Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জবির সমন্বয়ক থেকে সরে গেলেন নূর নবী

  • জবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪
  • ১৮৭ জন দেখেছেন

জবি প্রতিনিধি : 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ইউনিটকে নেতৃত্ব প্রদান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নূর নবী সমন্বয়ক পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সমন্বয়ক থেকে সরে গেলেও যেকোনো আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে তার নিজ ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন নূর নবী।

পোস্টে নূর নবী লেখেন, আমি মো. নূর নবী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক হিসেবে শুরু থেকেই সকল আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। এক্ষেত্রে আমাদের প্রাথমিক চাওয়াগুলো পূরণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমাদের বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে শহীদরা যে রক্ত দিয়েছেন তা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। শহীদদের আত্মত্যাগে অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশে যেকোনো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করব, ইনশাআল্লাহ।

এই সমন্বয়ক আরও লেখেন, আজ থেকে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। ব্যক্তি স্বার্থবিহীন এই আন্দোলনে শুরু থেকেই মাঠে থেকেছি। ময়দানে ছাত্রলীগের বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়েছি, ময়দান থেকেই গুম হয়েছি এবং পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি, কারাগারে গিয়েছি। এসব কিছুর ঊর্ধ্বে আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি। সে ভালোবাসার মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আমি সর্বদা আপনাদের পাশে থাকব, ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে নূর নবী বলেন, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে “জবি সংস্কার আন্দোলন” নামে একটি প্ল্যাটফরম করে প্রতিটি বিভাগ থেকে গণতান্ত্রিক উপায়ে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে নেতৃত্ব গঠন করা হবে। আমি মনে করি, আমাদের ক্যাম্পাসে আর সমন্বয়ক প্রয়োজন নেই।

তিনি আরও বলেন, তা ছাড়া খুব সম্ভবত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের ক্যাম্পাস লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিমুক্ত থাকবে। সে জন্য আমি আগে আগে আমাকে সরিয়ে নিয়েছি এই জায়গা থেকে।

কোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া কেন্দ্র করে গত ১৯ জুলাই ক্যাম্পাস গেট থেকে গ্রেপ্তার হন নূর নবী। পরে ডিবি অফিসে ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়ে গত ৬ আগস্ট মুক্তি পান। নির্যাতনকালে পানিতে মরিচের গুড়া মিশিয়ে খেতে দেওয়া হয়েছিল তাকে। গোপনাঙ্গে আঘাতসহ ব্যাপক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে গত ৯ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে এই চিত্র তুলে ধরেন। এমনকি ডিবির হারুন তাকে ক্রসফায়ার দেওয়ারও কথা বলেছিলেন বলে জানান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে বেগবান করতে গত ২৯ জুলাই ২৭ সদস্যের অফিসিয়াল সমন্বয়ক প্যানেল ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ইউনিট। সেখানে প্রথমে নাম ছিল নূর নবীর।

এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনে নেমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ সমন্বয়ক পদত্যাগ করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে অভ্যুত্থানের শক্তিকে কেনা যাবে না : নাহিদ ইসলাম

জবির সমন্বয়ক থেকে সরে গেলেন নূর নবী

প্রকাশের সময় : ০৩:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

জবি প্রতিনিধি : 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ইউনিটকে নেতৃত্ব প্রদান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নূর নবী সমন্বয়ক পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সমন্বয়ক থেকে সরে গেলেও যেকোনো আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে তার নিজ ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন নূর নবী।

পোস্টে নূর নবী লেখেন, আমি মো. নূর নবী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক হিসেবে শুরু থেকেই সকল আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। এক্ষেত্রে আমাদের প্রাথমিক চাওয়াগুলো পূরণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমাদের বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে শহীদরা যে রক্ত দিয়েছেন তা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। শহীদদের আত্মত্যাগে অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশে যেকোনো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করব, ইনশাআল্লাহ।

এই সমন্বয়ক আরও লেখেন, আজ থেকে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। ব্যক্তি স্বার্থবিহীন এই আন্দোলনে শুরু থেকেই মাঠে থেকেছি। ময়দানে ছাত্রলীগের বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়েছি, ময়দান থেকেই গুম হয়েছি এবং পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি, কারাগারে গিয়েছি। এসব কিছুর ঊর্ধ্বে আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি। সে ভালোবাসার মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আমি সর্বদা আপনাদের পাশে থাকব, ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে নূর নবী বলেন, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে “জবি সংস্কার আন্দোলন” নামে একটি প্ল্যাটফরম করে প্রতিটি বিভাগ থেকে গণতান্ত্রিক উপায়ে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে নেতৃত্ব গঠন করা হবে। আমি মনে করি, আমাদের ক্যাম্পাসে আর সমন্বয়ক প্রয়োজন নেই।

তিনি আরও বলেন, তা ছাড়া খুব সম্ভবত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের ক্যাম্পাস লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিমুক্ত থাকবে। সে জন্য আমি আগে আগে আমাকে সরিয়ে নিয়েছি এই জায়গা থেকে।

কোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া কেন্দ্র করে গত ১৯ জুলাই ক্যাম্পাস গেট থেকে গ্রেপ্তার হন নূর নবী। পরে ডিবি অফিসে ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়ে গত ৬ আগস্ট মুক্তি পান। নির্যাতনকালে পানিতে মরিচের গুড়া মিশিয়ে খেতে দেওয়া হয়েছিল তাকে। গোপনাঙ্গে আঘাতসহ ব্যাপক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে গত ৯ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে এই চিত্র তুলে ধরেন। এমনকি ডিবির হারুন তাকে ক্রসফায়ার দেওয়ারও কথা বলেছিলেন বলে জানান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে বেগবান করতে গত ২৯ জুলাই ২৭ সদস্যের অফিসিয়াল সমন্বয়ক প্যানেল ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ইউনিট। সেখানে প্রথমে নাম ছিল নূর নবীর।

এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনে নেমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ সমন্বয়ক পদত্যাগ করেন।