Dhaka শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই। বর্তমান সংকট অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি করেছে। মিথ্যা বলে জাতির সঙ্গে প্রতারণা না করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

শনিবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এখন তারা বলছে আগে গণভোট, পরে নির্বাচন। আমরা কখনোই নির্বাচনের পেছানোর কথা বলিনি। আমরা চাই, নির্বাচন দ্রুত হোক। জনগণকে মিথ্যা বলে প্রতারণা করবেন না।

মির্জা ফখরুল বলেন, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটি মহল একাত্তরকে ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু সেটি করার সুযোগ নেই। কারণ একাত্তরেই আমাদের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা মুক্তিযুদ্ধকে ‘গোলমাল’ বলেছিলেন। জাতি সেটা ভোলেনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হলে অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠারও সাহস পেত না। আমাদের ৩১ দফায় সব সংস্কারের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। আমরাই সংস্কারের পক্ষে। পিআর হবে কি না সে সিদ্ধান্ত আগামী সংসদ নেবে। পিআর না হলে নির্বাচন হবে না এ কথা বলে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশ কঠিন সময় পার করছে। গণভোটের প্রয়োজন ছিল না। তারপরও রাজি হয়েছি। তারা এখন গণভোট আগে চায়। নির্বাচন ঘিরে হামলা হতে পারে- এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু কারা করতে পারে তা স্পষ্ট করা উচিত ছিল।

তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে কিছু শক্তি বিভক্তি আনতে চায়। একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার অবকাশ নেই। কারণ একাত্তর আমাদের অস্তিত্ব। অতীতকে স্মরণ করেন। তারা মুক্তিযুদ্ধকে গোলমাল বলার চেষ্টা করেছিল। পাকিস্তানিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হত্যা করেছে তারা।

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধকে নিচে নামিয়ে দিয়ে চব্বিশের আন্দোলনকে বড় করে দেখাতে চায়। বিএনপি ১৫ বছর সংগ্রাম করেছে। তারা এককভাবে কৃতিত্ব দাবি করলে আমরা মানতে রাজি নই।

বিএনপি নির্বাচনমুখী দল জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিলাম। নির্বাচন হলে অপশক্তিগুলো মাথা তুলতে পারতো না।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি সংস্কারপন্থি। তারা (ঐকমত্য কমিশন) স্বাক্ষরের নোট অব ডিসেন্ট রেখেছিল। এখন তারা সেগুলো বাদ দিয়ে দিয়েছে। এটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। আমরা সংবাদ সম্মেলন করেছি। রাস্তায় নামিনি। প্রধান উপদেষ্টার বাড়ি বা নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করিনি। একটি দল আন্দোলন করে সব চাপিয়ে দিতে চায়।

শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতে বসে বিভিন্ন মিডিয়াকে শেখ হাসিনা ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ করতে চাই। কারণ তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

১৯৭১ সালকে ভুলে যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারণ, ওটাই হচ্ছে আমাদের জন্মের ঠিকানা। এই ভূখণ্ডে সেদিন একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে মর্যাদা পেয়েছিল-এটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে। ১৯৭১ আমাদের অস্তিত্ব, পরিচয় ও স্বাতন্ত্র্যের কথা।

তিনি বলেন, একটা শক্তি আছে, যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল। তারা এখন সেই ইতিহাসকে নিচে নামিয়ে দিতে চায়। তারা শুধু ২৪ জুলাইয়ের আন্দোলনকে বড় করে দেখাতে চায়। কিন্তু আমরা একদিনের জন্য নয়-দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করতে শেখ হাসিনাকে উৎখাতের জন্য ১৫ বছর ধরে সংগ্রাম করছি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ৬ বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে। আমাদের সিনিয়র নেতাদের শত শত মামলা, ১ হাজার ৭০০ নেতা-কর্মী গুম, ২ হাজার মানুষ খুন হয়েছে-শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম করা হয়েছে। আমরা সেটার বিরুদ্ধেই লড়াই করছি।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, কিছু শক্তি পরিকল্পিতভাবে বিভক্তি আনতে চায়। তারা ১৯৭১ সালকে ভুলিয়ে দিতে চায়, কারণ তারা চায় জাতির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অস্বীকার করতে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যারা আমাদের হত্যা করছিল, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রের সংস্কার শুরু করেন-একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করেন। শেখ মুজিবের পাঁচ বছরের দুঃশাসনের পরে জিয়া আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।

