নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর নয়াপল্টনে গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় করা মামলায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এদিন বেলা ২টা ৪০ মিনিটে ফখরুলের জামিন শুনানি শুরু হয়; চলে ৩টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত। শুনানির জন্য ফখরুলকে এদিন কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়নি।
মির্জা ফখরুলের পক্ষে জামিন শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মো. আসাদুজ্জামান, মো. মোহসিন মিয়া, গোলাম মোস্তফা খান, মোসলেহ উদ্দিন জসিম, খোরশেদ মিয়া আলম, ওমর ফারুক ফারুকী, ইকবাল হোসেন, হযরত আলী, জয়নুল আবেদীন মেজবাহসহ আরও কয়েকজন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু ও শেখ হেমায়েত উদ্দিন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। জামিন নামঞ্জুরের আদেশের পর বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত প্রঙ্গনে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এর আগে গত ২০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদেরের আদালতে তার জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল।
মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু অসুস্থ থাকায় শুনানি পেছানোর জন্য আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আজকের দিন ধার্য করেন।
শুনানিতে মাসুদ আহমেদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। কথিত ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের কাউকে এ মামলায় সাক্ষী করা হয়নি, যাদের সাক্ষী করা হয়েছে তাদের ঢাকায় কোনো ঠিকানা নাই। মির্জা ফখরুল অসুস্থ, ৮১ বছর বয়স, হার্টে চারটা ব্লক আছে। তাকে জামিন দেওয়া হোক।
অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান শুনানিতে বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলার মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে, যাতে তিনি জুডিশিয়ারিতে কোনো সহানুভূতি না পান।
অন্যদিকে ফখরুলের জামিনের বিরোধিতা করেন মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু। তিনি বলেন, আসামি হওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন হয় না, নির্দেশনা বা ওই কাজের জন্য প্ররোচিত করলেও তিনি মামলার আসামি হবেন।
এর আগে গত ২ নভেম্বর মির্জা ফখরুলের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ জামিনের এ আবেদন করেন। গত ২৯ অক্টোবর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিএমএম আদালত। একইদিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তার গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগে বিএনপির নেতাকর্মীরা গাছের ডাল ভেঙে ও লাঠি দিয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের নামফলক, গেটে হামলা চালায়। তারা ভেতরে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এ ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করে পুলিশ। ফখরুল-আব্বাস ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।