নিজস্ব প্রতিবেদক :
শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ও শেখ হাসিনা দেশে আবারও ফিরে আসবেন বলায় গণপিটুনি দিয়ে এক ব্যক্তিকে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
রোববার (১০ নভেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ওই ব্যক্তি এসে স্লোগান দিলে তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে ছাত্র জনতা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কর্মী সন্দেহে গুলিস্তানে কয়েকজনকে মারধরের পর পুলিশে দিয়েছেন ছাত্র-জনতা। ৬ জনের বেশি এই মারধরের শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।
তারা জানান, সকাল থেকেই আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী অবস্থান নেন। এ সময় সেখানে আসা কয়েকজনকে আওয়ামী লীগের কর্মী সন্দেহে মারধর করা হয়। মারধরের পর তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেন তারা। পরে পুলিশ তাদের আটক করে নিয়ে যায়। তবে তাৎক্ষণিক ভাবে আটক ব্যক্তিদের নামপরিচয় জানা যায়নি।
আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করা শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, কেউ এসে নিজেকে ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগ বললেই মারার আগে যাচাই বাছাই করা উচিৎ। যারা প্রকৃত আওয়ামী লীগ তারা গোপনে ষড়যন্ত্র করে মাঠে নিরীহ লোকদের পাঠাচ্ছেন। আর কাউকে পেলেই মারতে হবে কেন? তাকে পুলিশে দিয়ে দিলেই তো ভালো।
তিনি আরও বলেন, আমরা না থাকলে এই মুরুব্বি মারা যেত। আমরা চাইনা কোন মব জাস্টিস হোক। ফ্যাসিবাদীরা চাচ্ছে, নিরীহ লোকদের পাঠিয়ে গণপিটুনি খাওয়াতে। এতে তারা সুযোগ নেবে।
ঐতিহাসিক ১০ নভেম্বর নূর হোসেন দিবস উপলক্ষ্যে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। এ ঘোষণায় তাদের কর্মসূচি প্রতিহত করতে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল থেকে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এছাড়া জিরো পয়েন্টে ছাত্র-জনতা অবস্থান করছে।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাছিরুল আমিন জানান, কিছু লোক আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছিল। ছাত্র-জনতা তাদের ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল প্রতিহত করতে সকাল থেকেই রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ে অবস্থান নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অপর দিকে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি-যুবদল-মহিলা দলসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদেরও সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ও বঙ্গবন্ধ অ্যাভিনিউত ব্যাপক পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি জিরো পয়েন্টে একটি জলকামান এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে একটি জলকামান ও রায়ট কার দেখা গেছে। বিজিবি সদস্যদেরও গাড়ি নিয়ে পুরো এলাকা টহল দিতে দেখা গেছে।