ফখরুল বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়ার পর খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসন থেকে সংসদীয় পদ্ধতিতে রূপান্তর করেন। আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান চালু করেন, যার অধীনে চারটি নির্বাচন সুন্দরভাবে হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটি বাতিল করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা নির্বাচনের পক্ষের দল। গণঅভ্যুত্থানের পরপরই বলেছিলাম-তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন চাই। তাহলে সংসদ গঠিত হতো, অপশক্তি মাথা তুলতে পারত না। জনগণকে বিভ্রান্ত করে, বোকা বানিয়ে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে-এটা আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরব।

তিনি বলেন, যে সনদ আমরা পাশ করেছি, তাতে বলা হয়েছিল সব রাজনৈতিক দল যেগুলোতে একমত, সেগুলো সই হবে; আর যেগুলোতে একমত হবে না, সেগুলো ‘নোট অব ডিসেন্ট’ হিসেবে থাকবে। কিন্তু এখন প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাবে সেটার উল্লেখই নেই। তারপরও আমরা দায়িত্বশীল দল হিসেবে প্রেস কনফারেন্স করেছি, কিন্তু রাস্তায় নামিনি, কাউকে ঘেরাও করিনি।

পিআর বা প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন হবে কি না, তা আগামী পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে। গণভোটের কথায় আমরা রাজি হয়েছি, যদিও প্রয়োজন ছিল না। আমরা বলেছি- নির্বাচনের দিনই গণভোট করা হোক। আলাদাভাবে গণভোট করলে হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হবে। তাই নির্বাচনে দুটি ব্যালট থাকুক-একটিতে গণভোট, আরেকটিতে সংসদ নির্বাচন।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চার ক্যাম্পাসে শিবিরের ভূমিধস জয় রহস্যজনক : নুর

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৪:১৪:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই। বর্তমান সংকট অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি করেছে। মিথ্যা বলে জাতির সঙ্গে প্রতারণা না করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

শনিবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এখন তারা বলছে আগে গণভোট, পরে নির্বাচন। আমরা কখনোই নির্বাচনের পেছানোর কথা বলিনি। আমরা চাই, নির্বাচন দ্রুত হোক। জনগণকে মিথ্যা বলে প্রতারণা করবেন না।

মির্জা ফখরুল বলেন, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটি মহল একাত্তরকে ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু সেটি করার সুযোগ নেই। কারণ একাত্তরেই আমাদের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা মুক্তিযুদ্ধকে ‘গোলমাল’ বলেছিলেন। জাতি সেটা ভোলেনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হলে অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠারও সাহস পেত না। আমাদের ৩১ দফায় সব সংস্কারের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। আমরাই সংস্কারের পক্ষে। পিআর হবে কি না সে সিদ্ধান্ত আগামী সংসদ নেবে। পিআর না হলে নির্বাচন হবে না এ কথা বলে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশ কঠিন সময় পার করছে। গণভোটের প্রয়োজন ছিল না। তারপরও রাজি হয়েছি। তারা এখন গণভোট আগে চায়। নির্বাচন ঘিরে হামলা হতে পারে- এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু কারা করতে পারে তা স্পষ্ট করা উচিত ছিল।

তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে কিছু শক্তি বিভক্তি আনতে চায়। একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার অবকাশ নেই। কারণ একাত্তর আমাদের অস্তিত্ব। অতীতকে স্মরণ করেন। তারা মুক্তিযুদ্ধকে গোলমাল বলার চেষ্টা করেছিল। পাকিস্তানিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হত্যা করেছে তারা।

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধকে নিচে নামিয়ে দিয়ে চব্বিশের আন্দোলনকে বড় করে দেখাতে চায়। বিএনপি ১৫ বছর সংগ্রাম করেছে। তারা এককভাবে কৃতিত্ব দাবি করলে আমরা মানতে রাজি নই।

