Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় পার্টি কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় : জি এম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় পার্টি কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বলে জানি দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, যদি গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে প্রশ্ন আসে, একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্যাপক গণহত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ দায়ী সংগঠনগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে। কারণ, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গণহত্যা হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়।

শনিবার (১০ মে) রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করছে বা করতে চায়, এমন কোনো দলকে আমরা নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই। আওয়ামী লীগ সরকার যখন জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি।

জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ ও সমর্থন ছিল বলে আবারও উল্লেখ করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে জাতীয় পার্টির দুজন নেতা শহীদ হয়েছেন। আক্ষেপ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আন্দোলনে আমাদের অবদান শুধু অস্বীকার করাই হচ্ছে না, ছাত্র হত্যার মামলায় অন্যায়ভাবে আমাদের আসামিও করা হচ্ছে।’

জাতীয় পার্টি নির্বাচনে গিয়ে আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিয়েছে, এমন অভিযোগ খণ্ডন করে জি এম কাদের বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির প্রায় ২৭০ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। বিভিন্নভাবে তাঁকে নির্বাচনে থাকতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি রাজি হননি। তিনি বলেন, বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে না গেলেও ওই বছর স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আবার ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দল নির্বাচনে গিয়েছিল। তাহলে ২০১৪ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপিসহ অন্য দলগুলো কী আওয়ামী লীগ সরকারকে বৈধতা দেয়নি, এমন প্রশ্ন তুলেন তিনি।

জি এম কাদের বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমাদের দলকে ভাঙনের মুখে ফেলে, বিশেষ চাপ সৃষ্টি করে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। অনেকেই বিষয়টি জানেন। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আমরা কোনো বেআইনি কাজ করেছি বলে মনে করি না। যদি এটি জনগণের প্রত্যাশার বিরুদ্ধে গিয়ে অপরাধ হয়, তবে তার বিচারও জনগণের ভোটের মাধ্যমেই হওয়া উচিত।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক মারুফ ইসলাম প্রিন্স এবং পরিচালনা করেন সদস্য সচিব মো. আরিফ আলী। এছাড়া জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, ভাইস চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিলসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

জাতীয় পার্টি কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় : জি এম কাদের

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৭:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় পার্টি কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বলে জানি দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, যদি গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে প্রশ্ন আসে, একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্যাপক গণহত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ দায়ী সংগঠনগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে। কারণ, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গণহত্যা হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়।

শনিবার (১০ মে) রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করছে বা করতে চায়, এমন কোনো দলকে আমরা নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই। আওয়ামী লীগ সরকার যখন জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি।

জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ ও সমর্থন ছিল বলে আবারও উল্লেখ করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে জাতীয় পার্টির দুজন নেতা শহীদ হয়েছেন। আক্ষেপ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আন্দোলনে আমাদের অবদান শুধু অস্বীকার করাই হচ্ছে না, ছাত্র হত্যার মামলায় অন্যায়ভাবে আমাদের আসামিও করা হচ্ছে।’

জাতীয় পার্টি নির্বাচনে গিয়ে আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিয়েছে, এমন অভিযোগ খণ্ডন করে জি এম কাদের বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির প্রায় ২৭০ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। বিভিন্নভাবে তাঁকে নির্বাচনে থাকতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি রাজি হননি। তিনি বলেন, বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে না গেলেও ওই বছর স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আবার ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দল নির্বাচনে গিয়েছিল। তাহলে ২০১৪ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপিসহ অন্য দলগুলো কী আওয়ামী লীগ সরকারকে বৈধতা দেয়নি, এমন প্রশ্ন তুলেন তিনি।

জি এম কাদের বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমাদের দলকে ভাঙনের মুখে ফেলে, বিশেষ চাপ সৃষ্টি করে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। অনেকেই বিষয়টি জানেন। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আমরা কোনো বেআইনি কাজ করেছি বলে মনে করি না। যদি এটি জনগণের প্রত্যাশার বিরুদ্ধে গিয়ে অপরাধ হয়, তবে তার বিচারও জনগণের ভোটের মাধ্যমেই হওয়া উচিত।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক মারুফ ইসলাম প্রিন্স এবং পরিচালনা করেন সদস্য সচিব মো. আরিফ আলী। এছাড়া জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, ভাইস চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিলসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।