নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশি জাহাজ আটক করা সোমালিয়ার জলদস্যুদের সঙ্গে এখনো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৪ এর সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। তবে নাবিকদের ছাড়াতে মুক্তিপণ দেওয়া হবে কি না কৌশলগত কারণে এখনই তা প্রকাশ করা হবে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, জাহাজ আটকের বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদে অনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে থাকা জাহাজের সঙ্গে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের ফেরত আনতে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।
নাবিকদের ছাড়াতে মুক্তিপণ দেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নাবিকদের ছাড়াতে মুক্তিপণ দেওয়া হবে কি না, কৌশলগত কারণে তা এখনই প্রকাশ করা হবে না।
তিনি বলেন, ইউরোপকে উন্নয়নের জন্য অন্ধ অনুকরণ করা যাবে না। ইউরোপের মানবতা হারিয়ে গেছে। মানুষের সঙ্গে মানুষের মমত্ববোধও হারিয়ে গেছে সেখানে। শুধু বস্তুকেন্দ্রিক রাষ্ট্র না, আমরা একটি মানবিক রাষ্ট্র চাই। এক্ষেত্রে ইউরোপকে অন্ধ অনুকরণ করা ভুল হবে।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপে বৃদ্ধ হলে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। দুর্ঘটনা ঘটলে সাহায্য না করে, পাশ দিয়ে সাঁই সাঁই করে গাড়ি চলে যায়। কেউ ফিরেও তাকায় না। এমন অমানবিক সমাজ প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নারীরা ক্ষমতায়ন না হলে সমাজ ও রাষ্ট্র উপকৃত হয় না উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশ্বে বাংলাদেশ পঞ্চম। এশিয়া প্যাসিফিকে দ্বিতীয়। অস্ট্রেলিয়ার পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
তিনি বলেন, ‘আজ থেকে ১৫ বছর আগে দেশে কোনো নারী পুলিশ এসপি বা ডিসি হবেন- এমন কেউ চিন্তাও করেননি। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সাহসী পদক্ষেপের কারণেই। পাশাপাশি যে নারী অর্থনৈতিকভাবে মুক্ত না, সে তার নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এমনকি সন্তান নিবেন কিনা এমন সিদ্ধান্তের জন্যও নির্ভর করতে হয় পরিবারের ওপর। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি কাজ করেন নারীরা। পৃথিবীর ৭০ ভাগ কাজ নারীদের মাধ্যমে হয়ে থাকে।’ একজন নারী ঘরে-বাইরে দুই জায়গায়ই কাজ করে থাকেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে একজন নারীকে দেখতে চেয়েছেন। ভারত সফরে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে এই অভিব্যক্তি দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি নিজেও এ ব্যাপারে একাত্মতা প্রকাশ করেন বলেও এসময় জানান মন্ত্রী।