বিএনপি নির্বাচনমুখী দল জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিলাম। নির্বাচন হলে অপশক্তিগুলো মাথা তুলতে পারতো না।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি সংস্কারপন্থি। তারা (ঐকমত্য কমিশন) স্বাক্ষরের নোট অব ডিসেন্ট রেখেছিল। এখন তারা সেগুলো বাদ দিয়ে দিয়েছে। এটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। আমরা সংবাদ সম্মেলন করেছি। রাস্তায় নামিনি। প্রধান উপদেষ্টার বাড়ি বা নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করিনি। একটি দল আন্দোলন করে সব চাপিয়ে দিতে চায়।

শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতে বসে বিভিন্ন মিডিয়াকে শেখ হাসিনা ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ করতে চাই। কারণ তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

১৯৭১ সালকে ভুলে যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারণ, ওটাই হচ্ছে আমাদের জন্মের ঠিকানা। এই ভূখণ্ডে সেদিন একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে মর্যাদা পেয়েছিল-এটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে। ১৯৭১ আমাদের অস্তিত্ব, পরিচয় ও স্বাতন্ত্র্যের কথা।

তিনি বলেন, একটা শক্তি আছে, যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল। তারা এখন সেই ইতিহাসকে নিচে নামিয়ে দিতে চায়। তারা শুধু ২৪ জুলাইয়ের আন্দোলনকে বড় করে দেখাতে চায়। কিন্তু আমরা একদিনের জন্য নয়-দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করতে শেখ হাসিনাকে উৎখাতের জন্য ১৫ বছর ধরে সংগ্রাম করছি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ৬ বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে। আমাদের সিনিয়র নেতাদের শত শত মামলা, ১ হাজার ৭০০ নেতা-কর্মী গুম, ২ হাজার মানুষ খুন হয়েছে-শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম করা হয়েছে। আমরা সেটার বিরুদ্ধেই লড়াই করছি।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, কিছু শক্তি পরিকল্পিতভাবে বিভক্তি আনতে চায়। তারা ১৯৭১ সালকে ভুলিয়ে দিতে চায়, কারণ তারা চায় জাতির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অস্বীকার করতে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যারা আমাদের হত্যা করছিল, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রের সংস্কার শুরু করেন-একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করেন। শেখ মুজিবের পাঁচ বছরের দুঃশাসনের পরে জিয়া আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।

ফখরুল বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়ার পর খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসন থেকে সংসদীয় পদ্ধতিতে রূপান্তর করেন। আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান চালু করেন, যার অধীনে চারটি নির্বাচন সুন্দরভাবে হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটি বাতিল করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা নির্বাচনের পক্ষের দল। গণঅভ্যুত্থানের পরপরই বলেছিলাম-তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন চাই। তাহলে সংসদ গঠিত হতো, অপশক্তি মাথা তুলতে পারত না। জনগণকে বিভ্রান্ত করে, বোকা বানিয়ে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে-এটা আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরব।

তিনি বলেন, যে সনদ আমরা পাশ করেছি, তাতে বলা হয়েছিল সব রাজনৈতিক দল যেগুলোতে একমত, সেগুলো সই হবে; আর যেগুলোতে একমত হবে না, সেগুলো ‘নোট অব ডিসেন্ট’ হিসেবে থাকবে। কিন্তু এখন প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাবে সেটার উল্লেখই নেই। তারপরও আমরা দায়িত্বশীল দল হিসেবে প্রেস কনফারেন্স করেছি, কিন্তু রাস্তায় নামিনি, কাউকে ঘেরাও করিনি।

পিআর বা প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন হবে কি না, তা আগামী পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে। গণভোটের কথায় আমরা রাজি হয়েছি, যদিও প্রয়োজন ছিল না। আমরা বলেছি- নির্বাচনের দিনই গণভোট করা হোক। আলাদাভাবে গণভোট করলে হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হবে। তাই নির্বাচনে দুটি ব্যালট থাকুক-একটিতে গণভোট, আরেকটিতে সংসদ নির্বাচন।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।