Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জিয়াউর রহমান নির্বিচারে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছেন : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নালিশ করে তাদের ওপরে নাকি খুব অত্যাচার। অত্যাচার তো আমরা করি নাই। অত্যাচার করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। জিয়াউর রহমান এসে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে। সেনা বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসার, সৈনিক থেকে শুরু করে প্রায় ৫ হাজার মানুষকে নির্বিচারে ফাঁসি দিয়েছে, গুলি করেছে, হত্যা করেছে। পরিবারগুলো তাদের লাশও পায়নি। সব লাশ গুম হয়ে গেছে।

সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যার যা কিছু আছে তা নিয়ে এদেশের মানুষ লড়াই করতে নেমে গিয়েছিল। বাংলাদেশের যুদ্ধটা একটি জনযুদ্ধ ছিল। যারা ট্রেনিং নিয়ে দেশে এসেছে, দেশের মানুষকে তৈরি করেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে বাধা দিয়েছে। ট্রেনিংপ্রাপ্ত শুধু তা নয়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও মাঠে নেমে গিয়েছিল। যে যেভাবে পেরেছে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। যেহেতু এটা গেরিলা যুদ্ধ, গেরিলা যোদ্ধারা যখন দেশে ঢুকেছে, এদেশের মা-বোনেরা রান্না করে খাওয়ার দেওয়া, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থানের তথ্য দেওয়া; সেই কাজগুলো করেছে। একটা জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা এদেশে স্বাধীনতার বিজয় অর্জন করতে পেরেছি।

সরকারপ্রধান বলেন, অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করা এবং প্রথমে লেবাস পড়ে ক্ষমতা যাওয়া, রাজনীতিকে গালি দিয়ে ক্ষমতা দখল করে, আবার সেই লেবাস খুলে নিজেরাই রাজনীতিবিদ হয়ে যাওয়া আর ক্ষমতা উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দখল গঠন করার কালচারটাই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে। অবৈধ দখলকারীদের হাতে তৈরি করা যে সংগঠন তারা নাকি গণতন্ত্র চায়। যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি। যাদের জন্ম মিলিটারি ডিক্টেটেডের মধ্য দিয়ে, তারা আবার গণতন্ত্র চায়। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র দেয়নি, তারা গণতন্ত্র দেবে। গণতন্ত্রের জন্য নাকি তারা লড়াই করে। ওদের জিজ্ঞেস করতে হয়, তাদের জন্মটা কোথায়? অবৈধ দখলদারি এটা তো আমাদের কথা না। আমাদের উচ্চ আদালত বলে দিয়েছে যে, জিয়া-এরশাদ সম্পূর্ণ অবৈধ। তারপর তারাও নাকি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামও করে।

গণতন্ত্রের দাবিতে বিএনপির চলমান আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি, মিলিটারির পকেট থেকে যাদের জন্ম, তারা না-কি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে থাকাকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে এর কোনো প্রতিশোধ নেয়নি।

তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫৩ বছর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই ১৯৪৮ সালে আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন সেই আন্দোলনের পথ বেয়েই তিনি ধীরে ধীরে এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন।

তিনি আরো বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবা না’, বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনাই। ভবিষ্যতেও পারবে না।

সরকারপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের রাষ্ট্র দিয়েছেন, জাতি হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন, বিশ্ব দরবারে আত্মপরিচয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি তাঁর নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের শোষিত, বঞ্চিত মানুষদের জন্য, যে তাদের ভাগ্য তিনি পরিবর্তন করবেন। গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন।

রমজানে বিএনপি ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচির কথা তুলে ধরে মানুষকে এই মাসে ‘রেহাই’ দিতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোজার মাসে মানুষকে একটু রেহাই দাও। সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা। তারা আন্দোলন করবে! তার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে! আসলে একটা কথা তাদের বলতে চাই, খালেদা জিয়ার আমলে শ্রমিকরা আন্দোলন করেছিল মজুরি বৃদ্ধির জন্য। রমজান মাসে। তাদের কষ্ট ছিল, তারা খাবার কিনে খেতে পারে না। সেজন্য তারা আন্দোলন করেছিল। সেই আন্দোলন করার কারণে খালেদা জিয়া শ্রমিকদের গুলি করে হত্যা করেছিল।

সরকারপ্রধান বলেন, যারা রমজান মাসে মানুষকে গুলি করে হত্যা করতে পারে, যারা রমজানের মধ্যে মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে, তারা রমজানের সম্মানে রাখবে কোথা থেকে?

