Dhaka শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শিগেরু ইশিবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

জাপানের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিগেরু ইশিবাকে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) আইনপ্রণেতারা।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

বিবিসি জানায়, দেশটির পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। তাই দলটির আইনপ্রণেতারা শিগেরু ইশিবাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী ১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা হবে।

ভোটে জয়লাভের পর এলডিপির আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যে এক আবেগঘন বার্তায় ইশিবা বলেছেন, জনগণের ওপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে। সাহস ও দায়িত্ববোধের সঙ্গে সত্যের পথে থাকতে হবে। আমরা সবাই যেন আবার হাসিমুখে বাঁচতে পারি, সেটা নিশ্চিতে জাপানকে নিরাপদ করে তুলতে আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাব।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে প্রায় সাত দশকব্যাপী জাপান শাসন করছে এলডিপি। পার্লামেন্টে তাদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় দলের নেতাই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে প্রায় নিশ্চিতভাবে বলা যায়। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন ইশিবা।

গত দুই সপ্তাহ ধরে এলডিপির নেতৃত্বে আসতে প্রচারণা চালিয়েছেন ৯ জন প্রার্থী। শুক্রবার টোকিওতে নতুন নেতা নির্বাচনে ভোট দেন দলটির আইনপ্রণেতা ও আঞ্চলিক নেতারা। সেখানে ৭৩৬ ভোটের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদী নেতা তাকাইচিকে পরাজিত করেন ইশিবা।

সোমবার পদত্যাগ করবেন কিশিদা ও তার মন্ত্রীসভা। মঙ্গলবার এক বিশেষ অধিবেশনে ইশিবাকে তার দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।

এলডিপির প্রধান কার্যালয় টোকিওয় শুক্রবার নতুন নেতা নির্বাচনে ভোট দেন দলটির আইনপ্রণেতা ও আঞ্চলিক নেতারা। ইশিবার পক্ষে পড়ে ২১৫ ভোট। আর তার প্রতিপক্ষ তাকাইচি পান ১৯৪ ভোট।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা দলের তহবিল কেলেঙ্কারি এবং জনপ্রিয়তায় ধসের মুখে গত অগাস্টে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) নেতা হিসেবে তিনি পুনর্র্নিবাচিত হওয়ার চেষ্টা করবেন না বলেও জানিয়েছিলেন।

তার সরে যাওয়ার ঘোষণায় এলডিপি পার্টিতে নতুন দলীয় প্রধান ও এর ধারাবাহিকতায় দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয় তখন থেকেই।

রয়টার্স তখন জানিয়েছিল, সেপ্টেম্বরে এলডিপির নতুন একজন নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর কিশিদা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাবেন।

মূলত দুর্নীতির কেলেঙ্কারিতে এলডিপি’র জড়িয়ে পড়া, বাড়তে থাকা জীবনযাত্রা ব্যয় ও ইয়েনের মান পড়ে যাওয়ার মতো কয়েকটি কারণে কিশিদার জনসমর্থন তলনিতে নেমেছে।

গত মে মাসে তার পক্ষে জনসমর্থন নেমে মাত্র ১৫ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়ায়। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে জাপানে কোনও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সর্বনিম্ন জনসমর্থন এটি। তার জায়গায় আসতে চলা নতুন নেতা শিগেরু ইশিবা এর আগে ২০১২ সালেও প্রধানমন্ত্রীত্বের জন্য লড়েছিলেন।

সেবার জাতীয়তাবাদী নেতা শিনজো আবের কাছে তিনি পরাজিত হন। সবচেয়ে দীর্ঘ সময় জাপানের নেতৃত্ব দেওয়ার পর আততায়ীর হাতে নিহত হন আবে।

ইশিবা দাবি করেছেন, কৃষি খাতের সংস্কারসহ আরও জটিল সামাজিক সমস্যার সমাধান করে তিনি নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।

ইশিবা নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর তাকে চীনের কাছ থেকে আসা আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি হতে হবে। পাশাপাশি, জাপানের অর্থনীতিতে নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে আনার দুরূহ দায়িত্ব বর্তাবে তার ওপর।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগৈলঝাড়ায় ছাতার কারিগরদের ব্যাপক কদর

জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শিগেরু ইশিবা

প্রকাশের সময় : ০৪:১৩:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

জাপানের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিগেরু ইশিবাকে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) আইনপ্রণেতারা।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

বিবিসি জানায়, দেশটির পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। তাই দলটির আইনপ্রণেতারা শিগেরু ইশিবাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী ১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা হবে।

ভোটে জয়লাভের পর এলডিপির আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যে এক আবেগঘন বার্তায় ইশিবা বলেছেন, জনগণের ওপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে। সাহস ও দায়িত্ববোধের সঙ্গে সত্যের পথে থাকতে হবে। আমরা সবাই যেন আবার হাসিমুখে বাঁচতে পারি, সেটা নিশ্চিতে জাপানকে নিরাপদ করে তুলতে আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাব।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে প্রায় সাত দশকব্যাপী জাপান শাসন করছে এলডিপি। পার্লামেন্টে তাদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় দলের নেতাই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে প্রায় নিশ্চিতভাবে বলা যায়। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন ইশিবা।

গত দুই সপ্তাহ ধরে এলডিপির নেতৃত্বে আসতে প্রচারণা চালিয়েছেন ৯ জন প্রার্থী। শুক্রবার টোকিওতে নতুন নেতা নির্বাচনে ভোট দেন দলটির আইনপ্রণেতা ও আঞ্চলিক নেতারা। সেখানে ৭৩৬ ভোটের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদী নেতা তাকাইচিকে পরাজিত করেন ইশিবা।

সোমবার পদত্যাগ করবেন কিশিদা ও তার মন্ত্রীসভা। মঙ্গলবার এক বিশেষ অধিবেশনে ইশিবাকে তার দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।

এলডিপির প্রধান কার্যালয় টোকিওয় শুক্রবার নতুন নেতা নির্বাচনে ভোট দেন দলটির আইনপ্রণেতা ও আঞ্চলিক নেতারা। ইশিবার পক্ষে পড়ে ২১৫ ভোট। আর তার প্রতিপক্ষ তাকাইচি পান ১৯৪ ভোট।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা দলের তহবিল কেলেঙ্কারি এবং জনপ্রিয়তায় ধসের মুখে গত অগাস্টে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) নেতা হিসেবে তিনি পুনর্র্নিবাচিত হওয়ার চেষ্টা করবেন না বলেও জানিয়েছিলেন।

তার সরে যাওয়ার ঘোষণায় এলডিপি পার্টিতে নতুন দলীয় প্রধান ও এর ধারাবাহিকতায় দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয় তখন থেকেই।

রয়টার্স তখন জানিয়েছিল, সেপ্টেম্বরে এলডিপির নতুন একজন নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর কিশিদা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাবেন।

মূলত দুর্নীতির কেলেঙ্কারিতে এলডিপি’র জড়িয়ে পড়া, বাড়তে থাকা জীবনযাত্রা ব্যয় ও ইয়েনের মান পড়ে যাওয়ার মতো কয়েকটি কারণে কিশিদার জনসমর্থন তলনিতে নেমেছে।

গত মে মাসে তার পক্ষে জনসমর্থন নেমে মাত্র ১৫ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়ায়। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে জাপানে কোনও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সর্বনিম্ন জনসমর্থন এটি। তার জায়গায় আসতে চলা নতুন নেতা শিগেরু ইশিবা এর আগে ২০১২ সালেও প্রধানমন্ত্রীত্বের জন্য লড়েছিলেন।

সেবার জাতীয়তাবাদী নেতা শিনজো আবের কাছে তিনি পরাজিত হন। সবচেয়ে দীর্ঘ সময় জাপানের নেতৃত্ব দেওয়ার পর আততায়ীর হাতে নিহত হন আবে।

ইশিবা দাবি করেছেন, কৃষি খাতের সংস্কারসহ আরও জটিল সামাজিক সমস্যার সমাধান করে তিনি নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।

ইশিবা নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর তাকে চীনের কাছ থেকে আসা আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি হতে হবে। পাশাপাশি, জাপানের অর্থনীতিতে নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে আনার দুরূহ দায়িত্ব বর্তাবে তার ওপর।