স্পোর্টস ডেস্ক :
ইউরো শুরুর আগেই ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন টনি ক্রুস। জার্মানির বিদায়ঘণ্টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়ে যায় ক্রুসের ক্যারিয়ার। ক্রুসের পর জার্মানদের সোনালি প্রজন্মের আরেক ফুটবলার টমাস মুলারেরও শেষ হয়ে যায় আন্তর্জাতিক ফুটবলের পথচলা।
জার্মানির হয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপজয়ী মুলার সোমবার (১৫ জুলাই) ভিডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেন।
ভিডিও বার্তায় মুলার বলেন, জাতীয় দলের হয়ে ১৩১ ম্যাচে ৪৫ গোল করার পর আমি বিদায় জানাচ্ছি। নিজের দেশের হয়ে খেলে আমি সব সময়ই গর্ববোধ করেছি। একসঙ্গে উদযাপন করেছি ও কেঁদেছি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে দীর্ঘ যাত্রা নিয়ে জার্মান তারকা ফরোয়ার্ড বলেন, আন্তর্জাতিক ফুটবলে যখন ১৪ বছর আগে পথচলা শুরু হয়, এত দূর আসার কথা কল্পনা করতে পারিনি। ভক্ত-সমর্থকসহ জার্মানির সতীর্থরা বছরের পর বছর যে সমর্থন দিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাই।
জার্মানির বয়সভিত্তিক দল থেকে ২০১০ সালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচে মূল দলে অভিষেক হয় মুলারের। জাতীয় দলে ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে খেলেছেন তৃতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ। লোথার ম্যাথাউস (১৫০) ও মিরোস্লাভ ক্লোসাই (১৩৭) তাঁর চেয়ে বেশি খেলেছেন।
২০১০ বিশ্বকাপে জার্মানির সেমিফাইনালে ওঠার পথে ৫ গোল করে দারুণ অবদান রেখেছিলেন মুলার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন জাতীয় দলের হয়ে প্রথম গোল, জিতেছিলেন গোল্ডেন বুটও। এবার ইউরোয় স্পেনের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ২-১ গোলে হারের ম্যাচটাই জার্মানির জার্সিতে হয়ে রইল মুলারের শেষ ম্যাচ। ৮০ মিনিটে বদলি হয়ে মাঠে নেমেছিলেন ৩৪ বছর বয়সী এই বায়ার্ন মিউনিখ ফরোয়ার্ড। জার্মানির হয়ে ৮টি বড় টুর্নামেন্ট খেলে শুধু বিশ্বকাপই জিততে পেরেছেন।
সেপ্টেম্বরে ৩৫ বছরে পা রাখতে যাওয়া মুলার ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘১৪ বছর আগে জার্মানির হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলার সময় এসব কোনো কিছুর স্বপ্ন দেখিনি। দেশের হয়ে খেলতে সব সময়ই গর্ব বোধ করেছি। আমরা একসঙ্গে উপভোগ করেছি, দুঃখও ভাগ করেছি।’
স্টুটগার্টে ৫ জুলাই স্পেনের বিপক্ষে সেই হারের পর অশ্রুসিক্ত মুলার অবসরের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। জার্মানির কোচ ইউলিয়ান নাগলসমানের সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়েছিলেন। তরুণদের সুযোগ করে দিতে অবসর নেওয়ার ‘সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত’ নিতে এটাই সঠিক সময় কি না, সে বিষয়ে আলোচনার কথা বলেছিলেন মুলার। তিনি অবসর ঘোষণার পর জার্মানির ২০১৪ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যদের মধ্যে শুধু গোলকিপার ম্যানুয়েল নয়্যারই টিকে রইলেন। ১০ বছর আগে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপেও ৫ গোল করেছিলেন মুলার। গ্রুপ পর্বে পর্তুগালের বিপক্ষে করেছিলেন হ্যাটট্রিক।
সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে ঐতিহাসিক ৭-১ গোলের সেই জয়েও গোল করেছিলেন। ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে ছিলেন পুরো ১২০ মিনিট। ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে ৩টি করে ম্যাচ খেলে গোল করতে পারেননি। এবার ইউরোয় বেঞ্চ থেকে নেমে দুটি ম্যাচ খেলেছেন মুলার। জাতীয় দল ছাড়লেও বায়ার্নের হয়ে খেলা চালিয়ে যাবেন তিনি। বায়ার্নের সঙ্গে তাঁর চুক্তির মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত।