রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
জাতীয় পার্টি শেষ সময় পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ মানুষ যদি মনে করে নির্বাচনটা ভালো হচ্ছে না, তখন আমাদের চিন্তা করে দেখতে হবে কী করা যায়।’
বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর মহানগরীর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজের ডাক্তার, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সঙ্গে নির্বাচনী মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের প্রার্থীরা এখনও বলছেন, তারা ভালো করবে। তাছাড়া বিপুল প্রার্থী সরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। যখন সরে যাবে তখন বলা যাবে। তবে সরে গেলে আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। তারপরেও আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার চেষ্টা করছি।
নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত খুব বেশি খারাপ বলতে পারছি না উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, তবে ভোটারদের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। বিগত দিনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, উপ-নির্বাচনে সবকিছু ভালো ছিল, মানুষ ভোটও দিয়েছে। কিন্তু ভোটের ফলাফলে আমাদের সন্দেহ ছিল। ভোটকেন্দ্র দখল, ফলাফল যেটা হওয়া উচিত ছিল সেটি হয়নি। এখন বাকিটা সামনে দেখার বিষয়। এখন পর্যন্ত তারা বলছে নির্বাচন ঠিক হবে, আগেও বলেছিল। কিছু ভরসা করেই তো নির্বাচনে আসতে হয়।
নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে জিএম কাদের বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ খুব বেশি খারাপ বলা যাবে না। তবে ভোটারদের যে আশঙ্কা তা উড়িয়ে দেওয়ার মতো না। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত বলছে ঠিক আছে এবং ঠিক থাকবে। আমরা সেই বিশ্বাস নিয়েই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। দেখি শেষ পর্যন্ত কী হয়।
তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত ভোট কিভাবে হয়, ফলাফল কিভাবে ঘোষণা করা হয়, তার ওপর নির্ভর করবে কেমন হবে নির্বাচন। আর ফলাফল কিভাবে হয়, সেটা দেখে আমরা বুঝতে পারব বা বলতে পারব জাতীয় পার্টি কতটা আসন পাবে।
জাতীয় পার্টির অন্য প্রার্থীর প্রচারণায় কেন অংশ নিচ্ছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যাওয়ার মতো প্রয়োজন হয়নি। যেখানে যেখানে যাওয়ার সেখানে যাচ্ছি। তবে অন্য নির্বাচনের মতো এই নির্বাচন সেইভাবে হচ্ছে না। প্রার্থীরা নিজেরাই প্রচারণাসহ অন্যান্য কাজ করছেন।’
নির্বাচন থেকে জাপার বেশ কয়েকজন প্রার্থীর সরে যাওয়ার বিষয়ে জিএম কাদের বলেন, মিডিয়ার সামনে আমাদের দোষ দিয়ে যারা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন তা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং উদ্দেশ্যপ্রণোনিত। যারা নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন, তারা নিজেদের স্বার্থে সরে যাচ্ছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করে আগামীতে তাদের বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছি। সাধারণভাবে আমরা জানতাম ৩০০ আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো প্রার্থী আমাদের ছিল না। এখন অনেক প্রার্থী শুধু অভিজ্ঞতা ও পরিচিতির জন্য নির্বাচনে এসেছেন। আমাদের সন্দেহ রয়েছে কিছু কিছু আসনে সমঝোতা কিংবা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য নিয়ে মিডিয়ার সামনে বক্তব্য দিয়ে প্রার্থীরা সরে দাঁড়াচ্ছে কিনা। এটি সংগঠনের শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ, নির্বাচনের পর তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, আমি এখান থেকে নির্বাচন করায় মানুষ খুব খুশি। আমি এখানকারই সন্তান। অনেকের সঙ্গে আমার আত্মীয়তা আছে। অনেকেই আমার বন্ধুদের নাতি-নাতনি, অনেকেই আমার বন্ধুদের আত্মীয়। সাধারণভাবেই এখানকার জনগণ লাঙল এবং জাতীয় পার্টিকে অন্তরে ধারণ করে। এসময় জি এম কাদের হাসপাতালের সবার কাছে লাঙল প্রতীকে ভোট চান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি কর্পোরশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, মহানগর জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, লোকমান হোসেন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ স্থানীয় নেতারা।