Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই আন্দোলনে কেউ ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিল না : আসিফ মাহমুদ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১১:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৮০ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে প্রধান কুশীলব বা মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কেউ ছিল না বলে দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জেরার সময় এ কথা উল্লেখ করেন তিনি।

এদিন বিকেল ৩টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে অবশিষ্ট সাক্ষ্য দেন আসিফ মাহমুদ। পরে তার জেরা শুরু হয়।

প্রথমেই তাকে জেরা করেন শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেনের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি। জেরার একপর্যায়ে আসিফকে তিনি বলেন, আপনাদের আন্দোলনে কোনো মাস্টারমাইন্ড ছিল কিনা।

জবাবে এই উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের ৫ জুন কোটাপ্রথা পুনর্বহালের রায়ের পর আমরা ৫৮ জন সমন্বয়ক-সহসমন্বয়ক মিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করি। এতে কোনো রাজনৈতিক দলের ইন্ধন ছিল না। আন্দোলনে প্রধানও কেউ ছিল না। সমন্বয়কদের সবার মর্যাদা সমান ছিল।

জুলাই আন্দোলনে প্রধান কেউ ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের যে সমন্বয় কমিটি ছিল, সবাই সমমর্যাদার ছিল। প্রথম দিক থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা বাই রোটেশন লিডারশিপ সামনে নিয়ে আসব, যাতে করে ফ্যাসিবাদী সরকার শনাক্ত করতে না পারে কারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আন্দোলনের প্রয়োজেনে কয়েকজন হয়তো সামনে চলে এসেছেন, বাংলাদেশের মানুষ কয়েকজনকে বেশি জানেন বা কাউকে কম জানেন। তবে ফরমালি আমাদের সবার মর্যাদা সমান।

যোগাযোগের মাধ্যম কি ছিল আইনজীবীর এমন প্রশ্নে আসিফ মাহমুদ বলেন, যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আমরা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেছি।

কোনো মামলা হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করেন অভি। তখন এই উপদেষ্টা বলেন, আমিসহ আমাদের অনেকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে।

একদফা কর্মসূচির পেছনে বিদেশি কোনো শক্তি বা কারো হাত ছিল কিনা। আসামিপক্ষের আইনজীবীর এমন প্রশ্নে আসিফ বলেন, একদফা কর্মসূচি ঘোষণার পেছনে কোনো বিদেশি ইন্ধন ছিল না। আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া আন্দোলনকারীরাই আন্দোলনের ধরচের জন্য ফান্ড তৈরি করেছি।

সাক্ষীর উদ্দেশে অভি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে যেখান থেকে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল সেখান থেকে আপনার দূরত্ব কতটুকু ছিল।

প্রতুত্তরে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমি ২০০ মিটার দূরে ছিলাম। এত দূর থেকে তো গুলি করার দৃশ্য দেখা যায় না। আসামিপক্ষের আইনজীবীর এমন কথায় এটা সত্য নয় বলে জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

জেরা শেষে সাংবাদিকরা উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করেন চিফ প্রসিকিউটর আজকে বলেছেন, শেখ হাসিনার অপরাধের যে মাত্রা এবং ১৪০০ মানুষ হত্যা করেছেন, তাই ১৪০০ বার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। আপনারা একমত কি না।

জবাবে আফিফ মাহমুদ বলেন, ১৪০০ মানুষকে তো গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যা করেছিল। কিন্তু বিগত ১৭ বছরে আরও কত হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, এর তো কোনো ইয়ত্তা নেই। এখন আমরা বিভিন্নভাবে তালিকা পাচ্ছি। এর আগে আমরা বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছি। শত শত মানুষকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। অনেককে ফিরে পাওয়া যায়নি। আমরা আয়নাঘর প্রত্যক্ষ করেছি। সুতরাং প্রত্যেকটা ভিকটিমের জন্য যদি আপনি একবার করে বিচার করতে যান তাহলে এ বিচার কেয়ামত পর্যন্ত শেষ হবে না। আমরা এসব ভিকটিমদের পক্ষ থেকে এই মিসডিডগুলো যে শেখ হাসিনা বা যারা জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আশা করি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হবে।

পুলিশ নিহতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, চানখারপুলে ৬ হত্যা মামলায় সেখানে কোনো পুলিশ নিহত বা আহত হয়েছিল কি না। সেখানে আমার জানামতে কোনো পুলিশ নিহত বা আহত হয়নি। সারা দেশে যেটা বলা হচ্ছে, সেটা অস্পস্ট। এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু আমার জানা নেই, সেটাই আমি আদালতে বলেছি।

এদিন দুপুর সোয়া ২টার পর ট্রাইব্যুনালে পৌঁছান আসিফ মাহমুদ। বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে এজলাসকক্ষে যান তিনি। এরপর তার সাক্ষ্য শুরু হয়।

গত ৯ অক্টোবর দুপুর ২টায় এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন এই উপদেষ্টা। বেলা পৌনে ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। তবে শেষ না হওয়ায় অবশিষ্ট জবানবন্দি নিতে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

ওই দিন ১৯ নম্বর সাক্ষী হিসেবে নিজের সাক্ষ্যে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পুরো পটভূমি তুলে ধরেন আসিফ মাহমুদ। একইসঙ্গে গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে চালানো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নৃশংসতার বিবরণ দেন। এমনকি ডিবি পরিচয়ে রাতের আঁধারে নিজেকে গুম করার কথাও জবানবন্দিতে পেশ করেন তিনি। এসব ঘটনার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ সরাসরি জড়িতদের দায়ী করেছেন আসিফ মাহমুদ।

এ মামলার গ্রেপ্তার চার আসামি হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।

গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জুলাই আন্দোলনে কেউ ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিল না : আসিফ মাহমুদ

প্রকাশের সময় : ০৮:১১:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে প্রধান কুশীলব বা মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কেউ ছিল না বলে দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জেরার সময় এ কথা উল্লেখ করেন তিনি।

এদিন বিকেল ৩টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে অবশিষ্ট সাক্ষ্য দেন আসিফ মাহমুদ। পরে তার জেরা শুরু হয়।

প্রথমেই তাকে জেরা করেন শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেনের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি। জেরার একপর্যায়ে আসিফকে তিনি বলেন, আপনাদের আন্দোলনে কোনো মাস্টারমাইন্ড ছিল কিনা।

জবাবে এই উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের ৫ জুন কোটাপ্রথা পুনর্বহালের রায়ের পর আমরা ৫৮ জন সমন্বয়ক-সহসমন্বয়ক মিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করি। এতে কোনো রাজনৈতিক দলের ইন্ধন ছিল না। আন্দোলনে প্রধানও কেউ ছিল না। সমন্বয়কদের সবার মর্যাদা সমান ছিল।

জুলাই আন্দোলনে প্রধান কেউ ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের যে সমন্বয় কমিটি ছিল, সবাই সমমর্যাদার ছিল। প্রথম দিক থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা বাই রোটেশন লিডারশিপ সামনে নিয়ে আসব, যাতে করে ফ্যাসিবাদী সরকার শনাক্ত করতে না পারে কারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আন্দোলনের প্রয়োজেনে কয়েকজন হয়তো সামনে চলে এসেছেন, বাংলাদেশের মানুষ কয়েকজনকে বেশি জানেন বা কাউকে কম জানেন। তবে ফরমালি আমাদের সবার মর্যাদা সমান।

যোগাযোগের মাধ্যম কি ছিল আইনজীবীর এমন প্রশ্নে আসিফ মাহমুদ বলেন, যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আমরা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেছি।

কোনো মামলা হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করেন অভি। তখন এই উপদেষ্টা বলেন, আমিসহ আমাদের অনেকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে।

একদফা কর্মসূচির পেছনে বিদেশি কোনো শক্তি বা কারো হাত ছিল কিনা। আসামিপক্ষের আইনজীবীর এমন প্রশ্নে আসিফ বলেন, একদফা কর্মসূচি ঘোষণার পেছনে কোনো বিদেশি ইন্ধন ছিল না। আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া আন্দোলনকারীরাই আন্দোলনের ধরচের জন্য ফান্ড তৈরি করেছি।

সাক্ষীর উদ্দেশে অভি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে যেখান থেকে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল সেখান থেকে আপনার দূরত্ব কতটুকু ছিল।

প্রতুত্তরে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমি ২০০ মিটার দূরে ছিলাম। এত দূর থেকে তো গুলি করার দৃশ্য দেখা যায় না। আসামিপক্ষের আইনজীবীর এমন কথায় এটা সত্য নয় বলে জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

জেরা শেষে সাংবাদিকরা উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করেন চিফ প্রসিকিউটর আজকে বলেছেন, শেখ হাসিনার অপরাধের যে মাত্রা এবং ১৪০০ মানুষ হত্যা করেছেন, তাই ১৪০০ বার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। আপনারা একমত কি না।

জবাবে আফিফ মাহমুদ বলেন, ১৪০০ মানুষকে তো গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যা করেছিল। কিন্তু বিগত ১৭ বছরে আরও কত হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, এর তো কোনো ইয়ত্তা নেই। এখন আমরা বিভিন্নভাবে তালিকা পাচ্ছি। এর আগে আমরা বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছি। শত শত মানুষকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। অনেককে ফিরে পাওয়া যায়নি। আমরা আয়নাঘর প্রত্যক্ষ করেছি। সুতরাং প্রত্যেকটা ভিকটিমের জন্য যদি আপনি একবার করে বিচার করতে যান তাহলে এ বিচার কেয়ামত পর্যন্ত শেষ হবে না। আমরা এসব ভিকটিমদের পক্ষ থেকে এই মিসডিডগুলো যে শেখ হাসিনা বা যারা জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আশা করি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হবে।

পুলিশ নিহতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, চানখারপুলে ৬ হত্যা মামলায় সেখানে কোনো পুলিশ নিহত বা আহত হয়েছিল কি না। সেখানে আমার জানামতে কোনো পুলিশ নিহত বা আহত হয়নি। সারা দেশে যেটা বলা হচ্ছে, সেটা অস্পস্ট। এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু আমার জানা নেই, সেটাই আমি আদালতে বলেছি।

এদিন দুপুর সোয়া ২টার পর ট্রাইব্যুনালে পৌঁছান আসিফ মাহমুদ। বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে এজলাসকক্ষে যান তিনি। এরপর তার সাক্ষ্য শুরু হয়।

গত ৯ অক্টোবর দুপুর ২টায় এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন এই উপদেষ্টা। বেলা পৌনে ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। তবে শেষ না হওয়ায় অবশিষ্ট জবানবন্দি নিতে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

ওই দিন ১৯ নম্বর সাক্ষী হিসেবে নিজের সাক্ষ্যে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পুরো পটভূমি তুলে ধরেন আসিফ মাহমুদ। একইসঙ্গে গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে চালানো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নৃশংসতার বিবরণ দেন। এমনকি ডিবি পরিচয়ে রাতের আঁধারে নিজেকে গুম করার কথাও জবানবন্দিতে পেশ করেন তিনি। এসব ঘটনার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ সরাসরি জড়িতদের দায়ী করেছেন আসিফ মাহমুদ।

এ মামলার গ্রেপ্তার চার আসামি হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।

গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।