Dhaka শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাবির ছাত্রী হল থেকে যুবক আটক

  • জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : ০২:২৮:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৮৯ জন দেখেছেন

জাবি প্রতিনিধি : 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলের একটি কক্ষ থেকে বহিরাগত এক যুবককে আটক করেছে হল কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।

আটক যুবকের নাম আশরাফুল ইসলাম পারভেজ ওরফে যাযাবর পারভেজ। তার বাড়ি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানায়।

হল কর্তৃপক্ষ ও আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, রাত আনুমানিক ১০টার দিকে প্রথম বর্ষের (৫২তম ব্যাচ) এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্লাজু, প্যান্ট ও মুখে ঘোমটা দিয়ে হলে প্রবেশ করেন ওই যুবক।

হল কর্তৃপক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি ও হলের আবাসিক ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম ব্যাচের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের এক ছাত্রীর সঙ্গে কপালে টিপ, প্লাজু ও মুখে ঘোমটা দিয়ে হলের ভেতরে প্রবেশ করেন আশরাফুল ইসলাম পারভেজ।

এ সময় হলের তৃতীয় তলার কয়েকজন শিক্ষার্থী তার পোশাক ও হাঁটার ধরন দেখে সন্দেহ করেন। পরে এক শিক্ষার্থী হল সুপারকে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে বলেন। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে হল সুপার ওই কক্ষে গিয়ে অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম পারভেজ এবং ওই শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পান। এ সময় শিক্ষার্থীরা ও হল কর্তৃপক্ষ আশরাফুল পারভেজ ও ওই নারী শিক্ষার্থীকে আটক করেন।

আটকের পর আশরাফুল ইসলাম পারভেজকে শাড়ি ও লিপস্টিক পরিয়ে দেন হলের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় হল কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে জানালে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে রাত পৌনে ২টার আশরাফুল ইসলাম পারভেজকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

আটক আশরাফুল ইসলাম পারভেজ নিজেকে ওই ছাত্রীর বন্ধু দাবি করে বলেন, আমাদের সাত বছরের বন্ধুত্ব। আমি হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছি। হলে আসার সময় আমি কপালে টিপ দিয়ে, মুখ ও শরীর চাদরে মুড়িয়ে প্রবেশ করি।

ওই নারী শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিম উৎসবে সে এসেছিল। রাতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে আমি হলে নিয়ে এসেছি। আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের হল সুপার নাদিয়া সুলতানা বলেন, হলের মেয়েরা ওই ছাত্রীর কক্ষে কোনো পুরুষের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আমাকে জানালে তাৎক্ষণিকভাবে আমি একজন নারী কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাই। দরজা খোলার পর আমি ওই যুবককে কক্ষে দেখতে পেয়ে তৎক্ষণাৎ হল প্রাধ্যক্ষকে জানাই।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযুক্তদের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আটক ছেলেকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করবে। এছাড়া হলের অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে হল প্রশাসন। তাকে সেইফটির জন্য পরিবারের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। রোববারের মধ্যে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া বহিরাগত প্রবেশ করাসহ যারা যারা এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান প্রক্টর।

এদিকে ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রীদের আবাসিক হলের নিরাপত্তা জোরদার করা এবং হলের শৃঙ্খলা ভঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বের হওয়া মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

জাবির ছাত্রী হল থেকে যুবক আটক

প্রকাশের সময় : ০২:২৮:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

জাবি প্রতিনিধি : 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলের একটি কক্ষ থেকে বহিরাগত এক যুবককে আটক করেছে হল কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।

আটক যুবকের নাম আশরাফুল ইসলাম পারভেজ ওরফে যাযাবর পারভেজ। তার বাড়ি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানায়।

হল কর্তৃপক্ষ ও আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, রাত আনুমানিক ১০টার দিকে প্রথম বর্ষের (৫২তম ব্যাচ) এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্লাজু, প্যান্ট ও মুখে ঘোমটা দিয়ে হলে প্রবেশ করেন ওই যুবক।

হল কর্তৃপক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি ও হলের আবাসিক ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম ব্যাচের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের এক ছাত্রীর সঙ্গে কপালে টিপ, প্লাজু ও মুখে ঘোমটা দিয়ে হলের ভেতরে প্রবেশ করেন আশরাফুল ইসলাম পারভেজ।

এ সময় হলের তৃতীয় তলার কয়েকজন শিক্ষার্থী তার পোশাক ও হাঁটার ধরন দেখে সন্দেহ করেন। পরে এক শিক্ষার্থী হল সুপারকে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে বলেন। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে হল সুপার ওই কক্ষে গিয়ে অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম পারভেজ এবং ওই শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পান। এ সময় শিক্ষার্থীরা ও হল কর্তৃপক্ষ আশরাফুল পারভেজ ও ওই নারী শিক্ষার্থীকে আটক করেন।

আটকের পর আশরাফুল ইসলাম পারভেজকে শাড়ি ও লিপস্টিক পরিয়ে দেন হলের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় হল কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে জানালে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে রাত পৌনে ২টার আশরাফুল ইসলাম পারভেজকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

আটক আশরাফুল ইসলাম পারভেজ নিজেকে ওই ছাত্রীর বন্ধু দাবি করে বলেন, আমাদের সাত বছরের বন্ধুত্ব। আমি হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছি। হলে আসার সময় আমি কপালে টিপ দিয়ে, মুখ ও শরীর চাদরে মুড়িয়ে প্রবেশ করি।

ওই নারী শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিম উৎসবে সে এসেছিল। রাতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে আমি হলে নিয়ে এসেছি। আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের হল সুপার নাদিয়া সুলতানা বলেন, হলের মেয়েরা ওই ছাত্রীর কক্ষে কোনো পুরুষের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আমাকে জানালে তাৎক্ষণিকভাবে আমি একজন নারী কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাই। দরজা খোলার পর আমি ওই যুবককে কক্ষে দেখতে পেয়ে তৎক্ষণাৎ হল প্রাধ্যক্ষকে জানাই।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযুক্তদের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আটক ছেলেকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করবে। এছাড়া হলের অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে হল প্রশাসন। তাকে সেইফটির জন্য পরিবারের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। রোববারের মধ্যে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া বহিরাগত প্রবেশ করাসহ যারা যারা এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান প্রক্টর।

এদিকে ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রীদের আবাসিক হলের নিরাপত্তা জোরদার করা এবং হলের শৃঙ্খলা ভঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বের হওয়া মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়।