বিএনপির রমজান বলতে কিছু নাই উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এজন্যই তারা রমজানে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।

রমজানে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা রমজান ইফতার পার্টি করতাম। এবার রমজানে আমরা ইফতার পার্টির না করে সব টাকা এবং খাদ্য সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। মানুষের কল্যাণে কাজ করি।

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় থাকতে দেশের মানুষকে কী দিয়েছে? দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারেনি। নিজেরা নিয়েছেন। কী পরিমাণ নিয়েছে সেটা তো আগেই বলেছি। আর বলতে চাই না। এ দেশের মানুষের সেটা জানা উচিত। তারা কীভাবে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে। আজকে আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির আমলে ৬২ হাজার কোটি টাকা ছিল বাজেট। যেটা আমরা ছয় হাজার কোটি টাকার বাজেট দিতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ওয়াদা করেছিলাম বাংলাদেশের প্রতি ঘর আলোকিত করব। আজকে আমরা বিদ্যুৎ দিয়েছি। এখানেও প্রশ্ন উঠেছে। দুর্নীতি খোঁজে। দুর্নীতি করে কী এত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়? ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়া যায়? দুর্নীতি তো খালেদা জিয়া সরকার করেছিল। আর করেছিল বলেই ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।’

বিএনপি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যাদের মধ্যে সামান্য মনুষত্ব আছে তারা কিভাবে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে? আপনার বলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের অগণিত মানুষের প্রতি তারা অত্যাচার করেছে। আমরা তো তাদের মিছিল-মিটিং করতে দিচ্ছি। আওয়ামী লীগ নেতাদের মাঠে নামতে দেয়নি। এখন তারা দেশের গণতন্ত্রের কথা বলে। তাদের ওপর নাকি অত্যাচার করা হয়। ওরা আমাদের সঙ্গে যা করেছে, তার যদি এক ভাগও আমরা করি তাহলে ওদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ছবি: ফোকাস বাংলা

‘আমরা তো প্রতিশোধ নিতে যাই নাই। ওরা যে অন্যায় করেছে, আমরা করিনি। আমরা মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’-যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

কথা বলতে দেওয়া হয় না বিএনপি যে দাবি করেছে তা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, সব কথা বলেও তারা বলে কথা বলতে দেয় না!

বিএনপি দেশের ভেতরে ও বাইরে নালিশ করে বেড়াচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, শুধু দেশের ভেতরেই নানা, দেশের বাইরে গিয়েও তারা নালিশ করে। এটাই তাদের চরিত্র। তারা মনে করে বিদেশিরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। বাংলার মানুষ এখন অনেক সজাগ, অনেক সচেতন।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাম্বাসেডর মোহাম্মদ জমির, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

জিয়াউর রহমান নির্বিচারে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছেন : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০২:২৫:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নালিশ করে তাদের ওপরে নাকি খুব অত্যাচার। অত্যাচার তো আমরা করি নাই। অত্যাচার করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। জিয়াউর রহমান এসে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে। সেনা বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসার, সৈনিক থেকে শুরু করে প্রায় ৫ হাজার মানুষকে নির্বিচারে ফাঁসি দিয়েছে, গুলি করেছে, হত্যা করেছে। পরিবারগুলো তাদের লাশও পায়নি। সব লাশ গুম হয়ে গেছে।

সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যার যা কিছু আছে তা নিয়ে এদেশের মানুষ লড়াই করতে নেমে গিয়েছিল। বাংলাদেশের যুদ্ধটা একটি জনযুদ্ধ ছিল। যারা ট্রেনিং নিয়ে দেশে এসেছে, দেশের মানুষকে তৈরি করেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে বাধা দিয়েছে। ট্রেনিংপ্রাপ্ত শুধু তা নয়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও মাঠে নেমে গিয়েছিল। যে যেভাবে পেরেছে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। যেহেতু এটা গেরিলা যুদ্ধ, গেরিলা যোদ্ধারা যখন দেশে ঢুকেছে, এদেশের মা-বোনেরা রান্না করে খাওয়ার দেওয়া, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থানের তথ্য দেওয়া; সেই কাজগুলো করেছে। একটা জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা এদেশে স্বাধীনতার বিজয় অর্জন করতে পেরেছি।

সরকারপ্রধান বলেন, অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করা এবং প্রথমে লেবাস পড়ে ক্ষমতা যাওয়া, রাজনীতিকে গালি দিয়ে ক্ষমতা দখল করে, আবার সেই লেবাস খুলে নিজেরাই রাজনীতিবিদ হয়ে যাওয়া আর ক্ষমতা উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দখল গঠন করার কালচারটাই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে। অবৈধ দখলকারীদের হাতে তৈরি করা যে সংগঠন তারা নাকি গণতন্ত্র চায়। যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি। যাদের জন্ম মিলিটারি ডিক্টেটেডের মধ্য দিয়ে, তারা আবার গণতন্ত্র চায়। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র দেয়নি, তারা গণতন্ত্র দেবে। গণতন্ত্রের জন্য নাকি তারা লড়াই করে। ওদের জিজ্ঞেস করতে হয়, তাদের জন্মটা কোথায়? অবৈধ দখলদারি এটা তো আমাদের কথা না। আমাদের উচ্চ আদালত বলে দিয়েছে যে, জিয়া-এরশাদ সম্পূর্ণ অবৈধ। তারপর তারাও নাকি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামও করে।

