Dhaka সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই আন্দোলনকে দূর থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তারেক রহমান : মঈন খান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, জুলাই আন্দোলনকে যারা শুধু ছাত্রদের হাতে কেন্দ্রীভূত করতে চান তারা নিজস্ব ইচ্ছেই করতে পারেন তবে সেটা সঠিক বিশ্লেষণ না। এ আন্দোলন দূর থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারমান তারেক রহমান, যার ফলে সফলতা এসেছে।

সোমবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) প্রকাশনা অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মঈন খান বলেন, ছাত্ররা জুলাই আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন, কিন্তু তারেক রহমান ১০ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জানতার বলা হলেও এটি একদিনে হয়নি, বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দলের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এ আন্দোলনে সফলতা এসেছে।

তিনি বলেন, সংস্কৃতি, শিক্ষা, সমাজ ব্যতিরেকে কোনো দেশের রাজনীতি হতে পারে না। আসুন আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত করি, যেখানে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, যেখানে মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সর্বশেষ এই দেশের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

মঈন খান বলেন, দীর্ঘ ১৬-১৭ বছরের বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের যে আত্মত্যাগ, তারই ফলশ্রুতিতে কিন্তু ৫ই আগস্ট এসেছে। এটা আমি বিশ্বাস করি। অন্তর থেকে বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, আমাদের এই যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সঙ্গে শুধু বিএনপি নয়, বিএনপির সঙ্গে আরও বেশ কিছু গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল, সব মিলিয়ে প্রায় ৪৩টি রাজনৈতিক দল আমরা কিন্তু সেই সময় রাজপথে ছিলাম এবং এই সবকিছুর ফলশ্রুতিতে একটি বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল এবং সেই পরিস্থিতিতে সেই ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়, যেটা পাঁচ বছর আগে একবার হয়েছিল, সরকার সেটাকে স্তিমিত করে দিয়েছিল অত্যাচার, নির্যাতন, জুলুমের মাধ্যমে। সেটা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং সেই সময়ে আমি এভাবে বলবো, সেই বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতিতে দেশলাই যেমন ঘষা দিয়ে আগুনের ফুলকি জ্বালিয়ে দেয়, ঠিক তেমনি সেই বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতিতে আগুনের ফুলকি জ্বালিয়ে দিয়েছিল ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে এবং তার ফলশ্রুতিতে একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। সেই বিস্ফোরণটি ছিল ৫ই আগস্ট। যার ফলশ্রুতিতে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার কাপুরুষের মতো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। এটাই হচ্ছে রক্তাক্ত ৩৬শে জুলাইয়ের সত্যিকার ইতিহাস।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যিনি এই আন্দোলনটি পুরোপুরি, তিনি আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন সুদূর প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে। এবং যাকে অনুসরণ করে এবং যার দিকনির্দেশনায় আমি বলব আমরা এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছি এবং এক অর্থে বলব আমরা সফল হয়েছি। হ্যাঁ, এটা ঠিক, ৫ই আগস্টে ছাত্ররা অগ্রভাগে ছিল। আমি একটা উদাহরণ দেই, খুব সাদামাটা একটা উদাহরণ, যে ফুটবল কিন্তু ১১ জন প্লেয়ার খেলে, কিন্তু গোল হয় তো একজনই করে। তার অর্থ এইটা নয় যে বাকি ১০জন সেই খেলাটি খেলেনি, এটা কিন্তু ঠিক না। কাজেই যারা এই আন্দোলনকে যদি কেউ ছাত্রদের হাতে কেন্দ্রীভূত করে দিতে চান, আমি সেটা নিষেধ করব না, কিন্তু আমি বিনীতভাবে বলব, সেটা হয়তো সঠিক বিশ্লেষণ হবে না।

আওয়ামী সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপির সব দলীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মঈন খান বলেন, সমাজ ও সংস্কৃতিকে পিছিয়ে রেখে কোনো দেশের অগ্রগতি হতে পারে না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সেই উপলব্ধি থেকেই জাসাস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দেশে বঞ্চনা, গুম, খুন ও মিথ্যাচারের রাজত্ব কায়েম ছিল। বিএনপির কর্মীরা তখন ঘরে থাকতে পারেননি। অনেককে গায়েবি মামলায় আসামি করা হয়েছে, আজও অনেকে নিখোঁজ।

জাসাসের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সংস্কৃতি হলো জাতির আত্মা। বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে জাসাসকে নতুন করে সংগঠিত হতে হবে যেন জনগণের হৃদয়ের ভাষা রাজনীতিতে প্রতিফলিত হয়।

সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, রাজনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক মুক্তিও জরুরি। জাসাস বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগিয়ে তুলেছে, যা গণতান্ত্রিক চেতনার অংশ।

জাসাসের আহ্বায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খানের সভাপতিত্বে সভায় জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল চিন্না মিয়া হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে জাসাসের নতুন প্রকাশনা উন্মোচন করা হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জুলাই আন্দোলনকে দূর থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তারেক রহমান : মঈন খান

