Dhaka মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জয় দিয়ে শুরু হলেও হার দিয়ে শেষ হলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৩২:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩
  • ১৯৫ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

বিশ্বকাপে জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ, শেষ করলো হার দিয়ে। নিজেদের নবম ও শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে তাওহিদ হৃদয়ের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ৩০৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মিচেল মার্শের সেঞ্চুরি ও ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথের জোড়া ফিফটিতে ৩২ বল হাতে রেখেই সহজ জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। বড় ব্যবধানে হেরেও পয়েন্ট তালিকার অষ্টম স্থানেই রয়েছে টাইগাররা। সেই সাথে বেঁচে রইলো চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার স্বপ্ন।

৩০৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ট্রাভিস হেডকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ব্যাক অব লেন্থ থেকে লাফিয়ে উঠা বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হয়েছেন হেড। ১০ রান করে এই ওপেনার ফেরায় ভাঙে ১২ রানের উদ্বোধনী জুটি।

শুরুর ধাক্কা পাকা হাতে সামলেছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ১১৬ বলে ১২০ রান। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় অজিরা। ২৩তম ওভারে ৫৩ রান করা ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে বাংলাদেশের সাফল্য বলতে এই দুটোই। বাকি গল্পটা শুধুই অজিদের আধিপত্যের। বাড়তি এক স্পিনার নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশের কোনো মন্ত্রই এদিন মার্শের সামনে টিকেনি! মিরাজ-নাসুমদের রীতিমতো কচুকাটা করছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। রান তাড়ায় ব্যাক্তিগত সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছেন মাত্র ৮৭ বলে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন ১৩২ বলে ১৭৭ রান করে।

মার্শকে অপর প্রান্ত থেকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন স্টিভেন স্মিথ। ৬৪ বলে অপরাজিত ৬৩ রান করে মাঠ ছেড়েছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। চতুর্থ উইকেটে তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৭৫ রানের জুটিতে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।

এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ, যেটি নিয়ে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ভুগছিল তারা। এই পুনেতেই ভারতের বিপক্ষে ৯৭ রানের উদ্বোধনী জুটি মিলেছিল, এরপর দ্বিতীয়বারের মতো এই জুটি পেরোয় পঞ্চাশ। দুই ওপেনারই অবশ্য সাজঘরে ফিরেছেন হতাশাকে সঙ্গী করে। শুরুটা হয় তানজিদ হাসান তামিমকে দিয়ে।

দারুণ কিছু শট খেলার পর ৩৪ বলে ৩৬ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। শন অ্যাবটের বাউন্সার বুঝতে পারেননি তানজিদ, ক্যাচ দেন বোলার অ্যাবটের হাতেই। একই রান করে জাম্পার বলে আউট হন লিটন দাস। ৫ চারে ৪৫ বলে ৩৬ রান করে জাম্পার বলে জোর না দিয়ে লং অফে তুলে মারেন লিটন। ক্যাচ দেন লাবুশেনের হাতে।

এরপর তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের জুটিতে ভর করে বড় রানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু তার শেষটাও হয় হতাশায়। ২৮তম ওভারের পঞ্চম বল স্কয়ার লেগ অঞ্চলে ঢেলে দিয়ে দৌড় শুরু করেন শান্ত ও হৃদয়। দুজন বেশ কিছুক্ষণ ধরেই রান নেওয়ার জন্য বেশ তাড়াহুড়ো করছিলেন।

ওই বলটিতে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে আউট হন শান্ত। স্কয়ার লেগ থেকে করা লাবুশেনের দারুণ থ্রোতে দ্রুত স্টাম্প ভাঙেন উইকেটরক্ষক জশ ইংলিশ। ৬ চারে ৫৭ বলে ৪৫ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় শান্তকে।

এরপর হৃদয়ের জুটির সঙ্গী হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের জুটিতে ৪৪ রান আসে। এবারও সেই রান আউটে শেষ হয় জুটি, লাবুশেন থাকেন এখানেও। হৃদয় বল কাভারে পাঠান, এরপর রানের জন্য দৌড় শুরু করেন দুজন। কিন্তু নন স্ট্রাইক থেকে দৌড়ে আসা রিয়াদ যতক্ষণে ঝাপিয়ে দাগ ছুন, ততক্ষণে আন্ডার আর্ম থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দেন লাবুশেন। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৮ বলে ৩২ রান করেন রিয়াদ। বিশ্বকাপের শেষ ইনিংসে রান আউট হয়ে হতাশা নিয়ে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন তিনি।

মুশফিকুর রহিমও ইনিংস টেনে নিতে পারেননি খুব বেশি দূর। ২৪ বলে ১ ছক্কায় ২১ রান করেন তিনি। হৃদয়ও ইনিংস শেষ করতে পারেননি। শুরুতে বলের চেয়ে বেশি রান করা এই ব্যাটার পরে স্ট্রাইক রেটও একশর নিচে নিয়ে আসেন। বিশ্বকাপে তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস থামে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৭৯ বলে ৭৪ রান করে। স্টয়নিসের বলে লাবুশেনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজের ২৪ বলে ২১ রানে বাংলাদেশ তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ পায়। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন শন অ্যাবট ও অ্যাডাম জাম্পা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জয় দিয়ে শুরু হলেও হার দিয়ে শেষ হলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন

প্রকাশের সময় : ০৭:৩২:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

বিশ্বকাপে জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ, শেষ করলো হার দিয়ে। নিজেদের নবম ও শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে তাওহিদ হৃদয়ের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ৩০৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মিচেল মার্শের সেঞ্চুরি ও ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথের জোড়া ফিফটিতে ৩২ বল হাতে রেখেই সহজ জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। বড় ব্যবধানে হেরেও পয়েন্ট তালিকার অষ্টম স্থানেই রয়েছে টাইগাররা। সেই সাথে বেঁচে রইলো চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার স্বপ্ন।

৩০৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ট্রাভিস হেডকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ব্যাক অব লেন্থ থেকে লাফিয়ে উঠা বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হয়েছেন হেড। ১০ রান করে এই ওপেনার ফেরায় ভাঙে ১২ রানের উদ্বোধনী জুটি।

শুরুর ধাক্কা পাকা হাতে সামলেছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ১১৬ বলে ১২০ রান। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় অজিরা। ২৩তম ওভারে ৫৩ রান করা ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে বাংলাদেশের সাফল্য বলতে এই দুটোই। বাকি গল্পটা শুধুই অজিদের আধিপত্যের। বাড়তি এক স্পিনার নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশের কোনো মন্ত্রই এদিন মার্শের সামনে টিকেনি! মিরাজ-নাসুমদের রীতিমতো কচুকাটা করছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। রান তাড়ায় ব্যাক্তিগত সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছেন মাত্র ৮৭ বলে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন ১৩২ বলে ১৭৭ রান করে।

মার্শকে অপর প্রান্ত থেকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন স্টিভেন স্মিথ। ৬৪ বলে অপরাজিত ৬৩ রান করে মাঠ ছেড়েছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। চতুর্থ উইকেটে তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৭৫ রানের জুটিতে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।

এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ, যেটি নিয়ে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ভুগছিল তারা। এই পুনেতেই ভারতের বিপক্ষে ৯৭ রানের উদ্বোধনী জুটি মিলেছিল, এরপর দ্বিতীয়বারের মতো এই জুটি পেরোয় পঞ্চাশ। দুই ওপেনারই অবশ্য সাজঘরে ফিরেছেন হতাশাকে সঙ্গী করে। শুরুটা হয় তানজিদ হাসান তামিমকে দিয়ে।

দারুণ কিছু শট খেলার পর ৩৪ বলে ৩৬ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। শন অ্যাবটের বাউন্সার বুঝতে পারেননি তানজিদ, ক্যাচ দেন বোলার অ্যাবটের হাতেই। একই রান করে জাম্পার বলে আউট হন লিটন দাস। ৫ চারে ৪৫ বলে ৩৬ রান করে জাম্পার বলে জোর না দিয়ে লং অফে তুলে মারেন লিটন। ক্যাচ দেন লাবুশেনের হাতে।

এরপর তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের জুটিতে ভর করে বড় রানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু তার শেষটাও হয় হতাশায়। ২৮তম ওভারের পঞ্চম বল স্কয়ার লেগ অঞ্চলে ঢেলে দিয়ে দৌড় শুরু করেন শান্ত ও হৃদয়। দুজন বেশ কিছুক্ষণ ধরেই রান নেওয়ার জন্য বেশ তাড়াহুড়ো করছিলেন।

ওই বলটিতে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে আউট হন শান্ত। স্কয়ার লেগ থেকে করা লাবুশেনের দারুণ থ্রোতে দ্রুত স্টাম্প ভাঙেন উইকেটরক্ষক জশ ইংলিশ। ৬ চারে ৫৭ বলে ৪৫ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় শান্তকে।

এরপর হৃদয়ের জুটির সঙ্গী হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের জুটিতে ৪৪ রান আসে। এবারও সেই রান আউটে শেষ হয় জুটি, লাবুশেন থাকেন এখানেও। হৃদয় বল কাভারে পাঠান, এরপর রানের জন্য দৌড় শুরু করেন দুজন। কিন্তু নন স্ট্রাইক থেকে দৌড়ে আসা রিয়াদ যতক্ষণে ঝাপিয়ে দাগ ছুন, ততক্ষণে আন্ডার আর্ম থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দেন লাবুশেন। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৮ বলে ৩২ রান করেন রিয়াদ। বিশ্বকাপের শেষ ইনিংসে রান আউট হয়ে হতাশা নিয়ে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন তিনি।

মুশফিকুর রহিমও ইনিংস টেনে নিতে পারেননি খুব বেশি দূর। ২৪ বলে ১ ছক্কায় ২১ রান করেন তিনি। হৃদয়ও ইনিংস শেষ করতে পারেননি। শুরুতে বলের চেয়ে বেশি রান করা এই ব্যাটার পরে স্ট্রাইক রেটও একশর নিচে নিয়ে আসেন। বিশ্বকাপে তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস থামে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৭৯ বলে ৭৪ রান করে। স্টয়নিসের বলে লাবুশেনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজের ২৪ বলে ২১ রানে বাংলাদেশ তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ পায়। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন শন অ্যাবট ও অ্যাডাম জাম্পা।