গণতন্ত্রের দাবিতে বিএনপির চলমান আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি, মিলিটারির পকেট থেকে যাদের জন্ম, তারা না-কি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে থাকাকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে এর কোনো প্রতিশোধ নেয়নি।

তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫৩ বছর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই ১৯৪৮ সালে আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন সেই আন্দোলনের পথ বেয়েই তিনি ধীরে ধীরে এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন।

তিনি আরো বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবা না’, বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনাই। ভবিষ্যতেও পারবে না।

সরকারপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের রাষ্ট্র দিয়েছেন, জাতি হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন, বিশ্ব দরবারে আত্মপরিচয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি তাঁর নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের শোষিত, বঞ্চিত মানুষদের জন্য, যে তাদের ভাগ্য তিনি পরিবর্তন করবেন। গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন।

রমজানে বিএনপি ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচির কথা তুলে ধরে মানুষকে এই মাসে ‘রেহাই’ দিতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোজার মাসে মানুষকে একটু রেহাই দাও। সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা। তারা আন্দোলন করবে! তার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে! আসলে একটা কথা তাদের বলতে চাই, খালেদা জিয়ার আমলে শ্রমিকরা আন্দোলন করেছিল মজুরি বৃদ্ধির জন্য। রমজান মাসে। তাদের কষ্ট ছিল, তারা খাবার কিনে খেতে পারে না। সেজন্য তারা আন্দোলন করেছিল। সেই আন্দোলন করার কারণে খালেদা জিয়া শ্রমিকদের গুলি করে হত্যা করেছিল।

সরকারপ্রধান বলেন, যারা রমজান মাসে মানুষকে গুলি করে হত্যা করতে পারে, যারা রমজানের মধ্যে মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে, তারা রমজানের সম্মানে রাখবে কোথা থেকে?

বিএনপির রমজান বলতে কিছু নাই উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এজন্যই তারা রমজানে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।

রমজানে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা রমজান ইফতার পার্টি করতাম। এবার রমজানে আমরা ইফতার পার্টির না করে সব টাকা এবং খাদ্য সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। মানুষের কল্যাণে কাজ করি।

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় থাকতে দেশের মানুষকে কী দিয়েছে? দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারেনি। নিজেরা নিয়েছেন। কী পরিমাণ নিয়েছে সেটা তো আগেই বলেছি। আর বলতে চাই না। এ দেশের মানুষের সেটা জানা উচিত। তারা কীভাবে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে। আজকে আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির আমলে ৬২ হাজার কোটি টাকা ছিল বাজেট। যেটা আমরা ছয় হাজার কোটি টাকার বাজেট দিতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ওয়াদা করেছিলাম বাংলাদেশের প্রতি ঘর আলোকিত করব। আজকে আমরা বিদ্যুৎ দিয়েছি। এখানেও প্রশ্ন উঠেছে। দুর্নীতি খোঁজে। দুর্নীতি করে কী এত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়? ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়া যায়? দুর্নীতি তো খালেদা জিয়া সরকার করেছিল। আর করেছিল বলেই ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।’

বিএনপি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যাদের মধ্যে সামান্য মনুষত্ব আছে তারা কিভাবে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে? আপনার বলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের অগণিত মানুষের প্রতি তারা অত্যাচার করেছে। আমরা তো তাদের মিছিল-মিটিং করতে দিচ্ছি। আওয়ামী লীগ নেতাদের মাঠে নামতে দেয়নি। এখন তারা দেশের গণতন্ত্রের কথা বলে। তাদের ওপর নাকি অত্যাচার করা হয়। ওরা আমাদের সঙ্গে যা করেছে, তার যদি এক ভাগও আমরা করি তাহলে ওদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ছবি: ফোকাস বাংলা

‘আমরা তো প্রতিশোধ নিতে যাই নাই। ওরা যে অন্যায় করেছে, আমরা করিনি। আমরা মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’-যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

কথা বলতে দেওয়া হয় না বিএনপি যে দাবি করেছে তা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, সব কথা বলেও তারা বলে কথা বলতে দেয় না!

বিএনপি দেশের ভেতরে ও বাইরে নালিশ করে বেড়াচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, শুধু দেশের ভেতরেই নানা, দেশের বাইরে গিয়েও তারা নালিশ করে। এটাই তাদের চরিত্র। তারা মনে করে বিদেশিরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। বাংলার মানুষ এখন অনেক সজাগ, অনেক সচেতন।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাম্বাসেডর মোহাম্মদ জমির, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম।