নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পর এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নামেও প্রহসন করছে। জাতীয় নির্বাচনের মতো বিরোধী দলসমূহ স্থানীয় নির্বাচনও বর্জন করছে। আমরা সকলকে অনুরোধ করব, ফ্যাসিবাদের সমর্থনে কেউ নির্বাচনে অংশ নিবেন না, ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ গণঅধিকার পরিষদের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি, সড়কে মৃত্যুর মিছিল, ব্যাংকিং খাতের লুটপাটসহ চলমান নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নুরুল হক নুর বলেন, ভারত খেদাও আন্দোলনই হবে হাসিনা খেদাও আন্দোলন। বাংলাদেশের জনগণ এখন শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের প্রভু ভারতের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে। ভারতীয় পণ্য বয়কটের আন্দোলনকে গ্রাম-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিয়েছে। সরকারের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। এই ভারত খেদাও আন্দোলনই হতে পারে ভারতের মদদপুষ্ট হাসিনা খেদাও আন্দোলন। তাই আজকে তাদের মাথা নষ্ট।
তিনি বলেন, আমরা যারা ভারত বিরোধী আন্দোলন করছি, যারা ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার, সরকার এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। ভারত খেদাও আন্দোলনকেই ভারতের মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগকে খেদানোর আন্দোলনে রুপান্তর করে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে হবে।
নুর আরও বলেন, শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদের ভারতের কাছে মাথা বিক্রি করে রাজনীতি করছে। ঈদের মধ্যে ইসরায়েলি বিমান বাংলাদেশে কেন এসেছে সেটি শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেররা জবাব দিতে পারবে না। ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সেই ইসরায়েলি বিমান কীভাবে বাংলাদেশে এসেছে? কারা ইসরায়েলি বিমান এনেছে? কারা তাদের অনুমতি দিয়েছে? আওয়ামী লীগ যদি চতুর্থ বারের মতো ক্ষমতায় আসে, ইসরায়েলকে তারা বাংলাদেশে কনসুলেট খুলতে অনুমতি দেবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা কুকি চিনকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। তারা এই কুকি চিনকে অস্ত্র দিয়েছে, মালপানি দিয়েছে। তারা তাদের কাজে এই কুকি চিনকে ব্যবহার করেছে। দুধ কলা দিয়ে পোষা সাপ এখন ঠোকর মেরেছে।
নুরুল হক নুর বলেন, ব্যাংকি খাতের লুটপাটের সঙ্গে সরকারের এমপি-মন্ত্রী, সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত। ব্যাঙের ছাতার মতো ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। লুটপাটের জন্য একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে পরিচালনা পর্ষদে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। জনগণ টের পাচ্ছে না, সরকার ব্যাংকগুলো ফাঁকা করে ফেলেছে। সরকারি দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা নামে-বেনামে শত শত কোটি টাকা লোন নিচ্ছে। এমনকি কিস্তি পরিশোধ না করে সেটাও লোন করে নিচ্ছে। এভাবে ব্যাংকগুলোতে লুট করছে এবং সে টাকা বিদেশে পাচার করছে। যে কারণে ডলার সংকট তৈরি হচ্ছে, লুটপাটের কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে।
নিজের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে নুর বলেন, এসব গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আমরা ভীত নই। এ সরকারের আমলে বিরোধী দলের নেতাদের নামে এমন শত শত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আর বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের অংশের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিলউজ্জামান, আব্দুজ জাহের, সহ-সভাপতি বিপ্লব কুমার পোদ্দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।