আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোরে ঐতিহাসিক ফ্রান্সিস স্কট কী ব্রিজের সঙ্গে একটি বড় জাহাজের সংঘর্ষ হয়। এর ফলে সেতুর একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। এতে সেতুর ওপরে থাকা বেশ কয়েকটি যানবাহন পানিতে পড়ে গেছে।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) স্থানীয় সময় বেলা দেড়টা নাগাদ ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
এখন পর্যন্ত হতাহতের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে অন্তত সাত ব্যক্তি ও অনেক গাড়ি পাতাপস্কো নদীতে পড়ে গেছে। তাই বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ভয়ঙ্কর মুহূর্তটি ধরা পড়েছে। এই ব্রিজটি এলাকার যাত্রীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম। বড় জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে যেভাবে এটি ভেঙে পড়েছে, তাতে সবাই অবাক। সংঘর্ষের পরই আগুনের গোলা দেখা যায়। জাহাজটিতে সঙ্গে সঙ্গে আগুন লেগে যায় এই সেখানেই এটি ডুবে যায়।
খবরে বলা হয়েছে, আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে সেতুটির কিছু অংশকেও। যার ফলে ধ্বংসাবশেষ নদীর জলে এসে পড়ে এবং যানবাহন ধ্বংসস্তূপে আটকে যায়।
মেরিল্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন অথরিটি ঘটনার পর ফ্রান্সিস স্কট কী ব্রিজটিতে যান চলাচলের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। কর্তৃপক্ষ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘আই-৬৯৫ সেতুর ঘটনার ফলে উভয় দিকের সমস্ত লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ‘রাত দেড়টার দিকে জাহাজটি সেতুতে ধাক্কা খায়। এতে জাহাজটি ডুবে যাওয়ার আগে আগুন ধরে যায়। এর ফলে একাধিক গাড়ি পানিতে পড়ে যায়।’
ম্যারিল্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি সমাজমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আই-৬৯৫ কি ব্রিজের ঘটনার জন্য সব লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যান চলাচল ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
বাল্টিমোরের মেয়র জানিয়েছেন, জরুরি বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
বাল্টিমোর ফায়ার ডিপার্টমেন্টের যোগাযোগ পরিচালক কেভিন কার্টরাইট রাত ৩টার দিকে বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, জরুরি বিভাগের কর্মীরা পানিতে পড়ে যাওয়া অন্তত সাতজনকে খুঁজছেন।
তিনি বলেন, রাত দেড়টার দিকে ৯১১ নম্বরে কল আসে। তারা খবর পায় বাল্টিমোর থেকে বহির্গামী একটি জাহাজ ব্রিজের একটি কলামে ধাক্কা খেয়েছে। দুর্ঘটনাটি ঘটার সময় ব্রিজের ওপর একাধিক যানবাহন ছিল।
কার্টরাইট আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার। কতজন দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে একে তিনি ‘ক্রমবর্ধমান গণহতাহতের ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন।
উদ্ধারকারী বাহিনী এই দুর্ঘটনায় হতাহতদের উদ্ধারে কাজ করছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করছে কর্তৃপক্ষ। ওই রুটের ট্র্যাফিককে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনায় ওই অঞ্চলের পরিবহন নেটওয়ার্কের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সেতু বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে যাত্রী ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বেশ সমস্যার সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। যাত্রী চলাচল কবে স্বাভাবিক হবে, তা এখনই বলতে পারছেন না কর্মকর্তারা।