প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, জুলাই আন্দোলনকে যারা শুধু ছাত্রদের হাতে কেন্দ্রীভূত করতে চান তারা নিজস্ব ইচ্ছেই করতে পারেন তবে সেটা সঠিক বিশ্লেষণ না। এ আন্দোলন দূর থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারমান তারেক রহমান, যার ফলে সফলতা এসেছে।

সোমবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) প্রকাশনা অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মঈন খান বলেন, ছাত্ররা জুলাই আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন, কিন্তু তারেক রহমান ১০ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জানতার বলা হলেও এটি একদিনে হয়নি, বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দলের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এ আন্দোলনে সফলতা এসেছে।

তিনি বলেন, সংস্কৃতি, শিক্ষা, সমাজ ব্যতিরেকে কোনো দেশের রাজনীতি হতে পারে না। আসুন আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত করি, যেখানে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, যেখানে মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সর্বশেষ এই দেশের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

মঈন খান বলেন, দীর্ঘ ১৬-১৭ বছরের বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের যে আত্মত্যাগ, তারই ফলশ্রুতিতে কিন্তু ৫ই আগস্ট এসেছে। এটা আমি বিশ্বাস করি। অন্তর থেকে বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, আমাদের এই যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সঙ্গে শুধু বিএনপি নয়, বিএনপির সঙ্গে আরও বেশ কিছু গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল, সব মিলিয়ে প্রায় ৪৩টি রাজনৈতিক দল আমরা কিন্তু সেই সময় রাজপথে ছিলাম এবং এই সবকিছুর ফলশ্রুতিতে একটি বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল এবং সেই পরিস্থিতিতে সেই ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়, যেটা পাঁচ বছর আগে একবার হয়েছিল, সরকার সেটাকে স্তিমিত করে দিয়েছিল অত্যাচার, নির্যাতন, জুলুমের মাধ্যমে। সেটা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং সেই সময়ে আমি এভাবে বলবো, সেই বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতিতে দেশলাই যেমন ঘষা দিয়ে আগুনের ফুলকি জ্বালিয়ে দেয়, ঠিক তেমনি সেই বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতিতে আগুনের ফুলকি জ্বালিয়ে দিয়েছিল ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে এবং তার ফলশ্রুতিতে একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। সেই বিস্ফোরণটি ছিল ৫ই আগস্ট। যার ফলশ্রুতিতে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার কাপুরুষের মতো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। এটাই হচ্ছে রক্তাক্ত ৩৬শে জুলাইয়ের সত্যিকার ইতিহাস।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যিনি এই আন্দোলনটি পুরোপুরি, তিনি আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন সুদূর প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে। এবং যাকে অনুসরণ করে এবং যার দিকনির্দেশনায় আমি বলব আমরা এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছি এবং এক অর্থে বলব আমরা সফল হয়েছি। হ্যাঁ, এটা ঠিক, ৫ই আগস্টে ছাত্ররা অগ্রভাগে ছিল। আমি একটা উদাহরণ দেই, খুব সাদামাটা একটা উদাহরণ, যে ফুটবল কিন্তু ১১ জন প্লেয়ার খেলে, কিন্তু গোল হয় তো একজনই করে। তার অর্থ এইটা নয় যে বাকি ১০জন সেই খেলাটি খেলেনি, এটা কিন্তু ঠিক না। কাজেই যারা এই আন্দোলনকে যদি কেউ ছাত্রদের হাতে কেন্দ্রীভূত করে দিতে চান, আমি সেটা নিষেধ করব না, কিন্তু আমি বিনীতভাবে বলব, সেটা হয়তো সঠিক বিশ্লেষণ হবে না।

আওয়ামী সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপির সব দলীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মঈন খান বলেন, সমাজ ও সংস্কৃতিকে পিছিয়ে রেখে কোনো দেশের অগ্রগতি হতে পারে না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সেই উপলব্ধি থেকেই জাসাস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দেশে বঞ্চনা, গুম, খুন ও মিথ্যাচারের রাজত্ব কায়েম ছিল। বিএনপির কর্মীরা তখন ঘরে থাকতে পারেননি। অনেককে গায়েবি মামলায় আসামি করা হয়েছে, আজও অনেকে নিখোঁজ।

জাসাসের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সংস্কৃতি হলো জাতির আত্মা। বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে জাসাসকে নতুন করে সংগঠিত হতে হবে যেন জনগণের হৃদয়ের ভাষা রাজনীতিতে প্রতিফলিত হয়।

সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, রাজনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক মুক্তিও জরুরি। জাসাস বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগিয়ে তুলেছে, যা গণতান্ত্রিক চেতনার অংশ।

জাসাসের আহ্বায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খানের সভাপতিত্বে সভায় জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল চিন্না মিয়া হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে জাসাসের নতুন প্রকাশনা উন্মোচন করা হয়।