ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি :
দীর্ঘ ২০ দিন কারাভোগের পর জামিনে কারামুক্ত হলেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মো. ঈসমাইল হোসেন।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় জামিন লাভের পর তিনি ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন। এসময় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান স্বজনরা।
এর আগে এদিন দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা জজ আদালতে মামলার শুনানি শেষে বিচারক মমতাজ বেগম ঈসমাইলের অন্তর্র্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য অ্যাডভোকেট একেএম মাইনুল হক মিলন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বাদীর অভিযোগের সঙ্গে ভিকটিমের জবানবন্দি সাংঘর্ষিক। মূলত ভিকটিম ঈসমাইলের দ্বিতীয় স্ত্রী। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একটি মহলের প্ররোচণায় এই মামলাটি দায়ের হয়েছে। তবে মামলার শুনানি শেষে আদালতে তাকে জামিন দিয়েছেন।
এদিকে, জামিন লাভের পর ঈসমাইলকে কারাগারের ফটকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তার সহকর্মী ও স্বজনরা।
ইসমাইল হোসেন বলেন, কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ২০ দিন জেল খাটার পর অবশেষে মুক্ত হলাম। আমার উত্থান অনেকেই মেনে নিতে পারছে না। আগে গরিব ছিলাম এখন ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করে টাকাপয়সা ইনকাম করে ভালোভাবে চলছি, এটা অনেকে সহ্য করতে পারছে না। এই কুচক্রী মহল আমার দ্বিতীয় স্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা সাজিয়েছে। তবে মিথ্যা বেশি দিন টেকে না। সত্য বের হয়ে আসবেই।
তিনি বলেন, প্রথম স্ত্রীর সম্মতিতে পারিবারিকভাবে গত বছরের ২৪ জুলাই হালুয়াঘাটের পূর্ব খন্দকপাড়ার জিয়াউর রহমানের মেয়ে শারমিনকে বিয়ে করি। শারমিনের বাবা ঢাকা থেকে তাকে নিয়ে আসার পথে ফুলপুরে কাজি ইমরান হোসেনের অফিসে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। কাজি ইমরান হোসেনও এই কুচক্রী মহলের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে হাত মিলিয়েছে। বিয়ের সময় শারমিনের বয়স ছিল সতেরো। বয়স ১৮ না হওয়ায় কাজি ইমরান হোসেন ভলিউমের ফাঁকা পৃষ্ঠায় আমাদের স্বাক্ষর নেয়। মামলা হওয়ার পর বিয়ের কথা অস্বীকার করেন ওই কাজি। এই সুযোগে কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে শারমিন আমার নামে ধর্ষণের মামলা করে।
তিনি আরও বলেন, মিথ্যা মামলায় আমার কিছু হবে না, এটা আমি ভালো করেই জানতাম। আমার ভক্ত এবং অনুরাগীরা আমার সঙ্গে আছে, এটা জেল থেকে মুক্ত হয়ে আরও বেশি করে বুঝতে পেরেছি। আশা করছি, এখন থেকে আরও ভালো ভালো ভিডিও ভক্তদের উপহার দিতে পারবো।
ইসমাইলের ভাই এনামুল হক বলেন, ‘আমার ভাই ষড়যন্ত্রের মামলার শিকার হয়েছেন। তবে মিথ্যা মামলা থেকে তিনি চূড়ান্তভাবে রেহাই পাবেন, এটা আমরা বিশ্বাস করি। তার কারামুক্তিতে ভক্ত-অনুরাগী, পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে খুশির আমেজ বিরাজ করছে।’
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিনের করা ধর্ষণের মামলায় গত ১০ জুলাই ইসমাইল হোসেনকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানা পুলিশ আটক করে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। ২০ দিন কারাভোগের পর ৩০ জুলাই মুক্ত হন ইসমাইল।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইসমাইল ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার কালিয়ানাকান্দা গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে। তার দাম্পত্য জীবনে দ্বিতীয় স্ত্রী ছাড়াও প্রথম স্ত্রীসহ দুটি সন্তান রয়েছে। গ্রামীণ পরিবেশে বিভিন্ন মজার মজার কনটেন্ট তৈরি করে আলোচনায় আসেন তিনি।