নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি :
নীলফামারীতে বাবার কাছ থেকে কিনে নেওয়া তিন শতক জমি লিখে নিতে না পেরে বাবার মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। দাফনে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি বাবার মরদেহ দাফনের জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে ওই ছেলেকে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পৃথক স্থানে দাফন কাজ সম্পন্ন হয়।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার চাপড়া সরমজানি ইউনিয়নের যাদুরহাট বাদুলটারি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান (৬০) আজ ভোরে অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান। নওশাদ আলী তাঁর প্রথম স্ত্রীর ছেলে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে মারা যান ওই এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ দাফনের জন্য বাড়ির পাশের কবরস্থানে কবর খোঁড়া হয়। দাফনের আগে ছেলে নওশাদ আলী জমি লিখে দেওয়ার দাবিতে বাবার জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে পড়েন। পরে নতুন কবর খুঁড়ে মজিবর রহমানের মরদেহ দাফন করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহাবুব রহমান বলেন, মজিবর রহমান মৃত্যুকালে প্রথম স্ত্রীর ৪ ছেলে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। প্রায় ৮ বছর আগে মজিবর রহমান প্রথম স্ত্রীর তিন ছেলের কাছে তিন শতক জমি বিক্রি করেন। তবে সেই জমি রেজিস্ট্রি হয়নি ওই সময়। মজিবর রহমানের মোট ১০ শতক জমি ছিল। তার মধ্যে ২ শতক তার দ্বিতীয় স্ত্রী এবং তার ছেলেকে ৫ শতকসহ মোট ৭ শতক জমি লিখে দেন। ৩ শতক জমি তিনি রেখে দেন। মজিবর রহমান ও তার ছেলে নওশাদ আলীর মধ্যে গত ৬ বছর আগে গন্ডগোল হয়। তখন থেকে বাবা-ছেলের মধ্যে কথা বন্ধ ছিল। মজিবর রহমান গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নীলফামারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আজ সকাল ১০টার দিকে তার দাফন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নওশাদ জমির দাবিতে তার বাবার দাফনের জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে পড়েন। তিনি কবরে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মতো শুয়ে ছিলেন। এরপর পুলিশ আসলে তিনি কবর থেকে উঠে আসেন। এরপর আরেক জায়গয় নতুন করে কবর খুঁড়ে মজিবর রহমানের মরদেহ দাফন করা হয়। মজিবর রহমানের অন্য ছেলেরা জমির দাবি করেননি। বরং তারা নওশাদকে কবর থেকে উঠার জন্য বারবার অনুরোধ করছিলেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তানভীরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কবরে শুয়ে থাকা নওশাদ আলী কবর থেকে উঠে পালিয়ে যান। পরে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় অন্যত্র কবর খুঁড়ে পুলিশের উপস্থিতিতে মজিবুর রহমানের দাফন সম্পন্ন করা হয়।