করেছিল।

তিনি বলেন, একটি ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গড়ে উঠেছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, আমাদের তাবৎ রাষ্ট্র, আইন সব প্রতিষ্ঠানই একটি উপনিবেশিত সমাজের মধ্য দিয়েই প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফলে আমাদের আগের যে শিক্ষাব্যবস্থা ছিল, তার সাথে একটা বিচ্ছেদ ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমাজ-সংস্কৃতির সংযোগ কমেছে। আগামীতে কীভাবে সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক তৈরি করা যায়, তা আমাদের ভাবতে হবে।

নাহিদ বলেন, ১৬ বছরে শিক্ষাব্যবস্থার বেহালদশা ছিল। সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। মেধার মূল্যায়ন ছিল না। কেউ প্রমোশন পাবেন কি-না, উপাচার্য, প্রক্টর, প্রাধ্যক্ষ হবে কি না, তা দলীয় পরিচয়ের ওপর নির্ভর করতো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উপাচার্য তার আত্মীয়-স্বজনদের চাকরি দিতে নতুন নতুন ডিপার্টমেন্ট খুলেছেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী কাঠামো এখনও রয়ে গেছে। শিক্ষা নিয়ে কোনো কমিশন হয়নি। কিন্তু অন্য যে কমিশন হয়েছে, তা নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। মাত্র ছয়টি কমিশন, যেগুলো সাথে নির্বাচন ও রাজনীতি সম্পর্কিত; সেগুলো নিয়েই সবার আগ্রহ। আলোচনাকে আমরা এর বাইরে আনতে পারিনি। এখন সেই আলোচনায়ও ঐকমত্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছে। পরিবর্তন ছাড়া অভ্যুত্থান, নির্বাচন, ঐকমত্য কমিশন সবই ব্যর্থ হবে। অভ্যুত্থানের সুফল যদি প্রত্যেক মানুষ না হয়, কেবল রাজনৈতিক দল, কিছু মুষ্টিমেয় ব্যক্তি হয়, তাহলে এটা কোনো পরিবর্তন হলো না। জনগণ আবার রাস্তায় নামবে।

অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম এবং সদস্যসচিব হিসেবে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. শামীম হামিদী রয়েছেন।